মোস্তাফিজকেও কৃতিত্ব দিচ্ছেন মাশরাফি

নটিংহামে যাওয়ার আগে টিম হোটেল ছাড়ছেন মাশরাফিরা। ছবি: শামসুল হক
নটিংহামে যাওয়ার আগে টিম হোটেল ছাড়ছেন মাশরাফিরা। ছবি: শামসুল হক

টন্টন থেকে বাসে চার-সাড়ে চার ঘণ্টায় আসা যায় নটিংহামে। কিন্তু বাংলাদেশ দলের লেগে গেল সাড়ে ছয় ঘণ্টার মতো। পথে দুবার যাত্রাবিরতি ছিল। সে জন্যই লেগেছে কিছু বাড়তি সময়। স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে পার্ক প্লাজা হোটেলে পৌঁছেছে টিম বাস।

২০১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারানোর পর কাল রাতের অনেকটা সময় আড্ডা-গল্পেই কেটেছে ক্রিকেটারদের। সেই আড্ডা-গল্পে যতটা না ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারানোর আনন্দ ছিল, তার চেয়ে বেশি এসেছে সেমিফাইনালে যাওয়ার ছক কষার আলোচনা। ট্রেন্টব্রিজে পরের ম্যাচ পয়েন্ট তালিকায় ওপরের দিকে থাকা অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে। সেমিফাইনাল নিশ্চিত করতে পরের চারের ম্যাচেই জয়ের যে লক্ষ্য, সেটির শুরুটা এখানেই করতে চায় বাংলাদেশ দল।

টন্টনে সাকিব আল হাসান বলতে গেলে একাই পার করে দিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের করা ৩২১ রান। তবে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা বলছেন, ওই জয়ে পেসার মোস্তাফিজুর রহমানের অবদানও কম নয়। কাল রাতে টিম হোটেলে বসে বলছিলেন, ‘ছোট ছোট জিনিস কিন্তু অনেক কিছু বদলে করে। ধরুন, মোস্তাফিজ আজকের (গতকাল) ম্যাচের সেরা বোলার। সাকিবকে যতটুকু কৃতিত্ব দিতে হবে, ততটুকু মোস্তাফিজকেও দিতে হবে। ওই এক ওভারে নেওয়া দুটি উইকেটে খেলা পুরো ঘুরে গেছে। না হলে ওরা ৩৮০ রান করত।’

মাত্র ২৫ বলে ফিফটি করে শিমরন হেটমায়ার রীতিমতো তাণ্ডবই চালাচ্ছিলেন। ইনিংসের ৪০তম ওভারের তৃতীয় বলে সে তাণ্ডব থামিয়ে দেন মোস্তাফিজ। উইকেটে আসেন আরেক ঝোড়ো ব্যাটসম্যান আন্দ্রে রাসেল। মোস্তাফিজের সামনে টিকতে পারেননি তিনিও। ওই ওভারেরই শেষ বলে কাটারে বিভ্রান্ত হয়ে কট বিহাইন্ড। ৩ উইকেটে ২৪২ থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর হয়ে যায় ৫ উইকেটে ২৪৩। ওই ওভারটার কথা বলতে গিয়ে মাশরাফি বলছিলেন, ‘হেটমায়ার তো ততক্ষণে ফিফটি করে ফেলছে ২৫ বলে। এরপর রাসেল। হেটমায়ার যদি ওখানে আরেকটু খেলত, আর রাসেল এসে ৫-৬টা ছয় মারত, তাহলেই খেলা শেষ।’

টিম হোটেলে সাকিব। ছবি: প্রথম আলো
টিম হোটেলে সাকিব। ছবি: প্রথম আলো

আরেক পেসার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের প্রসঙ্গও টেনে আনলেন অধিনায়ক, ‘ক্রিকেটে একটা ওভারই খেলা বদলে দেয়। সাইফ শুরুতেই গেইলকে ফেরাল। গেইল থাকলে কী হয় সবাই জানে। এগুলোই হচ্ছে ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট।’

আর মাশরাফির নিজের বোলিং! সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে মেটাতে পারেননি নিজের কাছে নিজের প্রত্যাশাটাও। এ নিয়ে সমালোচনার মধ্যেও পড়তে হয়েছিল তাঁকে। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তাঁর দুর্দান্ত বোলিং মনে করাচ্ছিল পুরোনো মাশরাফির কথাই। ৭ ওভারের প্রথম স্পেলে দেন মাত্র ২৪ রান, নিয়েছেন একটি মেডেন ওভারও। মাশরাফি নিজে অবশ্য এটাকে খুব বড় করে দেখছেন না, যেমন গুরুত্ব দিচ্ছেন না সমালোচনাকেও, ‘এটাই তো আমার স্বাভাবিক বোলিং। আমি সব সময় ধারাবাহিকভাবে এক জায়গায় বল করি। ব্যাটসম্যানকে আটকে রাখার চেষ্টা করি। প্রথম দুটি ম্যাচে হয়তো ভালো বোলিং করিনি। তবে মানুষের কথায় আমার কিছু বদলানোর সুযোগ নেই। ওটা হয়ওনি।’

টিম হোটেলে সাকিব। ছবি: প্রথম আলো
টিম হোটেলে সাকিব। ছবি: প্রথম আলো

এত ভালো বোলিং করেও উইকেট না পাওয়ায় হয়তো অতৃপ্তি আছে মাশরাফির। তবে সেটিকে খুব বড় করে দেখছেন না, ‘প্রথম স্পেলে আমি দুটি উইকেট পেতেই পারতাম। কিন্তু ভাগ্যও তো থাকতে হবে আপনার সঙ্গে। তবে আমি খুশি যে প্রথম পাঁচ ওভারে মাত্র নয় রান দিয়েছি।’

* মাশরাফির পূর্ণাঙ্গ সাক্ষাৎকার পড়ুন কাল ছাপা কাগজে।