বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথ

ক্রিকেট মাঠে ভারত-পাকিস্তান লড়াই মানেই গল্প করার মতো কত ঘটনা। তবে টুর্নামেন্টটা যখন বিশ্বকাপ, তখন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের লড়াই মানেই একপেশে সব ম্যাচে ভারতের জয়।
কিরন মোরেকে ব্যঙ্গ করে লাফাচ্ছেন মিয়াঁদাদ। ছবি: টুইটার
কিরন মোরেকে ব্যঙ্গ করে লাফাচ্ছেন মিয়াঁদাদ। ছবি: টুইটার


১৯৯২, সিডনি
মিয়াঁদাদের লম্ফঝম্প
ভারত: ৪৯ ওভারে ২১৬/৭, পাকিস্তান: ৪৮.১ ওভারে ১৭৩,
ফল: ভারত ৪৩ রানে জয়ী।

পঞ্চম টুর্নামেন্টে এসে প্রথমবার বিশ্বকাপে দেখা হয় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তানের। ভারত সহজেই জিতে যায় ম্যাচটি। তবে বিশ্বকাপের চিরায়ত ছবি হয়ে আছে এই ম্যাচে পাকিস্তানের জাভেদ মিয়াঁদাদের লম্ফঝম্প। ভারতের উইকেটকিপার কিরন মোরের আপিলের পর আপিল করে যাচ্ছিলেন। বিরক্ত মিয়াঁদাদ একপর্যায়ে মোরেকে ব্যঙ্গ করে ক্যাঙারুর মতো লাফাতে থাকেন।

জাদেজা-ঝড়ে শেষ দিকে দ্রুত রান তুলেছিল ভারত। ছবি: টুইটার
জাদেজা-ঝড়ে শেষ দিকে দ্রুত রান তুলেছিল ভারত। ছবি: টুইটার


১৯৯৬, বেঙ্গালুরু
জাদেজা-বিস্ফোরণ
ভারত: ৫০ ওভারে ২৮৭/৮, পাকিস্তান: ৪৯ ওভারে ২৪৮/৯
ফল: ভারত ৩৯ রানে জয়ী।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের কথা তখন কেউ স্বপ্নও দেখেননি। তবে কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচটিতে ২০ ওভারের ক্রিকেটের মতোই ব্যাটিং করেছিলেন ভারতের অজয় জাদেজা। ওয়াকার ইউনিসের শেষ দুই ওভারে ৪০ রান তোলে ভারত। জাদেজা ২৫ বল খেলেই করেছিলেন ৪৫ রান। মন্থর ওভার রেটের কারণে এক ওভার কেটে নেওয়া হয় পাকিস্তানের।

ভেংকটেশ প্রসাদের সামনে দাঁড়াতে পারেনি পাকিস্তান। ছবি: এএফপি
ভেংকটেশ প্রসাদের সামনে দাঁড়াতে পারেনি পাকিস্তান। ছবি: এএফপি


১৯৯৯, ওল্ড ট্রাফোর্ড
প্রসাদে প্রাসাদ ভারতের
ভারত: ৫০ ওভারে ২২৭/৬, পাকিস্তান: ৪৫.৩ ওভারে ১৮০
ফল: ভারত ৪৭ রানে জয়ী।

কারগিল যুদ্ধের লম্বা ছায়া পড়েছিল ম্যাচটিতে। মাঠে অবশ্য অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু হয়নি। ক্রিকেট মাঠের লড়াইয়ে ভারতের নায়ক ভেংকটেশ প্রসাদ। ম্যানচেস্টারের দর্শকঠাসা স্টেডিয়ামে ২৭ রানে ৫ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপকে গুঁড়িয়ে দেন এই মিডিয়াম পেসার।

ভারতের জয়ের পথে অসাধারণ এক ইনিংস খেলেছিলেন টেন্ডুলকার। ছবি: টুইটার
ভারতের জয়ের পথে অসাধারণ এক ইনিংস খেলেছিলেন টেন্ডুলকার। ছবি: টুইটার


২০০৩, সেঞ্চুরিয়ন
টেন্ডুলকারের শোয়েব-জয়
পাকিস্তান: ৫০ ওভারে ২৭৩/৭, ভারত: ৪৫.৪ ওভারে ২৭৬/৪
ফল: ভারত ৬ উইকেটে জয়ী।

শচীন টেন্ডুলকার বনাম শোয়েব আখতার। বহু বিজ্ঞাপিত সেই লড়াইয়ে বড় ব্যবধানে জিতলেন টেন্ডুলকার। রান তাড়ায় ৯৮ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলার পথে শোয়েবকে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে অসাধারণ এক ছক্কা মেরেছিলেন ভারতীয় কিংবদন্তি। পাকিস্তানের ইনিংসে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন সাঈদ আনোয়ার।

টেন্ডুলকারকে জীবন দেওয়ার খেসারত গুনতে হয়েছিল পাকিস্তানকে। ছবি: এএফপি
টেন্ডুলকারকে জীবন দেওয়ার খেসারত গুনতে হয়েছিল পাকিস্তানকে। ছবি: এএফপি


২০১১, মোহালি
ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস
ভারত: ৫০ ওভারে ২৬০/৯, পাকিস্তান: ৪৯.৫ ওভারে ২৩১
ফল: ভারত ২৯ রানে জয়ী।

শচীন টেন্ডুলকারকে একবার জীবন দেওয়া মানেই ম্যাচের লাগাম হাতছাড়া করা। সেখানে কিনা এই সেমিফাইনালে চারবার বেঁচে গেলেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি রানের মালিক। এর তিনবারই শহীদ আফ্রিদির বোলিংয়ে ক্যাচ ছাড়েন পাকিস্তানি ফিল্ডাররা। টেন্ডুলকার শেষ পর্যন্ত ফেরেন ৮৫ রানে। ম্যাচ শেষে পাকিস্তানিদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন আফ্রিদি।

গত বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন বিরাট কোহলি। ছবি: টুইটার
গত বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন বিরাট কোহলি। ছবি: টুইটার


২০১৫, অ্যাডিলেড
এবার কোহলি-ঝড়
ভারত: ৫০ ওভারে ৩০০/৭, পাকিস্তান: ৪৭ ওভারে ২২৪
ফল: ভারত ৭৬ রানে জয়ী।

পাকিস্তানের বোলিং লাইনআপটা খারাপ ছিল না। তবু ১০৭ বলে ১২৬ রান করেছিলেন বিরাট কোহলি। কোহলির সেঞ্চুরির পাশে শিখর ধাওয়ান ও সুরেশ রায়নাও ৭০ ছাড়ানো দুটি ইনিংস খেলেন। রান তাড়ায় একবারও জয়ের সম্ভাবনা জাগাতে পারেনি পাকিস্তানিরা।