বিশ্বকাপের জন্য মানা করা হয়েছিল, তবু আইপিএল খেলেছেন রাবাদা!

বিশ্বকাপটা খুব একটা ভালো কাটেনি কাগিসো রাবাদার। ছবি: রয়টার্স
বিশ্বকাপটা খুব একটা ভালো কাটেনি কাগিসো রাবাদার। ছবি: রয়টার্স
>২০০৩ বিশ্বকাপের পর প্রথমবারের মতো নকআউট রাউন্ডের আগেই বাদ পড়ল দক্ষিণ আফ্রিকা। নিষ্প্রভ ছিলেন বোলিংয়ের মূল ভরসা কাগিসো রাবাদাও। সেসব প্রসঙ্গ নিয়েই কথা বলতে হলো প্রোটিয়া অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসি।

বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিংয়ে সবচেয়ে বড় ভরসার নাম ছিলেন কাগিসো রাবাদা। ওয়ানডে র‍্যাঙ্কিংয়ে পঞ্চম স্থানে থাকা রাবাদা নিজেও ছিলেন দারুণ ফর্মে। অথচ বিশ্বকাপে এসে তিনিই হয়ে গেলেন ভীষণ নিষ্প্রভ।

রাবাদার নিষ্প্রভ থাকার কারণে ভুগতে হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকাকেও। সাত ম্যাচ শেষেই বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে তাদের। এবার চমকপ্রদ এক তথ্য জানালেন ফাফ ডু প্লেসি। তাঁর নিষেধাজ্ঞা না মেনেই না কি আইপিএল খেলতে গিয়েছিলেন রাবাদা!

আইপিএলে গিয়ে ইনজুরি নিয়ে দেশে ফিরেছিলেন রাবাদা। বিশ্বকাপের আগে পুরোপুরি ফিট হয়ে উঠতে পারবেন কি না, সংশয় ছিল সেটি নিয়ে। ফিট হলেও নিজের সেরা রূপে দেখা দিতে পারেননি এ পেসার। এখন পর্যন্ত ৫০.৮৩ গড়ে পেয়েছেন মাত্র ৬ উইকেট। বিশ্বকাপ স্বপ্ন শেষ হওয়ার পরে অধিনায়ক ডু প্লেসিকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, রাবাদার ইনজুরি পুরোপুরি সেরেছিল কি না। সেখানেই ডু প্লেসি জানিয়েছেন, বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখেই এবারের আইপিএলে যেতে রাবাদাকে বারণ করেছিলেন।

গত দেড় বছরে রাবাদার ওপর কতটা চাপ গেছে, সেটির সাক্ষ্য দেবে পরিসংখ্যান। ২০১৮ সালের শুরু থেকে এখনো পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রাবাদার চেয়ে বেশি বল করেছেন একমাত্র নাথান লায়ন। বিশ্বকাপে যেখানে সতেজ রাবাদাকে দরকার ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার, সেখানে বিশ্বকাপের আগে চলে গেলেন আইপিএলে! সেখানে গিয়ে পারফর্ম খারাপ করেননি, ১২ ম্যাচে নিয়েছিলেন ২৫ উইকেট। কিন্তু চোটমুক্ত থাকতে পারেননি। রাবাদার চোটের ব্যাপারে কথা উঠলে ডু প্লেসির কণ্ঠে ফুটে উঠল অসহায়ত্ব, ‘আমার মনে হয় না এ প্রশ্নের সঠিক উত্তর আমাদের কাছে আছে। আমরা চেষ্টা করেছিলাম ওকে আইপিএলে যাওয়া থেকে বিরত রাখতে। আমরা ওকে সতেজ রাখতে চেয়েছিলাম।’

শুধু রাবাদা নন, বিশ্বকাপ ২০১৯ দলে থাকা আরও বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারকেও আইপিএলে যেতে নিষেধ করেছিলেন, ডু প্লেসির দাবি এমনটাই, ‘আইপিএলের আগেই এমনটা ঠিক করা ছিল, যারা তিন ফরম্যাটেই খেলে, তাদের সতেজ রাখার জন্য আইপিএলে না পাঠানো হোক। দলের কয়েকজন খেলোয়াড়ের বিশ্রামে থাকার দরকার ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা সতেজ অবস্থায় বিশ্বকাপে আসতে পারেনি। আমি কোনো অজুহাত দিচ্ছি না, এটাই বাস্তবতা।’

বিশ্বকাপের আগেই চোটে পড়েছিলেন এনরিখ নর্তে। শুরুর পরপর ছিটকে যান ডেল স্টেইন। চোটের কারণে বেশ কয়েকটি ম্যাচ খেলতে পারেননি লুঙ্গি এনগিডিও। দলের পেস আক্রমণের পুরো দায়িত্বটাই তাই ছিল রাবাদার কাঁধে। ক্লান্তিজনিত কারণে হোক বা ইনজুরি থেকে পুরোপুরি সেরে উঠতে না পারা—প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি ২৪ বছর বয়সী এই পেসার। বিশেষ করে চোখে পড়েছে রাবাদার গতি কমে যাওয়ার বিষয়টিও। রাবাদাকে কি তাহলে কয়েক ম্যাচের জন্য বিশ্রাম দেওয়া যেত না?

দলে পর্যাপ্ত বিকল্প পেসার না থাকার কারণেই রাবাদাকে টানা খেলিয়ে যেতে হয়েছে বলে জানালেন ডু প্লেসি, ‘দলের জন্য সে খুবই গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। ওকে বাইরে বসিয়ে রাখাটা তাই কঠিন। সবাইকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলানোর জন্য পাইপলাইনে ৪-৫ জন বোলার থাকতে হয়, যেটা আমাদের ছিল না। এ কারণে রাবাদার ওপর দায়িত্ব এবং চাপ দুটোই বেশি ছিল।’

রাবাদার দাবি, আইপিএলে খেলার সিদ্ধান্ত সঠিকই ছিল, ‘আইপিএলে গিয়ে অনেক কিছু শিখেছি। অনেক ফলাফল আমার পক্ষে এসেছে। আইপিএলে আমি ভালোই খেলেছি, যদিও আরও ভালো খেলতে পারতাম। এ ধরনের টুর্নামেন্টগুলোতে আপনি সব সময়ই ভালো খেলতে চাইবেন।’