ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া দ্বৈরথও টান টান হবে

সুনীল গাভাস্কার
সুনীল গাভাস্কার

টুর্নামেন্টের শুরুতে শীর্ষ ফেবারিট থাকা ইংল্যান্ড এখন কিছুটা ঝুঁকির মুখে। শ্রীলঙ্কার কাছে হারের পর তাদের ম্যাচগুলো এখন তিনটি শক্ত দলের বিপক্ষে। দলগুলো হলো অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও ভারত। শেষ চারে পৌঁছাতে হলে এই দলগুলোর বিপক্ষে জিততে হবে। এর মধ্যে প্রথমটি আজ তাদের পুরোনো প্রতিদ্বন্দ্বী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লর্ডসে। অস্ট্রেলিয়া গত বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন। ওরা খুব ভালো ক্রিকেট খেলছে, এখন ছন্দটাও মনে হয় পেয়ে গেছে।

শুরুতে জেসন রয় যে বিধ্বংসী শুরুটা এনে দিত, ওর চোটের কারণে ইংল্যান্ড সেটা পাচ্ছে না। এ কারণে জস বাটলারের ওপর রান বাড়ানোর অতিরিক্ত চাপ এসে পড়েছে। যার ফলে সে তার বিধ্বংসী রূপটা পুরোপুরি মেলে ধরতে পারছে না। ইংল্যান্ডের বোলিং মোটামুটি ভালো হলেও খুব একটা আতঙ্ক ছড়াতে পারছে না। ওদের ব্যাটসম্যানরা বড় রান করে দেখে দলটির বোলাররা কিছুটা সুবিধা পায়। ইংল্যান্ডের দুটি হারই রান তাড়া করতে নেমে, যেটা ওদের জন্য আরেকটা চিন্তার বিষয়।

অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়া শুধু ভারতের কাছেই হেরেছে। সেই ম্যাচের পর থেকে তাদের ব্যাটসম্যানরাও ভালো করছে। অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ ও ডেভিড ওয়ার্নার দুজনই এই টুর্নামেন্টে সেঞ্চুরি করেছে। খাজা আর স্মিথও রান করায় ওদের ব্যাটিং এখন খুব শক্তিশালী মনে হচ্ছে। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলও মনের আনন্দে খেলছে এবং শেষ ওভারগুলোতে রানের গতি বাড়াচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার বোলিংটা আরও ভালো হচ্ছে।

মিচেল স্টার্ক দ্রুতগতির সঙ্গে ভয়ংকর বোলিং করছে। প্যাট কামিন্স ও কেন রিচার্ডসনও গতির সঙ্গে নিখুঁত বোলিংয়ে প্রতিপক্ষের ওপর চাপ ধরে রাখছে। জাম্পাও উইকেট তুলে নিচ্ছে, যে কারণে অস্ট্রেলিয়ার বোলিং ভারসাম্যপূর্ণ ও শক্তিশালী।

ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার দ্বৈরথ ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথ থেকেও পুরোনো। সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকায় ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর কারণে স্মিথ ও ওয়ার্নার নিষিদ্ধ হয়েছিল। ইংল্যান্ডের সমর্থকেরা সেটা ওদের ভুলতে দিচ্ছে না। যতবারই ওরা মাঠে নামে, প্রতিপক্ষ যে–ই হোক না কেন ব্রিটিশ জনতা ওদের সেটা মনে করিয়ে দেয়। এই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে এই দুজনকে সেটা আরও বেশি সামলে নিতে হবে। এখন পর্যন্ত ওরা দুজনই তা খুব ভালো সামলে এসেছে এবং পাত্তা না দিয়ে রান করছে। অস্ট্রেলিয়া বনাম ভারত ম্যাচে বিরাট কোহলি যেভাবে দর্শকদের স্টিভ স্মিথ ও ওয়ার্নারকে দুয়ো না দিয়ে হাততালি দিতে বলল, সেটাই খেলার সত্যিকারের চেতনা। এটা ভারত অধিনায়ককে আকাশের উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে এবং কঠিন হৃদয়ের অস্ট্রেলিয়ানদের মধ্যেও ভালোবাসার জায়গা দিয়েছে।

গত কয়েকটি খেলা টান টান উত্তেজনার ছিল আর এই ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া দ্বৈরথও তেমনই হবে মনে হচ্ছে।