যেভাবে হাই তোলা আটকাবেন, সরফরাজকে পরামর্শ ভারত-শ্রীলঙ্কার চিকিৎসকদের!

ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের একপর্যায়ে এভাবেই হাই তুলতে দেখা গিয়েছিল পাকিস্তানি অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদকে। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত
ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের একপর্যায়ে এভাবেই হাই তুলতে দেখা গিয়েছিল পাকিস্তানি অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদকে। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত
এক হাই তোলা নিয়ে কম হাস্যরসের শিকার হতে হচ্ছে না সরফরাজ আহমেদকে। এবার ভারত ও শ্রীলঙ্কার দুই চিকিৎসক বিনা মূল্যে হাই আটকানোর পরামর্শ দিয়েছেন পাকিস্তান অধিনায়ককে!

সরফরাজ আহমেদ নির্ঘাত এখন ভাবছেন, ‘কোন কুক্ষণে যে কাজটা করতে গিয়েছিলাম’! ভারতের বিপক্ষে ফিল্ডিংয়ের একপর্যায়ে হাই তুলেছিলেন পাকিস্তান অধিনায়ক। টিভি পর্দায় ধরা পড়ার পর থেকেই সরফরাজকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টায় মেতেছেন অনেকে। এবার তাঁকে হাই আটকানোর পরামর্শ দিলেন ভারত ও শ্রীলঙ্কার দুই চিকিৎসক!

দুই চিকিৎসকের মধ্যে একজন হলেন ভারতের মুম্বাইরের ইউনিক হাসপাতালের মেডিকেল ডিরেক্টর জুবিন ভাইদ। সরফরাজকে পরামর্শ দেওয়ার আগে হাই তোলার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিয়েছেন, ‘চিকিৎসাবিজ্ঞানে কিছু বিষয় আছে, যেগুলোর সরাসরি ব্যাখ্যা দেওয়া যায় না, শুধু তত্ত্বই দেওয়া যায়। হাই তোলা তেমনই একটি বিষয়। প্রচলিত ধারণা হচ্ছে, ঘুম কম হলে কিংবা ক্লান্ত থাকলে মানুষ হাই তুলে থাকে। কিন্তু সব সময় শুধু এ কারণেই হাই উঠবে, সেটাও নয়। বারবার ঘুমে ব্যাঘাত ঘটা, অতিরিক্ত মেদ, মাইগ্রেন, দুশ্চিন্তা এসব কারণেও হাই উঠতে পারে।’

এরপরই সরফরাজকে হাই আটকানোর পরামর্শ দিয়েছেন ভাইদ, ‘হাই আটকানোর সবচেয়ে সহজ ও কার্যকর উপায় হচ্ছে গভীরভাবে শ্বাস নেওয়া ও একটু বেশি সময় ধরে শ্বাস ছাড়া। বুকের বদলে পেটের পেশি ব্যবহার করা। হাই না থামা পর্যন্ত এটা করতে থাকলে ভালো উপকার পাওয়া যায়। হাই এলে নিজের জীবনের কিছু পুরোনো ভালো স্মৃতি, যেগুলো আপনাকে আনন্দ দেয়, সেগুলো মনে করতে পারেন। কিংবা এক গ্লাস ঠান্ডা পানীয়ও নিতে পারেন। চুইংগামও এসব পরিস্থিতিতে ভালো উপকার দেয়।’

অনেকটা একই রকম পরামর্শ দিয়েছেন শ্রীলঙ্কান স্পোর্টস মেডিসিন এক্সপার্ট অধ্যাপক অর্জুনা ডি সিলভা। এর আগে লঙ্কান ক্রিকেটারদের সঙ্গে কাজ করা ডি সিলভাও বলছেন, চুইংগাম চিবোনো ও পুরোনো সুখস্মৃতি মনে করলে হাই ওঠা থেমে যায়। সরফরাজের জন্য ডি সিলভার পরামর্শ, ‘সরফরাজ একজন অসাধারণ ক্রিকেটার। সাধারণত আমরা ক্লান্ত কিংবা বিরক্ত থাকলে হাই ওঠে। এ ছাড়া অন্য অনেক কারণেও এটা হতে পারে। সরফরাজের ক্ষেত্রে যেটা হয়েছে, তর্কসাপেক্ষে সর্বকালের সেরা ভারতীয় দলের মুখোমুখি হতে হয়েছিল তাঁকে। যে কারণে আগের রাতে হয়তো ঠিকভাবে ঘুমাতে পারেনি সে। অনেক সময় এমন হয়, স্নায়ুচাপে ভুগলে কিংবা অন্য কাউকে হাই তুলতে দেখলে নিজেরও হাই আসে।’

সরফরাজের ফিটনেস নিয়ে এর আগে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বেশ কয়েকজন সাবেক পাকিস্তানি ক্রিকেটার। শোয়েব আখতার তো রীতিমতো ধুয়েই দিয়েছেন তাঁকে। এবার ডি সিলভাও ইঙ্গিত দিলেন, অতিরিক্ত ওজনের কারণেও বারবার হাই উঠে থাকতে পারে পাকিস্তান অধিনায়কের, ‘আরেকটা বিষয় হলো, সরফরাজের অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া (ওএসএ) ভোগার সম্ভাবনা প্রবল। তার বডি মাস ইনডেক্স বা বিএমআই (কোনো মানুষের ওজন তার উচ্চতা অনুযায়ী বেশি না কম, সেটি মাপার জন্য বডি মাস ইনডেক্স সূচক ব্যবহার করা হয়) ২৪.৬, যেখানে এশিয়ান ক্রিকেটারদের জন্য সর্বোচ্চ বিএমআই ধরা হয় ২৩।’

এর পর থেকে মাঠে হাই উঠলে কী করতে হবে, সেই পরামর্শও সরফরাজকে দিয়েছেন ডি সিলভা, ‘যখনই হাই উঠবে, সরফরাজের উচিত হবে দুই বছর আগে ভারতের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জয়ের সেই স্মৃতি মনে করা। সঙ্গে চুইংগামও চিবোতে পারেন। এতে করে মনোযোগ সরে যাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে।’

পাকিস্তানের পরবর্তী ম্যাচ আগামী রোববার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। ওই ম্যাচে দুই চিকিৎসকের এসব পরামর্শ কাজে লাগাতেই পারেন সরফরাজ!