বাংলাদেশের ফুটবলে চমক উপহার দিতে চায় ব্রাজিল

ব্রাজিলে অনুশীলনের জন্য যাচ্ছেন ৪ ফুটবলার (বা থেকে জগেন লারকা, নাজমুল আকন্দ, ওমর ফারুক ও লতিফুর রহমান)। ছবি: বাফুফে
ব্রাজিলে অনুশীলনের জন্য যাচ্ছেন ৪ ফুটবলার (বা থেকে জগেন লারকা, নাজমুল আকন্দ, ওমর ফারুক ও লতিফুর রহমান)। ছবি: বাফুফে
>বাংলাদেশের ৪ ফুটবলারকে অনুশীলন করার সুযোগ করে দিয়েছে ব্রাজিল। আজ রাতেই ব্রাজিলের উদ্দেশে রওনা হচ্ছে সেই ৪ সম্ভাবনাময় ফুটবলার। এখানেই শেষ নয়, দেশের ফুটবলে আরও বড় চমক উপহার দিতে চান বলে জানিয়েছেন ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত।

বিশ্বকাপ ফুটবলের সময় বাংলাদেশের আকাশের একাংশ দখল করে নেয় ব্রাজিলের পতাকা। গত বিশ্বকাপের সময় হাজার হাজার মাইল দূরের এক দেশে নিজ মাতৃভূমির হাজার হাজার পতাকা উড়তে দেখে রোমাঞ্চিত হয়েছিলেন ঢাকাস্থ ব্রাজিলীয় রাষ্ট্রদূত জোয়াও তাবাজারা দি অলিভিয়েরা জুনিয়র। ভালোবাসার প্রতিদান হিসেবে বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য কিছু করার তাগিদ অনুভব করেন তিনি। সে তাগিদের ফল হিসেবেই আজ রাতে ব্রাজিলে অনুশীলন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশের চার তরুণ প্রতিশ্রুতিশীল ফুটবলার। ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত বলেছেন তাঁর দেশের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য আরও চমক অপেক্ষা করছে।

ব্রাজিল দূতাবাসের সঙ্গে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) এ ব্যাপারে ভূমিকা রেখেছে। চার ফুটবলারকে গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে শুভেচ্ছা জানায় বাফুফে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। ভবিষ্যতে আরও বেশি সময়ের জন্য অনুশীলনের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি, ‘যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বলেছেন, ‘স্বপ্নের কেবল শুরু। এক মাসের জন্য যাচ্ছে ওরা। এক বছরের জন্য যেতে পারলে ভালো হতো। তবে বয়স ১৮ বছরের নিচে হওয়ায় সেটা সম্ভব হয়নি। তবে ভবিষ্যতে আরও সুযোগ থাকবে।’

প্রথমবারের মতো ব্রাজিলে এক মাসের অনুশীলনের সুযোগ পাওয়া সেই চার ভাগ্যবান মেধাবী কিশোর ফুটবলার জগেন লাকরা, লতিফুর রহমান নাহিদ, ওমর ফারুক মিঠু ও নাজমুল আকন্দ। প্রথম দুজন অনূর্ধ্ব-১৫ এবং বাকি দুজন অনূর্ধ্ব-১৭ বিভাগের। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং ক্রীড়া পরিদপ্তরের অধীনে অনুষ্ঠিত ডেভেলপমেন্ট কাপ অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৭ বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ থেকে সেরা ২০ জনকে ডাকা হয়েছিল বাছাইপর্বে। দুই দিনের বাছাই পরীক্ষায় সেরা হয়ে পেলে-গারিঞ্চা-নেইমারদের দেশের টিকিট পেয়েছে তারা। ব্রাজিলের ভাস্কো দা গামা ক্লাবের অধীনে অনুশীলন করার কথা রয়েছে তাদের।

ব্রাজিলীয় রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘ফুটবলের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে নতুন সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। প্রকল্প এখানেই শেষ নয়। ভবিষ্যতে আরও ফুটবলারের প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ আছে। আমি ঢাকায় এসে শুরু থেকে চিন্তা করে যাচ্ছিলাম ফুটবলের মাধ্যমে কিছু একটা হোক। অবশেষে সেটা হচ্ছে। এতে আমি খুশি। বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য আরও বড় চমক অপেক্ষা করছে।’ কিন্তু কী সেই চমক, তা খোলাসা করেননি ব্রাজিলিয়ান রাষ্ট্রদূত।

ব্রাজিলে এখন কোপা আমেরিকা ফুটবল চলছে। অনুশীলনের ফাঁকে ফাঁকে দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ের স্বাদ কিশোর ফুটবলাররাও উপভোগ করতে পারবেন, ‘ব্রাজিলের ফুটবল ঐতিহ্য থেকে শুরু করে সবকিছু প্রত্যক্ষ করার সুযোগ আছে। এখন কোপা আমেরিকা চলছে। সেই উৎসবের অংশ গ্রহণ করার সুযোগ আছে তাদের।’

এর আগে শোনা গিয়েছিল বাংলাদেশ সফর করতে পারেন ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের কিংবদন্তি সাদা পেলে খ্যাত জিকো। কিন্তু আপাতত সম্ভব না হলেও ভবিষ্যতে আসার সম্ভাবনার স্বপ্ন দেখিয়েছেন ব্রাজিলিয়ান রাষ্ট্রদূত, ‘বিশ্বকাপের পরে জিকো জাপানে কোচিং নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় সেটা সম্ভব হয়নি। তবে নতুন করে আলোচনার মাধ্যমে ভবিষ্যতে আসার সম্ভাবনা আছে।’