ফুটবল নিয়ে দিবাস্বপ্ন দেখতে বারণ করলেন ডে

বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের কোচ জেমি ডের সঙ্গে জামাল ভূঁইয়া। ফাইল ছবি
বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের কোচ জেমি ডের সঙ্গে জামাল ভূঁইয়া। ফাইল ছবি
>লাওস বাধা পেরিয়ে বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ বাছাইপর্ব নিশ্চিত করে স্বস্তিতে এখন বাংলাদেশের ফুটবল। তবে বাছাইপর্ব পেরিয়ে বিশ্বকাপ তো অনেক দূরের বাতিঘর, এশিয়ান কাপে খেলার স্বপ্নও দর্শকদের দেখাতে চান না বাংলাদেশ কোচ জেমি ডে।

বিশ্বকাপ ফুটবলের কথা শুনলেই রোমাঞ্চ জাগে। বিশ্বের সেরা ফুটবলাররা পায়ের কারিকুরিতে যে মঞ্চকে আলোকিত করে রাখেন, সেখানে পা রাখা বাংলাদেশের ফুটবলারদের কাছে ‘ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখার মতো!’ কিন্তু তাতে কীই-বা যায় আসে! অন্তত যতক্ষণ খাতা কলমে টিকে থাকে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ খেলার সম্ভাবনা। তবে খাতা কলমের হিসেব ভুলে গিয়ে এখনই বাস্তবতায় চোখ রাখতে বলেছেন বাংলাদেশ দলের কোচ জেমি ডে। বিশ্বকাপ তো অনেক দূরের বাতিঘর, এশিয়ান কাপে খেলার স্বপ্নও দেখতেও চান না তিনি।

প্রাক বাছাইয়ে লাওস-বাধা পেরিয়ে কাতার বিশ্বকাপের মূল বাছাইয়ে এখন জামাল ভূঁইয়ারা। যা একই সঙ্গে ২০২৩ এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বও। যৌথ বাছাইয়ে এশিয়া থেকে অংশ নেবে ৪০টি দেশ। ৮টি গ্রুপে থাকবে পাঁচটি করে দল। সেপ্টেম্বরের ৫ তারিখ থেকে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিতে শুরু হবে খেলা। সেখানে কোনো দলগুলোর বিপক্ষে লড়াই করতে হবে, তা জানা যাবে ১৭ জুলাই ড্রয়ের পর। তবে জাপান, কোরিয়া, ইরান, অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিশালী দলগুলোর বিপক্ষে খেলতে হবে তা নিশ্চিত। নিয়মিত বিশ্বকাপ খেলা দেশগুলোকে টপকে বাংলাদেশ কাতারের টিকিট পাক, এ আশা দেশের ফুটবলের পাড় সমর্থকও করেন না। তবে যেহেতু এশিয়ান কাপে খেলবে ২৪টি দেশ, সেখানে বাংলাদেশের খেলার আশা করতেই পারেন ফুটবল-প্রেমীরা।

আপাত ফুটবল-প্রেমীদের সে বড় স্বপ্ন না দেখে বাস্তবতায় চোখ রাখতে বলেছেন জেমি, ‘আমি বাস্তববাদী, আপনাদেরও বাস্তববাদী হতে হবে। বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব খেললেও বিশ্বকাপ নিয়ে ভাবার কোনো সুযোগই নেই। এমনকি এশিয়ান কাপের স্বপ্নও আমি দর্শকদের দেখাতে চাই না।’

বাংলাদেশ কোচের কথা শুনে প্রশ্ন উঠতে পারে বাছাইপর্বে কী শুধু নিয়ম রক্ষার জন্যই খেলবে বাংলাদেশ? ভবিষ্যতে শক্তিশালী জাতীয় দল গঠনের দিকেই নজর জেমির, ‘আগে গ্রুপিং চূড়ান্ত হোক, তখনই আমি বলব বাছাইয়ে বাংলাদেশ কত দূর যেতে পারে। এখানে খেলে আমাদের তরুণেরা অভিজ্ঞ হবে। একটা দল তৈরি হবে। তবে আশ্বস্ত করতে পারি বাংলাদেশ খুব লড়াকু ফুটবল উপহার দেবে। এর বাইরে আগে থেকেই কোনো কিছু বলতে চাই না।’

এর আগে রাশিয়া বিশ্বকাপের মূল বাছাইয়ে সরাসরি খেলার সুযোগ পেলেও এবার বাংলাদেশকে সে যোগ্যতা অর্জন করতে হয়েছে প্রাক-বাছাই খেলে। কারণ জাতীয় দলের বাজে পারফরম্যান্স। গতবার বিশ্বকাপ বাছাইয়ে অস্ট্রেলিয়া, জর্ডান, কিরগিজস্তান ও তাজিকিস্তানের বিপক্ষে ৮ ম্যাচে ৩২ গোল হজম করেছিল বাংলাদেশ। এর মধ্যে শেষ ম্যাচে জর্ডানের বিপক্ষে আম্মানে দল হেরেছিল ৮-০ গোলের শোচনীয় ব্যবধানে। অস্ট্রেলিয়ার পার্থে গিয়ে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারতে হয়েছিল ৫-০ গোলে। ঢাকায় এক গোল কম হজম করে ৪-০।

তাজিকিস্তানের বিপক্ষে ঢাকায় ১-১ গোলে ড্র করাটাই ছিল বাছাইপর্বের একমাত্র ‘সাফল্য’। আবার তাজিকিস্তানে গিয়ে তাদের বিপক্ষে বাংলাদেশ হেরেছিল ৫-০ গোলে। কিরগিজস্তানের বিপক্ষেও দুই লেগে যথাক্রমে ৩-১ ও ২-০ গোলে হারতে হয়েছে। জর্ডানের বিপক্ষে দেশের মাটিতে হারের ব্যবধান ছিল ৪-০। সবকিছু জেনে বুঝেই দর্শকদের স্বপ্ন দেখতে বারণ করেছেন বর্তমান বাংলাদেশ কোচ। তবে আশার কথা জেমির অধীনে জাতীয় ফুটবল দলের কঙ্কালসার চেহারাটা এখন বদলে গিয়েছে। শেষ তিন আন্তর্জাতিক ম্যাচের দুইটিতেই জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। হজম করেনি কোনো গোল।