টেন্ডুলকারকেও ছাড়লেন না ধোনি ভক্তরা!

ধোনির নেতৃত্বেই ২০১১ বিশ্বকাপ জিতেছিলেন শচীন টেন্ডুলকার। এএফপি ফাইল ছবি
ধোনির নেতৃত্বেই ২০১১ বিশ্বকাপ জিতেছিলেন শচীন টেন্ডুলকার। এএফপি ফাইল ছবি

ভারতীয় ক্রিকেটে শচীন টেন্ডুলকারের অবস্থান কিংবদন্তিতুল্য। অথচ মহেন্দ্র সিং ধোনিকে নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করায় সেই শচীনকেই সমর্থকদের কাছ থেকে কথা শুনতে হচ্ছে! সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শচীনকে কথা শুনিয়েছেন বেশ কিছু ধোনি ভক্ত।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে পুরো ৫০ ওভার খেলেও ২২৪ এর বেশি তুলতে পারেনি ভারত। ভারতীয় ইনিংস শেষে অনেকেই ধোনির ৫২ বলে ২৮ রানের শম্বুকগতির ইনিংসের সমালোচনা করেছিলেন। সে দলে ছিলেন শচীনও। ধোনির মন্থর ইনিংসের সমালোচনা করে ‘মাস্টার ব্লাস্টার’ বলেছিলেন, ‘আমি কিছুটা নাখোশ। আরও ভালো ব্যাটিং হতে পারত। ধোনি ও কেদারের জুটি নিয়েও আমি খুশি নই। জুটিটি খুবই ধীর গতির ছিল। ৩৪ ওভার স্পিন খেলে আমরা মাত্র ১১৯ রান তুলেছি। স্পিনের সামনে আমাদের একদমই স্বচ্ছন্দ মনে হয়নি। আমাদের ব্যাটিংয়ে ইতিবাচক কোনো তাড়নাই ছিল না।’

টেন্ডুলকারের এমন মন্তব্য ভালোভাবে নিতে পারেননি অনেক ধোনি ভক্তই। ২৮ বছর পর ভারতকে দ্বিতীয় বিশ্বকাপ এনে দেওয়া ধোনির ভক্ত-সমর্থকের সংখ্যা নেহাত কম নয়। তাদেরই একাংশ টুইটারে শচীনকে জবাব দিয়েছেন বেশ দৃষ্টিকটুভাবে। কেউ কেউ দুজনের ক্রিকেটীয় অর্জনের তুলনায় নেমেছেন, আবার কেউ কেউ তাদের বায়োপিকের দর্শকসংখ্যাকেও টেনে এনেছেন!

নির্মল নামের একজন যেমন উল্টো শচীনের বিশ্বকাপ জেতার পেছনে ধোনির অবদান মনে করিয়ে দিয়ে খোঁচা দিয়েছেন, ‘ইতিহাসের অন্যতম সেরা ভারতীয় খেলোয়াড়দের পাশে নিয়েও পুরো ক্যারিয়ারে বিশ্বকাপ জিততে পারেননি আপনি। এই সেই ধোনি, যে আপনাকে বিশ্বকাপ এনে দিয়েছিলেন। শচীন এমনভাবে কথা বলছেন, যেন তিনি নিজে খুব বড় হিটার ছিলেন। নব্বইয়ের ঘরে ঢুকলেই তো তিনি রানের জন্য সংগ্রাম করতেন। নব্বইয়ের ঘরে তাঁর স্ট্রাইক রেট কেমন ছিল, সে ব্যাপারে কেউ তাঁকে একটু মনে করিয়ে দিন।’

শচীনকে কথা শোনাতে গিয়ে আরেকজন টেনে এনেছেন ২০১২ এশিয়া কাপে বাংলাদেশের কাছে ভারতের হারা ম্যাচকে। ওই ম্যাচেই আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শততম সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন শচীন। তবে ১১৪ রানের ইনিংস খেলতে ১৪৭ বল খরচ করেছিলেন সেদিন। ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেটে হেরেছিল ভারত। ওই হারের পেছনে শচীনের বল অপচয়কেই দায়ী করেছেন সানিমা নামের একজন টুইটার ব্যবহারকারী, ‘আমার মনে হচ্ছে, বাংলাদেশের বিপক্ষে শততম সেঞ্চুরির ইনিংসটির কথা তিনি ভুলে গেছেন। আপনার ইনিংসের কারণেই বাংলাদেশ সেদিন সহজে জিততে পেরেছিল। সেঞ্চুরিগুলো বাদ দিয়ে হিসাব করে দেখুন, কটি ম্যাচ বাঁচানো ইনিংস খেলেছেন তিনি?’

ধোনি ও শচীনের জনপ্রিয়তার তুলনা করতে গিয়ে একজন তাদের বায়োপিককেও টেনে এনেছেন। এক পাশে একটি ভরা স্টেডিয়ামের ছবি দিয়ে লিখেছেন, ‘ধোনির বায়োপিক দেখা দর্শকের সংখ্যা’, আরেকদিকে একটি ফাঁকা গ্যালারির ছবি দিয়ে লিখেছেন, ‘টেন্ডুলকারের বায়োপিক দেখা দর্শকের সংখ্যা।’

তবে শচীনের পক্ষ হয়েও জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেছেন কেউ কেউ। হরিশ নামের একজন যেমন লিখেছেন, ‘২০০৩ বিশ্বকাপে শচীনের রান ৬৭৩। আর ২০০৭, ২০১১, ২০১৫ ও ২০১৯ বিশ্বকাপে আফগানিস্তান ম্যাচের আগে ধোনির মোট রান ৫৯৭।’

ব্যাট হাতে এবারের বিশ্বকাপটা খুব একটা ভালো কাটছে না ৩৭ বছর বয়সী ধোনির। চার ইনিংসে স্কোর ২৮, ১, ২৭ ও ৩৪। ঋষভ পন্তের মতো আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যানকে বাইরে বসিয়ে রেখে ধোনিকে খেলিয়ে যাওয়ার সমালোচনাও করেছেন অনেকে।