ভারতকে হারাতে হবে

আবদুর রাজ্জাক
আবদুর রাজ্জাক

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশ ভালো খেলেছে। বেশ ভালো খেলেছে। আমাদের বোলিং একটু ভালো হতে পারত। টপ অর্ডারে ব্যাটিং ভালো করা যেত। ফিল্ডিংও ভালো হতে পারত। তবে সব মিলিয়ে আমরা ভালো খেলেছি। কিন্তু এই রান তাড়া করা একটু কঠিন বটে।

আমরা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খুব বেশি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলি না। চার বছর পরপর বড় মঞ্চে দেখা হয়। এভাবে আসলে খেলা কঠিন। আমরা এখনই যদি আরেকবার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলি, আমরা প্রথমবারের তুলনায় ভালো খেলব। উন্নতিটা এভাবেই হয়। বছরের পর বছর না খেলে হুট করে বড় মঞ্চে খেলা আদর্শ নয়। তবু আমরা খুবই ভালো খেলেছি, যা আমাদের সামর্থ্যের প্রমাণ।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মোসাদ্দেক হোসেন ও সাইফউদ্দিন চোটের কারণে না থাকায় পরিকল্পনায় ব্যাঘাত ঘটেছে। বাধ্য হয়ে একাদশ পরিবর্তন করা সহজ না। যে দলে আসছে, তার জন্যও না। কারণ শেষ মুহূর্তে এসে খেলা একটু কঠিন। তখন আপনি শুধুই সুযোগ নিচ্ছেন, কাজে আসতেও পারে। না–ও আসতে পারে।

আমাদের ফিল্ডিং ভালো হতে পারত। আমি এর চেয়ে ভালো প্রত্যাশা করেছিলাম। আমাদের ফিল্ডিং এক দিন খুব ভালো হচ্ছে, আরেক দিন হচ্ছে না। বড় ম্যাচের উত্তেজনার কারণে এমন হতে পারে। তবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ফিল্ডিংটা আরও ভালো করার সুযোগ ছিল।

অনেকে বাংলাদেশের বোলিংয়ের সমালোচনা করছে। কিন্তু এখানে রান থামিয়ে বোলিং করা ছাড়া উপায় নেই। খেলাটা হবে ব্যাটসম্যানদেরই। বোলারদের মাথা খাটিয়ে বোলিং করতে হবে। রান থামিয়েই উইকেট বের করতে হবে। আপনি ৭ করে রান দিলে উইকেট পড়বে না, চাপে ফেললেই উইকেট আসবে। বাংলাদেশি বোলাররা সেটাই করার চেষ্টা করছে, কিছু ম্যাচে পারছে, কিছু ম্যাচে পারছে না।

বোলিংয়ে না পারলেও ব্যাটিংয়ে অবিশ্বাস্য ধারাবাহিকতা দেখাচ্ছে বাংলাদেশ। এক-দুজন ব্যাটসম্যান রান করছে, তা কিন্তু নয়। পুরো ব্যাটিং ইউনিট রান করছে। কেউ না কেউ বড় রান করছেই। মুশফিকের ইনিংসের কথাই ধরুন না, পরিস্থিতি অনুযায়ী আদর্শ ইনিংস খেলেছে সে।

আমাদের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে শুধু সাব্বির দ্রুত কিছু রান দিতে পারেনি। অস্ট্রেলিয়ার ম্যাক্সওয়েল যেটা করেছে, সাব্বির একই ইনিংস খেলতে পারলে গল্পটা ভিন্ন হতে পারত। কিন্তু কেউই চায় না দ্রুত আউট হতে বা বোলিংয়ে রান দিতে।

ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তামিমের নিয়ে কিছু কথা বলতেই হয়। তামিমের কাছে প্রত্যাশা অনেক। বিশেষ করে উইকেটে একবার জায়গা করে নিতে পারলে বড় ইনিংস খেলা অভ্যাসে পরিণত করেছে তামিম। কিন্তু এবারের ক্রিকেট বিশ্বকাপে এখনো তামিমের সেরা পারফরম্যান্স দেখলাম না। শতভাগ ছন্দে নেই। ভাগ্যও সঙ্গ দিচ্ছে না। আশা করি, বাকি ম্যাচগুলো কাজে লাগাবে তামিম।

আর বাংলাদেশের সেমিফাইনালের সমীকরণ একই আছে। আমাদের পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের পাশাপাশি ভারতকে হারাতে হবে। হিসাব খুব কঠিন না। আর বাকি সব ম্যাচে অন্য দলগুলোর যে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল হবে, সেই নিশ্চয়তা কই? যেকোনো কিছু হতে পারে এবারের বিশ্বকাপে। অপেক্ষায় রইলাম।