পার্থক্যটা বুঝিয়ে দিল ইংল্যান্ড

দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে রুট-ওকসের ১০৪ রানের জুটিতে সহজেই জিতেছে ইংল্যান্ড। রুট পেয়েছেন এ বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। ছবি: রয়টার্স
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে রুট-ওকসের ১০৪ রানের জুটিতে সহজেই জিতেছে ইংল্যান্ড। রুট পেয়েছেন এ বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। ছবি: রয়টার্স
>জো রুটের সেঞ্চুরিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৮ উইকেটের সহজ জয় পেয়েছে ইংল্যান্ড।

এই ওয়েস্ট ইন্ডিজই কি পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করেছিল? অন্তত আজকের ম্যাচ দেখে সেটা বোঝার কোনো উপায় নেই। কোথায় গেল ক্যারিবীয়দের ভয়ংকর সেই পেস বোলিং! ইংল্যান্ড যে রীতিমতো ছেলেখেলা করল ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসারদের নিয়ে।

চার মূল পেসারের সঙ্গে জেসন হোল্ডার ও কার্লোস ব্রাফেট—ছয় পেসার নিয়েই আজ মাঠে নেমেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। উদ্দেশ্যটা পরিষ্কার, গতি দিয়েই ইংলিশদের ঘায়েলের পরিকল্পনা সাজানো হয়েছিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পরিকল্পনা উল্টো বুমেরাং হয়েই ফেরত এসেছে। নিজেরা ঘায়েল হয়েছে ইংলিশ পেসারদের গতিতে, অপরদিকে ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা অবলীলায় খেলেছেন ওশান টমাস-শেলডন কটরেলদের। ফলাফলটাও চোখের সামনে, ১০১ বল বাকি থাকতে ৮ উইকেটের জয় নিয়েই ফিরেছে স্বাগতিকেরা।

লক্ষ্যটা মোটেও বড় কিছু ছিল না। বিশেষ করে ইংল্যান্ডের এই বিস্ফোরক ব্যাটিং লাইন-আপের সামনে ২১২ রানের পুঁজি নিয়ে লড়াই করাটা যথেষ্ট কঠিনই ছিল। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের আশা যে একেবারেই ছিল না, তা নয়। ফিল্ডিংয়ের সময় চোট পেয়ে মাঠ ছাড়ায় ইনিংস ওপেন করতে নামতে পারেননি নিয়মিত ওপেনার জেসন রয়। অধিনায়ক মরগানের ব্যাট হাতে নামাটাও ছিল অনিশ্চিত। দ্রুত উইকেট তুলে নিতে পারলে ইংলিশ শিবিরে তাই ভয়ের কাঁপন ছড়িয়ে দিতে পারতেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলাররা।

সেটি হতে দেননি জো রুট। ম্যাচের প্রথমভাগে বল হাতে গুরুত্বপূর্ণ দুটি উইকেট নিয়েছিলেন। এরপর ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ওপেন করতে নেমে তুলে নিয়েছেন ২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। মাত্র ৯৪ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৬তম শতকটি করতে কোনো বেগই পেতে হয়নি। তাঁকে ফেরাতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ, অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে তবেই ফিরেছেন।

শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের বলে বেয়ারস্টো(৪৫) ফেরার পর কিছুটা চমকই দিয়েছে ইংল্যান্ড। বেন স্টোকস বা জস বাটলারদের মতো ব্যাটসম্যান থাকতেও ওয়ান ডাউনে অলরাউন্ডার ক্রিস ওকসকে পাঠিয়ে দেয় তারা। ওকসও দেখিয়ে দিয়েছেন, তাঁকে তিনে নামিয়ে কোনো ভুল করেনি ইংল্যান্ড। জয় থেকে মাত্র ১৪ রান দূরে থাকতে গ্যাব্রিয়েলের বলেই ফিরেছেন, তবে ততক্ষণে ৫৪ বলে ৪০ রানের সুন্দর একটি ইনিংস খেলে গিয়েছেন। রুটের সঙ্গে থেকে ম্যাচ শেষ করার দায়িত্বটা পালন করেছেন স্টোকস।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের মধ্যে সবাই ছিলেন খরুচে। টমাস, গ্যাব্রিয়েল, রাসেল প্রত্যেকের ইকোনমি ছিল ৭–এর বেশি। পাকিস্তানকে শর্ট বলে বেঁধে ফেলতে পারলেও ফেবারিট ইংল্যান্ডের সামনে স্রেফ নাকানি-চুবানি খেয়েছেন তাঁরা। দাপুটে এই জয়ের মধ্য দিয়ে ইংল্যান্ড যেন আরও একবার বুঝিয়ে দিল, একই বোলিং আক্রমণ অন্য দলের কাছে কঠিন হলেও তাদের কাছে ডালভাতের সমান!