বাংলাদেশের বড় পরীক্ষা আজ

বাংলাদেশ দুরন্ত গতিতে এগিয়ে চলেছে। বেশ কিছুদিন ধরেই ওরা অসাধারণ ক্রিকেট খেলছে, সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে ওদের ব্যাটিংটাও দৃষ্টিনন্দন। এরই মধ্যে দুটি সেঞ্চুরি করে ফেলেছে ও, দুটি পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংসও আছে। ও দেখিয়ে চলেছে যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচের মতো যেকোনো রান তাড়া করার ক্ষমতা এই দলটার আছে। তিন শর বেশি রান কয়েক ওভার হাতে রেখেই পেরিয়ে গেছে ওরা! সেটাও তামিম ইকবাল আর সব সময়ের ইন-ফর্ম মুশফিকুর রহিমের বড় কোনো অবদান ছাড়াই, যে দুজন কিনা ওদের প্রধান দুই ব্যাটসম্যান। সেটা এই জয়টার মাহাত্ম্য আরও বাড়াচ্ছে, কারণ এতে বোঝা যাচ্ছে, দলে আরও অনেকেই আছে, যারা হাত উঁচিয়ে দায়িত্বের বোঝা কাঁধে টেনে নিতে তৈরি। সাকিব উইকেটও পাচ্ছে, তবে ওদের বোলিং একটা চিন্তার জায়গা। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইনআপ যেমন শক্ত, ওরা (বাংলাদেশের) এই দুর্বল দিকটাতে আক্রমণ করবে।

অজি অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ ফর্ম ফিরে পেয়েছে, আবার আগের মতো বিস্ফোরক হয়ে উঠছে। গত বছর টেস্ট সিরিজে জসপ্রিত বুমরা ওকে ভুগিয়েছিল অনেক। ও যে ফর্মে ফিরছে, তার কিছুটা লক্ষণ ভারতের মাটিতে আর সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে দেখা গিয়েছিল। বোলাররাও ছন্দে ফিরে আসায় অজিরা আবার সেই পুরোনো দল হয়ে গেছে, যাদের নিয়ে প্রতিপক্ষকে দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়। গতি আর নিখুঁত বোলিং দিয়ে মিচেল স্টার্ক শেষ ওভারগুলোতে ব্যাটসম্যানদের টুঁটি চেপে ধরছে, (প্যাট) কামিন্স আর (কেন) রিচার্ডসনও খুব বেশি রান দিচ্ছে না। (অ্যাডাম) জাম্পা আর (গ্লেন) ম্যাক্সওয়েলও লাইন-লেংথ ঠিক রেখে বোলিং করে যাচ্ছে, পেসারদের দম নেওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে।

অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানরা যেহেতু পেসে অভ্যস্ত, আবার সে জায়গাটায় (পেস) পাওয়ার প্লে আর ডেথ ওভার—দুটিতেই বাংলাদেশি বোলারদের সংগ্রাম করতে হয়েছে, অজিদের বিপক্ষে তাই বাংলাদেশ স্পিনারদের দিয়ে বোলিং শুরু করে কি না, সেটা একটা দেখার মতো ব্যাপার হবে। ওদের ফিল্ডিংয়েও আরেকটু ভালো করতে হবে, বিশেষ করে বাউন্ডারি লাইনে। সেখানে ওরা সবটুকু নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারছে না। একজন বোলার যদি হঠাৎ দেখে ফিল্ডার বলের সীমানাদড়ি পেরোনো আটকাতে পারছে না, সেটা তার মন ভেঙে দেওয়ার মতো। বোলার তখন হঠাৎ চাপেও পড়ে যায়। ডাইভিং, স্লাইডিং...এগুলো অনুশীলন না করলে অভ্যাস হয়ে যায় না, তবে ইচ্ছাও থাকতে হয়। সাম্প্রতিক সময়ে অনেক খেলোয়াড়েরই কাঁধের হাড় সরে যাওয়ায়, খেলোয়াড়েরা চোটে পড়ায় এদিকটাতে (বাউন্ডারিতে ডাইভ বা স্লাইড) খেলোয়াড়দের তাড়না অনেক কমে গেছে।

২০১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় একটা পরীক্ষা আজ। এমন একটা দলের বিপক্ষে খেলতে হবে, যারা ফর্মে আছে, অসাধারণ ক্রিকেটও খেলছে। যদি এই পরীক্ষাটায় সফল হয়ে বের হতে পারে, তাহলে ওরা সেমিফাইনালে একটা জায়গার জন্য বড় দাবিদারই হয়ে যাবে।