মাশরাফিরা ভাবছেন ভারতকে কীভাবে হারানো যায়

বাংলাদেশই বিশ্বকাপকে জমিয়ে তুলেছে, মনে করেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। ছবি: রয়টার্স
বাংলাদেশই বিশ্বকাপকে জমিয়ে তুলেছে, মনে করেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। ছবি: রয়টার্স
>মাশরাফিরা আছেন ছুটিতে। দলের কোনো কার্যক্রম নেই তাতে কী, ভাবনা থেকে তো আর বিশ্বকাপ উবে যাচ্ছে না! ক্রিকেটারদের আলোচনায় ঘুরেফিরে আসছে সেমিফাইনালে যাওয়ার সমীকরণ। ছুটির মধ্যেও তাঁরা ছক কষছেন—ভারতকে কীভাবে হারানো যায়!

বার্মিংহামে ভারতের বিপক্ষে শুধু মাশরাফিদেরই নয়, কঠিন পরীক্ষা দিতে হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে আসা সাংবাদিকদেরও। টিম ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ২৫ থেকে ২৯ জুন পুরো দল থাকবে ছুটিতে।

ক্রিকেটাররা ছুটিতে, কিন্তু সাংবাদিকদের তো আর ছুটি নেই। খবরের রসদ খুঁজতে তাই বার্মিংহামের বৃষ্টিভেজা হিমেল সকালে সবাই জড়ো হয়েছেন টিম হোটেলের সামনে। ‘নেই, কেউ নেই—সব ঘুরতে বেরিয়েছে’— অভিন্ন সুরে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন আর টিম ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ জানিয়ে দিলেন ফোনে। মিনহাজুল কথা বললেন লন্ডন থেকে আর মাহমুদ আছেন টিম হোটেল থেকে ‘তিন ঘণ্টার দূরত্বে কোথাও’।

কেউ কথা বলবেন না, কাউকে পাওয়া যাবে না—এটি জানার পরও তবুও সাংবাদিকেরা ঠায় দাঁড়িয়ে টিম হোটেলের সামনে। হঠাৎ নিচে নেমে এলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। বাংলাদেশ অধিনায়ককে ভীষণ মুগ্ধ করেছে ইংলিশ গ্রাম। টন্টনে অনেক সময় কাটিয়েছেন গ্রামে। কিন্তু তাতে মন ভরেনি। আজ আবার বেরিয়েছেন বার্মিংহামের কোনো এক গ্রাম দেখতে। ‘আপনারা এখানে কেন? নিউজিল্যান্ড-পাকিস্তান ম্যাচ দেখেন। আমাদের প্রেক্ষাপটে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। নিউজিল্যান্ড জিতলে আমাদের কাজে দেবে’—মুঠোফোনে স্কোরকার্ড দেখতে দেখতে মাশরাফি একটু দাঁড়ালেন। মেতে উঠলেন স্বভাবসুলভ আড্ডায়।

সপ্তাহজুড়ে বার্মিংহামে যে ক্রিকেট উৎসবটা হবে, তা নিয়ে রোমাঞ্চ আর উত্তেজনার শেষ নেই এখানকার বাংলাদেশি, ভারতীয়, পাকিস্তানি প্রবাসীদের। তিনটি দেশেরই খেলা পড়েছে এ শহরে। বার্মিংহাম এখন যেন রূপ নিয়েছে উপমহাদেশে। মাশরাফির সঙ্গে যখন আড্ডা হচ্ছে, এজবাস্টনে পাকিস্তান খেলছে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে। একই মাঠে ৩০ জুন খেলবে ভারত-ইংল্যান্ড। আর ২ জুলাই বাংলাদেশ-ভারত।

এই ভেন্যুতে বাংলাদেশ খেলবে একটি ম্যাচ, কিন্তু চোখ থাকবে বাকি দুটিতেই। প্রতিটির সঙ্গে সেমিফাইনালে যাওয়ার সমীকরণ জড়িয়ে। নিউজিল্যান্ডের কাছে যদি পাকিস্তান হারে, ভারতের কাছে যদি ইংল্যান্ড হারে। আর দুই ‘যদি’ মিলিয়ে বাংলাদেশ ভারতকে হারিয়ে দেয়…। মাশরাফি উঁচু স্বরে বলে উঠলেন, ‘সেমিফাইনালে যেতে পারব কি না পরের হিসাব, আরে ভাই, এই বিশ্বকাপ ক্রিকেট তো জমিয়ে তুলেছে বাংলাদেশ! না হলে টুর্নামেন্ট ম্যাড়ম্যাড়ে মনে হতো। সবাই আগ থেকেই বুঝে যেত কোন চারটা দল উঠতে যাচ্ছে সেমিফাইনালে। আমাদের কারণেই তো এখনো কেউ বলতে পারছে না টুর্নামেন্টে শেষ চারের ছকটা কেমন হবে।’

বাংলাদেশ খুব ভালো খেলছে এই টুর্নামেন্টে, কথাটা কাল সাউদাম্পটন থেকে বার্মিংহামে—কত ব্রিটিশের কাছে যে শোনা হলো। যে ট্যাক্সিচালক কাল রাতে কোচ স্টেশন থেকে হোটেলে নিয়ে এলেন, তিনি একজন পাকিস্তানি। ট্যাক্সিচালক হোসেন আলী ভাবছেন পাকিস্তান দল কীভাবে সেমিফাইনালে যাবে। এ ভাবনার মধ্যেও জানিয়ে রাখলেন, বাংলাদেশ যেভাবে খেলছে সেমিফাইনাল তাদের প্রাপ্য। মাশরাফিরা অবশ্য সেমিফাইনাল নয়, আপাতত তাঁরা ভাবছেন, ২ জুলাই এজবাস্টনে ভারতকে কীভাবে হারানো যায়।