কৃতিত্বটা সাকিব-লিটনকেই দিলেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক

ম্যাচসেরা সাকিব আল হাসানকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। ছবি: রয়টার্স
ম্যাচসেরা সাকিব আল হাসানকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। ছবি: রয়টার্স
>বিশ্বকাপে এত রান করে কখনো ম্যাচ হারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু কাল ৮.৩ ওভার বাকি থাকতেই পরাজয় বরণ করে নিতে হয়েছে। নিজেদের দোষ খোঁজার আগে তাই দুই বাংলাদেশি সাকিব আল হাসান ও লিটন দাসকে প্রাপ্য কৃতিত্বটা দিতে ভোলেননি ক্যারিবীয় অধিনায়ক জেসন হোল্ডার।

স্কোরবোর্ডে ৩২১ জমা করেও হারতে হয়েছে ৫১ বল হাতে রেখে। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বোলাররাও উইকেট ফেলতে পারেননি। বাংলাদেশের কাছে পরাজয়ে পুরো দলকেই তাই কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে পারতেন জেসন হোল্ডার। তবে সে পথে না হেঁটে কৃতিত্বটা সাকিব আল হাসান ও লিটন দাসকেই ভাগ করে দিলেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক।

পাঁচ পেসার নিয়ে খেলেও শুরুতে বাংলাদেশের উইকেট ফেলতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার মিলে ৫২ রানের জুটি গড়ে দলকে নিরাপদ শুরু এনে দিয়েছেন। ক্যারিবীয় পেসাররা আরেকটু ভালো বল করলে এই রানও কি যথেষ্ট হতে পারত? বোলারদের দোষ না দিয়ে হোল্ডার কৃতিত্বটা দিতে চাইলেন বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদেরই, ‘৩২১ রান করে আমরা জয়ের চেষ্টাই করেছি। নতুন বলে আমাদের উইকেট দরকার ছিল, যেটা আমরা তুলতে পারিনি। বাংলাদেশ ভালো ব্যাট করেছে। সাকিব খুবই ভালো খেলেছে। সঙ্গে লিটন দাসও দারুণ খেলেছে। প্রাপ্য কৃতিত্বটা ওদের দিতেই হবে।’

বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের প্রশংসার পাশাপাশি নিজ দলের ব্যাটসম্যানদের কাঁধেও কিছুটা দায় চাপালেন হোল্ডার। ৩৯ ওভার শেষেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ছিল ২৪০। হাতে তখনো ৭ উইকেট। ৩৫০ পার হওয়াটা তখন খুবই সম্ভব বলে মনে হচ্ছিল। কিন্তু শেষ দিকে মোস্তাফিজুর-সাইফদের দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৩২১–এর বেশি যেতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। হোল্ডারও মানছেন, অন্তত ৪০-৫০ রান কম করেছে তাঁর দল। আর সেখানেই ম্যাচটা হেরে গেছে তাঁর দল।
ম্যাচশেষে হোল্ডার বলেছেন, ‘আমার মনে হচ্ছিল আমরা কিছু রান কম করেছি। উইকেটের পার স্কোর, মাঠের আকৃতি—সব বিবেচনা করলে আমাদের ৩৬০-৩৭০ রান করা উচিত ছিল। আমরা বেশ কিছু রান কম করেছি। বাংলাদেশ যেভাবে রান করেছে, সে তুলনায় বলতে হয়, আমরা খুব সম্ভবত ৪০-৫০ রান কম করেছি।’

ইনিংসের প্রথম ভাগে বাংলাদেশি বোলাররা ভালোই চেপে ধরেছিলেন ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানদের। ক্রিস গেইলের মতো ব্যাটসম্যান ও হাঁসফাঁস করেছেন, ১৩ বল খেলে কোনো রান না করেই ড্রেসিংরুমে ফিরেছেন। প্রথম ১০ ওভারে রান উঠেছে তাই মাত্র ৩২। হোল্ডার বলছেন, এতটা সতর্ক না হয়ে আরেকটু চালিয়ে খেলতে পারতেন ব্যাটসম্যানরা, ‘আমরা জানতাম, শুরুর ১০ ওভারই সবচেয়ে কঠিন হবে। খুব সম্ভবত পুরো ইনিংসেরই সবচেয়ে কঠিন সময় ছিল ওটা। ওই সময়টা আমাদের নিরাপদে পার করতে হতো। কিন্তু আমার মনে হয়, এতটা রক্ষণাত্মক না হয়ে আমরা আরেকটু ভালোভাবে স্ট্রাইক বদল করতে পারতাম। আরেকটু নির্ভার হয়ে খেললে কিছু বাউন্ডারিও হয়তো বের করা যেত।’

বাংলাদেশকে পেলেই ইদানীং চওড়া হয়ে ওঠে শাই হোপের ব্যাট। কালও বড় রান পেয়েছেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। এক প্রান্ত ধরে রেখে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসকে অনেকটা সময় ধরে টেনেছেন। দলের চাহিদা অনুযায়ী চালিয়ে খেলতে গিয়ে ৪৭তম ওভারে আউট হয়েছেন মোস্তাফিজের বলে। তার আগে খেলে গেছেন ৯৬ রানের ইনিংস। তবে এই রান করতে বল খেলেছেন ১২১টি, বাউন্ডারি মেরেছেন মাত্র ৫টি। হোপ আরেকটু আগ্রাসী হলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহটাও আরও বড় হতো কি না, এমন প্রশ্নে হোপকে আগলেই রাখলেন হোল্ডার, ‘সে (হোপ) ইনিংসের শেষ পর্যন্ত খেলেছে। হ্যাঁ, আমরা হয়তো ওকে আরেকটু হাত খোলার জন্য বলতে পারতাম। কিন্তু আমরা ইনিংসের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট হারাচ্ছিলাম। প্রথম চার ব্যাটসম্যানের একজন যেন শেষ পর্যন্ত থাকে, এটা নিশ্চিত করা দরকার ছিল। দায়িত্বটা হোপ নিয়েছিল, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ওর ইনিংসটা আজকে যথেষ্ট ছিল না।’