ভুলে ভরা প্রোটিয়াদের খাদের কিনারায় ঠেলে দিল নিউজিল্যান্ড
>
দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৪ উইকেটে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে গেল নিউজিল্যান্ড। সেঞ্চুরি করেছেন কেন উইলিয়ামসন
দক্ষিণ আফ্রিকা আগে ব্যাট করে ২৪২ রানে লক্ষ্য দেওয়ার পর কি একটু মন খারাপ হয়েছিল বাংলাদেশের সমর্থকদের? নিউজিল্যান্ড ব্যাটিং লাইনআপের জন্য লক্ষ্যটা খুব বড় না। কেন উইলিয়ামসনের দল জিতলে বাংলাদেশের সেমিফাইনালে ওঠার লড়াই যে আরও কঠিন হয়ে যায়!
অথচ এই রান তাড়া করতে নেমেই বাংলাদেশের সমর্থকদের আশা জাগিয়ে তুলেছিল নিউজিল্যান্ড। পয়েন্ট টেবিলে নানা পদের সমীকরণ কষা থেমে নেই। এ ম্যাচের ফল হওয়ার আগে সাধারণ হিসেব হলো, ৭ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তিনে নিউজিল্যান্ড। আজ দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হারলে দলটি থেকে যেত টেবিলের তিনেই। এতে বাংলাদেশ দল অন্তত একটু হলেও দম নেওয়ার সুযোগ পেত। কিন্তু কিউই অধিনায়ক উইলিয়ামসন তা হতে দেননি। তাঁর দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ভর করে প্রোটিয়াদের ৪ উইকেটে হারিয়ে নিউজিল্যান্ডই উঠে গেছে টেবিলের শীর্ষে। ৫ ম্যাচে তাদের সংগ্রহ ৯ পয়েন্ট। অন্যদিকে, এ হারে ক্রিকেট বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে প্রায় ছিটকেই পড়ল দক্ষিণ আফ্রিকা।
তবে এ ম্যাচে বাংলাদেশ সমর্থকদের আশা কিন্তু জেগেছিল। ১২ রানে কলিন মানরোকে হারানোর পর দ্বিতীয় উইকেটে ৬০ রানের জুটি গড়েন মার্টিন গাপটিল-উইলিয়াসন। দলীয় ৭২ থেকে ৮০—এ কটি রান তুলতে নিউজিল্যান্ড হারিয়েছে গাপটিল, রস টেলর ও টম লাথামকে। ১৮.১ ওভারে ৮০ রান তুলতেই ৪ উইকেট হারিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। তখন অনেকেই হয়তো ভেবেছেন, দক্ষিণ আফ্রিকা বুঝি জিতেই যাচ্ছে!
জিমি নিশামের সঙ্গে ৫৭ এবং কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমের সঙ্গে ৯১ রানের জুটিতে দলকে জয়ের সুবাস পাইয়ে দিচ্ছিলেন উইলিয়ামসন। ১২ বলে ১৪ রানের সমীকরণে থাকতে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন গ্র্যান্ডহোম (৬০)। আবারও জমে ওঠে ম্যাচ। পরের বলেই বোলার লুঙ্গি এনগিডিকে ক্যাচ দিতে দিতে অল্পের জন্য বেঁচে যান উইলিয়ামসন। জয়ের জন্য শেষ ওভারে ৮ রান দরকার ছিল নিউজিল্যান্ডের। প্রথম বলে স্যান্টনার ১ রান নিয়ে স্ট্রাইক দেন উইলিয়ামসনকে। আন্দিলে ফিকোয়ার পরের বলেই ছক্কা মেরে সেঞ্চুরির সঙ্গে জয়টাও হাতের মুঠোয় নিয়ে নেন উইলিয়ামসন (১০৩*)। শেষ পর্যন্ত ৩ বল হাতে রেখে জিতেছে নিউজিল্যান্ড।
প্রোটিয়াদের এ হারে তাদের ব্যাটসম্যানদের মাঝারি সংগ্রহের চেয়ে ফিল্ডারদের অবিশ্বাস্য ব্যর্থতাই বেশি চোখে পড়ে। বলা যায়, সুযোগগুলো নিতে পারলে এ ম্যাচ সম্ভবত বের করতে পারত না নিউজিল্যান্ড। ৩৮তম ওভারের শেষ বলে উইলিয়ামসনের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বল জমা পড়েছিল কুইন্টন ডি ককের গ্লাভসে। আশ্চর্যের বিষয়, দলের কেউ এমনকি উইকেটরক্ষক ডি কক পর্যন্ত তা টের পাননি! পরে টিভি রিপ্লেতে তা বোঝা গেছে। জয় থেকে তখনো ৬৬ বলে ৬৯ রানের দূরত্বে ছিল নিউজিল্যান্ড। উইলিয়ামসন তখন ফিরে গেছে ফলটা অন্য রকমও হতে পারত। ওই ওভারেরই চতুর্থ বলে গ্র্যান্ডহোমের ক্যাচ ছাড়েন ডেভিড মিলার। এ ছাড়া রান আউটের সুযোগও নষ্ট করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার ফিল্ডাররা।