ভারতকে খুব সতর্ক থাকতে হবে

সুনীল গাভাস্কার
সুনীল গাভাস্কার

যেমনটা ভেবেছিল সবাই, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতের ম্যাচটা শেষ পর্যন্তই গেছে। যদিও শেষ দিকে এসে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল ইংল্যান্ডের স্কোর আর পেরোতে পারছে না ভারত। এই ম্যাচটা, আর এর আগের কয়েকটি ম্যাচ যা বুঝিয়ে দিয়েছে, তা হলো, চোট শিখর ধাওয়ানকে ছিটকে ফেলায় ভারত এখন দুই ব্যাটসম্যানের দল হয়ে গেছে। রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি রান করতে না পারলে, ব্যাটিং অর্ডারের নিচের দিকের অন্য ব্যাটসম্যানদের সামর্থ্য নেই বড় ইনিংস খেলার—বিশেষ করে ইংল্যান্ড ম্যাচের মতো এত বড় স্কোর তাড়া করার সময়।

ভারত ম্যাচটা হেরেছে শামির শেষ তিন ওভারে, যেখানে ও ৪৫ রান দিয়ে বসেছে। ও পাঁচ উইকেট নিয়ে ঠিকই, কিন্তু ব্যাটসম্যানরা ছক্কার আশায় শট খেলতে গেলে তেমনটা (উইকেট পাওয়া) হতেই পারে। বেন স্টোকস যখন মেরে চলছিল, তখন লো ফুলটস আর লেংথ বল দেওয়াটা খুবই বাজে ছিল। দুঃখজনকভাবে অধিনায়ক বা সিনিয়র খেলোয়াড়দের কাছ থেকেও ও খুব একটা সাহায্য পায়নি, যাদের উচিত ছিল ওকে রাউন্ড দ্য উইকেটে বল করতে বলা, তাতে বাঁহাতির জন্য বলের কোণটা অন্য রকম হয়ে যেত। অবিশ্বাস্য বোলিং করতে থাকা বুমরা বৃত্তের ভেতরে থাকলেও কিছুটা সাহায্য পেত শামি, ও (বুমরা) গিয়ে বোলিং সঙ্গীকে সাহস জোগাতে পারত।

যেভাবে খেলেছে, নিজেদের বিশ্বকাপ ২০১৯ অভিযানটাকে আবার ঠিক পথে ফিরিয়েছে, সে জন্য ইংল্যান্ডকেও কৃতিত্ব দিতে হবে। এটা তো পরিষ্কার, জেসন রয় খেললে আর আগে ব্যাটিং করলে ইংল্যান্ড আরও ভালো দল হয়ে ওঠে।

মাত্র এক দিন বিরতির পরই এখন ভারতকে নামতে হচ্ছে বাংলাদেশের বিপক্ষে, যারা কিনা এই মুহূর্তে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি উন্নতি করা দল। এত কঠিন একটা ম্যাচের পর এই ম্যাচটাও ভারতের জন্য সহজ হবে না।

সাকিব এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টের সেরা অলরাউন্ডার, মুশফিকুর রহিমের পাশাপাশি সে-ও কী দুর্দান্ত ব্যাটিংই না করছে! তামিম হয়তো নিজেদের স্বাভাবিক ধরন মেনে দ্রুত রান তুলতে পারছে না। তবে ইংল্যান্ডে জেসন রয় যা করছে, সে-ও যদি সে রকম করে বাংলাদেশকে ঝোড়ো শুরু এনে দিতে পারে, তাহলে ব্যাটিং অর্ডারের নিচের দিকের ব্যাটসম্যানরা সেটি কাজে লাগিয়ে বড় স্কোর করবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩০০-র বেশি রানও ওরা যেভাবে তাড়া করেছে, অনেক বল হাতে রেখেও জিতেছে, সেটাই বলে যে এই দলের ব্যাটিং অর্ডার অনেক গভীর। বোলিংই ওদের যা ভাবনার বিষয়, তবে যদি রোহিত আর কোহলিকে দ্রুত ফেরাতে পারে, তাহলে ম্যাচটা ২০০৭ সালের মতো ‘মজার’ই হবে!

চলার পথে কলার খোসা যেমন, এই ম্যাচটাও ভারতের জন্য তেমনই। সেটাতে পিছলে যাতে না পড়ে, সে জন্য ভারতকে খুব সতর্ক থাকতে হবে।