আট ওভারের ঝড়ে পথ হারাল শ্রীলঙ্কা

চার উইকেট নিয়ে শ্রীলঙ্কার মিডল অর্ডার ধসিয়ে দিয়েছেন মিচেল স্টার্ক। ছবি: রয়টার্স
চার উইকেট নিয়ে শ্রীলঙ্কার মিডল অর্ডার ধসিয়ে দিয়েছেন মিচেল স্টার্ক। ছবি: রয়টার্স
শ্রীলঙ্কাকে ৮৭ রানে হারিয়ে টুর্নামেন্টে নিজেদের চতুর্থ জয়ে পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ৮ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষেও অ্যারন ফিঞ্চের দল।

৩২ ওভার শেষেও বেশ ভালোভাবেই ম্যাচে ছিল শ্রীলঙ্কা। ১৮ ওভারে দরকার ১৪৯ রান, হাতে উইকেট ৮টি। টি-টোয়েন্টির যুগে এ লক্ষ্য কঠিন নয় মোটেও। কিন্তু ৮ ওভারের এক ঝড়ে হঠাৎ দিকভ্রষ্ট লঙ্কান ব্যাটিং। ৩৩ থেকে ৪০—মাত্র ৮ ওভারের মধ্যে ৬ উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ার হাতে জয়টা একপ্রকার তুলেই দিল শ্রীলঙ্কা।

ভয়ংকর ব্যাটিং ধসে শেষ দশ ওভারে ম্যাচ থেকে সব আগ্রহ সরিয়ে দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। শেষ পর্যন্ত ২৪৭ রানে থেমেছে দলটি। ৮৭ রানের এই জয়ে ৫ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষেও এখন বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া।

বিপর্যয়ের শুরু ৩৩তম ওভারের প্রথম বলে। নিজের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ৩ রান দূরত্বে ছিলেন অধিনায়ক দিমুথ করুণারত্নে। সেটি এক প্রকার স্বেচ্ছায় জলাঞ্জলি দিলেন। অফ স্টাম্পের বহু বাইরের বলটা পয়েন্টে দাঁড়ানো গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের হাতে তুলে দিয়ে যেন ক্যাচিং অনুশীলনই করালেন। সেই যে শুরু, এরপর একজন করে উইকেটে এসেছেন আর বিদায় নিয়েছেন।

দলের অন্যতম সিনিয়র ব্যাটসম্যান হিসেবে দায়িত্বটা নিতে হতো অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসকে। অনেক দিন ধরেই রানের বাইরে থাকা ম্যাথুস পারেননি। ব্যর্থ আসলে গোটা মিডল অর্ডারই। এই টুর্নামেন্টে শ্রীলঙ্কার জন্য এটি অবশ্য নতুন কিছু নয়। কোনো ম্যাচেই দলে থাকার যৌক্তিকতা প্রমাণ করতে পারেনি লঙ্কান মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানরা। ৪ থেকে ৭—শ্রীলঙ্কার এই চার ব্যাটসম্যান মিলে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে করেছিলেন ৫ রান। দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানিস্তানের সঙ্গে চারজন মিলে করেছিলেন ৪ রান। আজ অবশ্য খানিকটা ‘উন্নতি’ হয়েছে, মিডল অর্ডার থেকে এসেছে ৪৯ রান। এর মধ্যে একাই ৩০ করেছেন কুশল মেন্ডিস।

৩৬তম ওভারে প্যাট কামিন্সের লেগ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বলে অযথাই ব্যাট চালিয়ে মেরে বিদায় ম্যাথুসের। পরের ওভারে তাঁকে অনুসরণ করলেন মিলিন্দা সিরিবর্দনাও। এবার ঘাতক মিচেল স্টার্ক। শেষ ভরসা হয়ে ছিলেন থিসারা পেরেরা। তাঁকেও স্টার্ক ফিরিয়েছেন একই ওভারে। নিজের পরের ওভারে মেন্ডিসকেও ফিরিয়ে টুর্নামেন্টে নিজের ১৩তম উইকেট পেয়েছেন এই বাঁহাতি পেসার। মোহাম্মদ আমিরকে টপকে ২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারীও এখন স্টার্কই।

সর্বোচ্চ উইকেটশিকারীর পাশাপাশি সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহকও এখন অস্ট্রেলিয়া দলেই। ১৫৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান এখন অ্যারন ফিঞ্চের। ৫ ইনিংসে ৩৪৩ রান নিয়ে সবার ওপরে আছেন অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক। জো রুটকে টপকে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছেন আরেক অস্ট্রেলীয়। ২৮১ রান নিয়ে ফিঞ্চের ওপেনিং সঙ্গী ওয়ার্নার আছেন দুইয়ে।

একাদশে কোনো বিশেষজ্ঞ স্পিনার না থাকায় অস্ট্রেলিয়াকে ভুগতে হতে পারে বলে আশঙ্কা করেছিলেন খোদ অস্ট্রেলীয় বিশেষজ্ঞরাই। স্টার্কের সঙ্গে মিলে সেই শঙ্কা দূর করেছেন আরেক পেসার কেন রিচার্ডসন। ডানহাতি এই পেসার ৯ ওভার বল করে নিয়েছেন ৩ উইকেট। এছাড়া প্যাট কামিন্স নিয়েছেন দুই উইকেট। অপর পেসার জেসন বেরেনডর্ফ নিয়েছেন বাকি উইকেটটি। মূল স্পিনারদের অভাব পূরণ করেছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ১০ ওভারে মাত্র ৪৬ রান দিয়ে মাঝের ওভারগুলিতে শ্রীলঙ্কার ইনিংসকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন ম্যাক্সওয়েল।