'আমাদের বল তো এমনিই স্লো!'

সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। ছবি: প্রথম আলো
সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। ছবি: প্রথম আলো
>

খুব নিষ্ঠুর শোনায়, তবুও রসিকতার সুরে নিজেদের বোলিংয়ের গতি নিয়ে বলতে আপত্তি নেই মাশরাফির। কিন্তু এতটুকু গতি দিয়েই তো বাংলাদেশের পেসাররা টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত প্রতিপক্ষের ৬০ উইকেটের ২৪টা পেয়েছে। ১০টা করে উইকেট পেয়েছেন মোস্তাফিজ-সাইফউদ্দিন। আজ মন্থর উইকেটে ভীষণ কার্যকর হতে পারে বাংলাদেশের পেস আক্রমণ।

আগেই জেনেছেন আজ এজবাস্টনে ব্যবহৃত উইকেটে খেলবে বাংলাদেশ-ভারত। যতই ইংলিশ কন্ডিশনে খেলা হোক, ব্যবহৃত উইকেট কিছুটা মন্থর থাকবেই। আর মন্থর উইকেট মানে বাংলাদেশের বোলারদের কিছুটা স্বস্তি।

আজও যদি উইকেট মন্থর থাকে, সেটি সবচেয়ে বেশি কাজে দেওয়ার কথা মোস্তাফিজুর রহমানের। তাঁর স্লোয়ার বলগুলো কাজে লাগাতে এমন উইকেট খুব দরকার। উইকেটে স্লোয়ার প্রসঙ্গ উঠতেই মাশরাফি বিন মুর্তজা অবশ্য কাল সংবাদ সম্মেলনে বলছিলেন, ‘আমাদের বল তো এমনই স্লো!’

মাশরাফির রসিকতায় সংবাদ সম্মেলন হাসিতে ফেটে পড়লেও এটাই নির্মম বাস্তবতা। বাংলাদেশ দলে নেই গতিময় কোনো বোলার, যিনি মিচেল স্টার্ক কিংবা জোফরা আর্চারের মতো বলে-কয়ে ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার গতিতে বোলিং করতে পারবেন। এটা ঠিক, রুবেল হোসেন কিংবা মোস্তাফিজুর রহমান কখনো ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার গতিতে বোলিং করেন, তবে সেটি নিয়মিত নয়। কখনো কখনো মোস্তাফিজের গতি আর কাটার দেখে কেউ কেউ রসিকতা করেন, ‘একজন অফ স্পিনার যিনি লম্বা রানআপে বোলিং করেন’! মাশরাফি কিংবা সাইফউদ্দিনের গতিও ১৩০-এর আশপাশে থাকে।

খুব নিষ্ঠুর শোনায়, তবুও রসিকতার সুরে নিজেদের বোলিং গতি নিয়ে বলতে আপত্তি নেই মাশরাফির। কিন্তু এতুটুকু গতি দিয়েই তো বাংলাদেশের পেসাররা টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত প্রতিপক্ষের ৬০ উইকেটের ২৪টা পেয়েছে। ১০টা করে উইকেট পেয়েছেন মোস্তাফিজ-সাইফউদ্দিন। আজ মন্থর উইকেটে ভীষণ কার্যকর হতে পারে বাংলাদেশের পেস আক্রমণ।

মাশরাফি অবশ্য আগ থেকে কিছু বলতে চান না। তিনি তাকিয়ে উইকেটের দিকে, ‘মোস্তাফিজ ভালো অবস্থায় আছে। স্লোয়ার যেটা বললেন, এটা নির্ভর করছে উইকেটের ওপর। উইকেটে যদি বল বাঁক নেয়, মোস্তাফিজ উপকৃত হতে পারে। আমি-সাইফউদ্দিন স্লোয়ার করি। ম্যাচের পরিস্থিতি যদি সফলভাবে সামলাতে পারি, তাহলে হয়তো সফল হতে পারি। আগের ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ইংল্যান্ডে তাদের শক্তি অনুযায়ী পরিকল্পনা করে বোলিং করেছি। আমরা নিশ্চয়ই তাদের মতো পরিকল্পনা নিয়ে নামতে পারি না, সেটা আমাদের খুব একটা উপকারও আসবে না।’

উইকেট যেমনই হোক, ভারতের শক্তিশালী টপ অর্ডারে ভাঙন ধরাতে হলে বোলিংয়ের শুরুটা ভালো হতেই হবে বাংলাদেশের, যেটি এ বিশ্বকাপে মাশরাফিরা খুব একটা পারেননি। আগের ৬ ম্যাচে শুধু দুটিতেই বাংলাদেশ প্রথম ১০ ওভারে উইকেট নিতে পেরেছে। একটি ম্যাচে শুরুতে উইকেট নিতে পেরেছেন নতুন বলের বোলার। আরেকটিতে উইকেট পেয়েছিলেন চতুর্থ বোলার হিসেবে আক্রমণে আসা সাকিব।

মাশরাফি মানছেন, একটি বোলিং আক্রমণের শুরুটা এমন বিবর্ণ হতে পারে না। তবে পেছনের ৬ ম্যাচে হয়নি বলে আজ হবে না, সেটি মনে করেন না বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘যেভাবে হয়েছে, অবশ্যই আদর্শ নয়। কালকের (আজ) ম্যাচে যে হবে না, সেটিও বলা কঠিন। যেটা হয়নি, হয়তো কালকের ম্যাচেও হতে পারে। ইতিবাচক চিন্তা করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যেটা আমি ও আমরা ইতিবাচকভাবেই ভাবছি। হয়নি বলেই হবে না, এমন নয়। ঠিক থাকতে হবে। মাঠে গিয়ে চেষ্টা করতে হবে। শুরুতে দ্রুত উইকেট নেওয়া ভারতের সঙ্গে খুব জরুরি। টপ অর্ডার তাড়াতাড়ি ভেঙে দিতে না পারলে ভারত বড় রান করতে পারে।’