বড় আক্ষেপে বিশ্বকাপ কাটল সৌম্যর

বিশ্বকাপটা মনমতো হলো না সৌম্যর। ছবি: এএফপি
বিশ্বকাপটা মনমতো হলো না সৌম্যর। ছবি: এএফপি

আয়ারল্যান্ড ত্রিদেশীয় সিরিজে যে দুর্দান্ত সৌম্য সরকারকে দেখা গিয়েছিল, তাঁর ছায়াকে দেখা গেল এ বিশ্বকাপে। আয়ারল্যান্ডে ফিফটির ‘হ্যাটট্রিক’ করা সৌম্য বিশ্বকাপে একটাও ফিফটি পাননি।

সৌম্য লম্বা ইনিংস খেলতে পারেননি। ২০১৯ বিশ্বকাপে তামিম ইকবালের সঙ্গে উদ্বোধনী জুটিটাও তাঁর ঠিক জমেনি। দুটি ম্যাচ বাদে কোনোটিতে বাংলাদেশ ভালো শুরু পায়নি। ওপেনিং জুটি যদি দ্রুত ভাঙে, স্বাভাবিকভাবে চাপ পড়ে মিডল অর্ডারে। তিনে নেমে সাকিব আল হাসান নিয়মিত ভালো খেলেছেন। মুশফিকুর রহিমের কাছেও কখনো কখনো মুগ্ধ করা ইনিংস দেখা গেছে। কিন্তু টপ অর্ডারে তৃতীয় আরেকজন ব্যাটসম্যানের কাছে নিয়মিত রান দরকার ছিল, যেটি করতে পারতেন সৌম্য।

৭ ম্যাচে ২০.৫৭ গড়ে ১৪৪ রান করা সৌম্য সেটি পারেননি। সর্বোচ্চ করেছেন ৪২। এ ব্যর্থতা তাঁকে ভীষণ পোড়াচ্ছে, ‘আমার ঘাটতি বলতে ত্রিদেশীয় সিরিজে টানা তিনটা ফিফটি করেছিলাম। তখন আক্ষেপ ছিল কেন সেঞ্চুরি করতে পারলাম না। আর এখানে আফসোস থেকে গেল ৩০-৪০ রান করলাম অথচ ফিফটি করতে পারলাম না। দুই জায়গায় দুই রকম আক্ষেপ। বিশ্বকাপের আক্ষেপটা অনেক বড়, এত বড় মঞ্চে ভালো কিছু করতে পারলে অনেক ভালো লাগত।’

সৌম্যর ব্যর্থ হওয়ার পেছনে কেউ কেউ তামিম ইকবালের ‘দায়’ দেখছেন। বেশির ভাগ ম্যাচ তামিম এত সতর্ক আর মন্থর গতিতে শুরু করেছেন, দলের রানের চাকা সচল রাখতে সৌম্যকে ঝুঁকি নিয়ে চালাতে হয়েছে। আর তাতে কখনো কখনো উইকেট উপহার দিয়ে আসতে হয়েছে তাঁকে। সৌম্য অবশ্য মনে করেন না তামিমের কারণে তাঁকে ঝুঁকি নিতে হয়েছে, ‘একেকজনের খেলার ধরন একেক রকম। আমি শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলার চেষ্টা করি। নিজের গেম প্ল্যানে থাকতে গিয়ে অনেক সময় ঝুঁকি নিতে হয়। যদি নিজের স্বাভাবিক খেলায় আরও নিয়ন্ত্রণ থাকে এবং বল নির্বাচন ভালো হয় তবে লম্বা ইনিংস খেলা সম্ভব।’

কাল এই লম্বা ইনিংস না খেলাটাই যেন ভুগিয়েছে। তবে সৌম্য বিশ্বাস করেন ভারতের দেওয়া ৩১৫ রানের লক্ষ্যটা অবশ্যই তাড়া করার মতো ছিল। কিন্তু সাকিব আল হাসানের সঙ্গে টপ কিংবা মিডল অর্ডারের কোনো ব্যাটসম্যান পারেননি একটা ঝলমলে ইনিংস খেলতে। বেশির ভাগই আউট হয়েছে থিতু হয়ে।

সৌম্যর চোখে ম্যাচের পার্থক্য হয়ে গেছে এখানেই, ‘অবশ্যই রানটা তাড়া করার মতোই ছিল। আমাদের পরিকল্পনাই ছিল জেতার। ভালো একটা শুরু এনে দিতে চেয়েছিলাম আমরা। তামিম ভাই আউট হওয়ার পর আমি আউট হলাম। তখন দুজনের একজন যদি লম্বা ইনিংস খেলতে পারতাম পরের ব্যাটসম্যানদের জন্য সহজ হতো। সাইফউদ্দিন শেষ দিকে যেভাবে খেলেছে ম্যাচ প্রায় আমাদের হাতেই ছিল। বলের চেয়ে রান কিছু বেশি ছিল। শুরুতে যদি রান করতাম আর হাতে উইকেট থাকত তাহলে হয়তো...।’

তাহলে হয়তো গল্পটা অন্য রকম হতো। বার্মিংহামেই সেমিফাইনালের আশা শেষ হতো না। ৫ তারিখের পরই বাংলাদেশ দলকে দেশে ফেরার বিমান ধরতে হতো না। এখন এ ‘ইশ-আহ-ওহ’ নিয়েই বাংলাদেশকে কাটাতে হবে অনেক দিবস, অনেক রজনী!