জেমির ১৩ মাস, বাংলাদেশের উন্নতি ১১ ধাপ

বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের কোচ জেমি ডে। ফাইল ছবি
বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের কোচ জেমি ডে। ফাইল ছবি
২০১৮ সালের মে মাসে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় ইংলিশ কোচ জেমি ডের হাতে। তাঁর অধীনে ১১ ধাপ উন্নতি করে বাংলাদেশের র‍্যাঙ্কিং এখন ১৮৩।

‘জেমির ১৩ মাস, বাংলাদেশের পৌষ মাস।’ খুব বিখ্যাত একটি কথা থেকে ধার নিয়ে অর্থ বদলে লেখা হলো। বাড়াবাড়ি মনে হতে পারে। কারণ জেমি ডের অধীনে জাতীয় ফুটবল দলের কঙ্কালসার চেহারা বদলাতে শুরু করলেও ভালো পর্যায়ে গিয়েছে, এই কথা বলার সময় এখনো হয়নি। তবে পরিসংখ্যানে এসেছে ভালো পরিবর্তন। জেমির অধীনে র‍্যাঙ্কিংয়ে ১১ ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্ব ফুটবলে এখন ১৮৩।

গত বছর মে মাসে বাংলাদেশের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় ৩৮ বছর বয়সী ইংলিশ জেমির হাতে। প্রধান কোচ হিসেবে যেকোনো পর্যায়ে বাংলাদেশের দায়িত্ব পাওয়াটাই তাঁর প্রথম। একজন আনাড়ি কোচ খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা বাংলাদেশ দলের কতটুকু পরিবর্তন আনতে পারবেন, শুরুতে এই নিয়ে সন্দেহ ছিল যথেষ্টই। তবে শেষ ১৩ মাসে জেমি প্রমাণ করেছেন, বাংলাদেশ জাতীয় দল যোগ্য লোকের হাতেই আছে। সদ্য সমাপ্ত বিশ্বকাপ প্রাক্‌–বাছাইয়ে লাওসের মাটি থেকে জয় নিয়ে আসা ও ফিরতি পর্বে ঢাকায় গোলশূন্য ড্র তারই প্রমাণ।

মে মাসে দায়িত্ব গ্রহণ করলেও জেমির জাতীয় দলে অভিষেক হয় আগস্টে। নীলফামারীতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে ১-০ গোলের হার দিয়ে শুরু। সেদিন বাংলাদেশের র‍্যাঙ্কিং ছিল ১৯৪। ফিফা প্রকাশিত নতুন র‍্যাঙ্কিংয়ে ১১ ধাপ উন্নতি হয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ১৮৩। জেমির অধীনে জাতীয় দল ম্যাচ খেলেছে দশটি। বাংলাদেশের জয় ৫টি, ৪ হার ও ১টি ড্র। পরিসংখ্যান আহামরি কিছুই নয়। তবে বাংলাদেশের জন্য শেষ দশ ম্যাচে ৫ ম্যাচ জেতাটা বিশাল ব্যাপারই বটে। এর মধ্যে শেষ তিন ম্যাচে কোনো গোল হজম করেনি বাংলাদেশ। তিন ম্যাচে বাংলাদেশের জয় দুটি, দুটিই বিদেশের মাটিতে।

জাতীয় দল নয়, জেমি মূল ঝলক দেখিয়েছেন এশিয়ান গেমসে। সেখানে কাতারকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো এশিয়াডের দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্বের অন্য এক ম্যাচে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ছিল ১-১ গোলে ড্র। এ ছাড়া এই বছরে বাহরাইনে অনুষ্ঠিত এএফসি অনূর্ধ্ব-২৩ বাছাইপর্বে দারুণ উপভোগ্য ফুটবল উপহার দিয়েছে জেমির তরুণ দল। স্বাগতিক বাহরাইন ও ফিলিস্তিনের কাছে হেরেছে মাত্র ১-০ গোলে। অন্য ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২-০ গোলের জয়। যা তাঁকে আরও এক বছর বাংলাদেশ দলের দায়িত্বে বহাল থাকার সুযোগ করে দেয়।

গত মাসেই বাংলাদেশের সঙ্গে এক বছরের চুক্তি শেষ হয় জেমির। পারফরম্যান্সের পুরস্কার হিসেবে বিশ্বকাপ প্রাক্‌–বাছাইপর্বের আগেই নতুনে চুক্তি বাড়ানো হয় আরও এক বছর। লাওসকে পেছনে ফেলে শুরু হচ্ছে তাঁর নতুন মিশন। ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে র‍্যাঙ্কিংয়ে ১৬০ এর নিচে দেখার প্রত্যাশা বাংলাদেশ কোচের, ‘২০১৯ সালে আমার লক্ষ্য থাকবে জাতীয় দলকে র‌্যাঙ্কিংয়ে ১৬০–এর ঘরে নিয়ে আসার। এ জন্য আমাদের প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে। তবে এর সঙ্গে সঠিক পরিকল্পনা থাকাটাও জরুরি। শুধু বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচের দিকেই তাকিয়ে থাকলে হবে না। প্রচুর আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলতে হবে।’