মাথা তুলেই দাঁড়াতে পারল না ওয়েস্ট ইন্ডিজ

জন্মভূমির বিপক্ষে স্বরূপে দেখা দিয়েছেন জফরা আর্চার। যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন মার্ক উডও। ছবি: রয়টার্স
জন্মভূমির বিপক্ষে স্বরূপে দেখা দিয়েছেন জফরা আর্চার। যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন মার্ক উডও। ছবি: রয়টার্স
>ইংলিশ বোলারদের তোপে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেননি ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানরা।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের সর্বনাশটা কি তাহলে জো রুটই করলেন?

স্কোরকার্ড বলবে, ৩টি করে উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ধসিয়ে দিয়েছেন জফরা আর্চার ও মার্ক উড। কিন্তু খেলা যাঁরা দেখেছেন তাঁরা বুঝবেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ২১২ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পেছনে বড় অবদান আছে রুটেরও। একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়ানোর যে চেষ্টা করছিল ক্যারিবীয়রা, সেটি তো রুটের দুই ওভারেই ধূলিসাৎ হলো!

১৪তম ওভারেই টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ধুঁকছিল জেসন হোল্ডারের দল। ৮৯ রানের জুটি গড়ে শুরুর সে ধাক্কা অনেকটাই সামলে নিচ্ছিলেন মিডল অর্ডারের দুই তরুণ শিমরন হেটমায়ার ও নিকোলাস পুরান। দুজনের ওপর কেন এত আস্থা ওয়েস্ট ইন্ডিজের, সেটিই যেন প্রমাণ করতে চাইছিলেন তাঁরা। কিন্তু বিপত্তি বাধল ৩০ তম ওভারে। বল কিছুটা গ্রিপ করেছিল, টাইমিংয়ে গড়বড় করে সেটি আবার রুটের হাতেই পাঠিয়ে ৩৯ রানে ফেরেন হেটমায়ার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পথ হারানোর শুরুটাও যেন সেখানেই।

আন্দ্রে রাসেলকে শেষ ১০ ওভারের জন্য বাঁচিয়ে রেখে আগে নেমেছিলেন অধিনায়ক হোল্ডার। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেই ফিফটি করা হোল্ডারের ব্যাটিং দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন করার সুযোগ কম। কিন্তু যে বলে আউট হলেন তিনি, ড্রেসিংরুমে ফিরে রিপ্লে দেখলে নির্ঘাত নিজেই নিজেকে শাপ-শাপান্ত করবেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক। রুটের বলটা লেগ স্টাম্পের অনেকটা বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিল। সেটিতেই খোঁচা দিতে গিয়ে রুটের হাতে পাল্টা ক্যাচ দিয়েছেন।

ইনিংসের পরিস্থিতি বিবেচনায় আগে রুটের কথা বলা, নয়তো এর আগে–পরের সবটাই দুই পেসার জফরা আর্চার ও মার্ক উডের কীর্তিগাথা। ৫ ওভারের প্রথম স্পেলে ২৮ রান দিলেও কোনো উইকেট পাননি জন্মভূমির বিপক্ষে খেলতে নামা আর্চার। সেটি পুষিয়ে নিলেন পরের স্পেলে এসে। ৪০তম ওভারে পরপর দুই বলে নিয়েছেন সর্বোচ্চ রান করা পুরান ও কটরেলের উইকেট। এক ওভার বিরতি দিয়ে পরে নিয়েছেন কার্লোস ব্রাফেটের উইকেটটিও। ওয়েস্ট ইন্ডিজের লড়াই করার মতো স্কোরের আশাও সেখানেই শেষ।

বিশ্বকাপ ক্রিকেটে তবে আজ ইংল্যান্ডের সেরা বোলার সম্ভবত মার্ক উড। গতির ঝড় তুলে ৬.৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান দিয়ে তুলে নিয়েছেন ৩টি উইকেট। এর মধ্যে আছে আন্দ্রে রাসেলের মহামূল্যবান উইকেটটিও। একটি ৪ দুটি ৬ মেরে সবে হাত খোলার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন এই জ্যামাইকান। রাসেলকে ওই সময়ে না ফেরালে হয়তো সংগ্রহটা আরেকটু ভদ্রস্থ হতে পারত ক্যারিবীয়দের।

ফিল্ডিংয়ের সময় ওপেনার জেসন রয় ও অধিনায়ক এউইন মরগান খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে মাঠ ছেড়ে গেলেও লম্বা ব্যাটিং আপের ইংল্যান্ডের সামনে ২১৩ খুব একটা বড় লক্ষ্য হওয়ার কথা নয়। তবে ওশান টমাস-শেলডন কটরেলরা জ্বলে উঠতে পারলে উপভোগ্য একটি ম্যাচই হতে পারে সাউদাম্পটনের হ্যাম্পশায়ার বোলে।