ভারতের সাম্রাজ্যের দখল নিল বাংলাদেশ

মিনার্ভা পাঞ্জাবকে হারিয়ে এএফসি কাপের দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করার পর আবাহনী দল। ফাইল ছবি
মিনার্ভা পাঞ্জাবকে হারিয়ে এএফসি কাপের দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করার পর আবাহনী দল। ফাইল ছবি
>দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চল থেকে প্রথমবারের মতো এএফসি কাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে বাংলাদেশের আবাহনী লিমিটেড। এর আগে দুইবারই প্রথম পর্বে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারতের ক্লাব বেঙ্গালুরু এফসি।

ফুটবলে একটা সময় বাংলাদেশ আর ভারত ছিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। লড়াইটা ছিল মোটামুটি সমতার। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই উত্তেজনার পারদকে ওপরে তুলে দিত। কিন্তু সে দিন নেই অনেক দিন। ভারত ফুটবলে নিজেদের অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে পেয়েছে প্রথম ১০০ দেশের মধ্যে থাকার স্বাদ। গত দশ বছরে দুইবার এশিয়ান কাপ ফুটবলে চূড়ান্তপর্বে খেলার অর্জনও তাদের হয়েছে। যে সাফ ফুটবলের সবশেষ পাঁচটি আসরে বাংলাদেশ সেমিফাইনালে উঠতে ব্যর্থ, সেখানে তারা বয়সভিত্তিক দলকে জাতীয় দল বানিয়ে পাঠিয়ে দেয়। তবে সম্প্রতি আন্তর্জাতিক ক্লাব ফুটবলে ভারতের সাম্রাজ্য দখল করেছে বাংলাদেশ।

এএফসি কাপে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে একক রাজত্ব ছিল ভারতীয় ক্লাব বেঙ্গালুরু এএফসির। ২০১৭ সাল থেকে এই অঞ্চলের ক্লাবগুলোকে এএফসি কাপের প্রথম পর্বে নিজেদের মধ্যে খেলার সুযোগ করে দেয় এশিয়ান ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা। প্রথম দুবারই চ্যাম্পিয়ন হয়ে দ্বিতীয় পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে বেঙ্গালুরু। সেই বেঙ্গালুরু তো ভারতের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে (আইএসএল) চ্যাম্পিয়ন না হতে পারায় এবার এএফসি কাপে খেলার সুযোগ পায়নি। ভারতীয় সাম্রাজ্য রক্ষার দায় নিয়ে এসেছিল চেন্নাইয়িন এফসি ও মিনার্ভা পাঞ্জাব। কিন্তু তাদের ছিটকে দিয়ে ভারতের রাজত্ব দখল করে নিয়েছে বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন ক্লাব আবাহনী লিমিটেড। সেটি সম্ভব হয়েছে গুয়াহাটিতে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন মিনার্ভা পাঞ্জাবকে হারিয়েই।

তবে মিনার্ভা নয়, গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লড়াইয়ে আবাহনীর সঙ্গে শেষ পর্যন্ত লড়াই হয়েছে ভারতের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের (আইএসএল) চ্যাম্পিয়ন চেন্নাইয়িন এফসির। আসামে শেষ ম্যাচে আবাহনীর প্রয়োজন ছিল জয়, শেষ মুহূর্তের গোলে জয় নিয়ে পরবর্তী রাউন্ডের টিকিট নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নরা। চ্যাম্পিয়ন আবাহনীর পয়েন্ট ১৩ আর আর ১১ পয়েন্ট নিয়ে রানার্সআপ হয়েছে চেন্নাইয়িন। ভারতের অন্য ক্লাব মিনার্ভা ৫ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় ও তলানিতে থাকা নেপালের মানাং মার্শিয়াংদির পয়েন্ট ২।

ভারতীয় দুই ক্লাবের বিপক্ষে আবাহনী ম্যাচ খেলেছে চারটি। সেখানেও দাপট আবাহনীর। ২ জয় ও ১ ড্রয়ের বিপরীতে হার মাত্র ১টি। এপ্রিলে ঢাকায় মিনার্ভার বিপক্ষে ২-২ গোলের সমতায় শুরু হয়েছিল দুই দেশের ক্লাব ফুটবলের দ্বৈরথ। পরের ম্যাচেই আহমেদাবাদে চেন্নাইয়িনের কাছে ১-০ গোলে হেরে যায় আবাহনী। এর পরে পেছনে ফিরে তাকাতে হয় আকাশি-নীলদের। ১৫ দিনের ব্যবধানেই ঢাকায় চেন্নাইকে ৩-২ গোলে হারিয়ে জবাব দেয় তারা। আর শেষ ম্যাচে আসামে মিনার্ভার বিপক্ষে ১-০ গোলের জয়ে দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করে নিজেদের ইতিহাসের দাঁড় প্রান্তে পৌঁছে যায় আবাহনী।

দ্বিতীয় রাউন্ড মানে আন্ত আঞ্চলিক সেমিফাইনাল। হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিতে আগস্ট-সেপ্টেম্বরে আবাহনী খেলবে আন্ত আঞ্চলিক সেমিফাইনালের দুইটি প্লে অফ। প্রতিপক্ষ কোন ক্লাব, তা এখনো চূড়ান্ত নয়। সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ হিসেবে থাকতে পারে ভিয়েতনাম, তুর্কমেনিস্তান বা উত্তর কোরিয়ার কোন একটি ক্লাব।