বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ দেখতে আসবেন তো ক্রিকেটের আইনপ্রণেতারা?

বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচে কি ফাঁকাই থাকবে লর্ডসের বিখ্যাত প্যাভিলিয়ন? ছবি: রয়টার্স
বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচে কি ফাঁকাই থাকবে লর্ডসের বিখ্যাত প্যাভিলিয়ন? ছবি: রয়টার্স
>আগামী শুক্রবার লর্ডসে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। কিন্তু সে ম্যাচে লর্ডসের বিখ্যাত প্যাভিলিয়নে এমসিসির সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন কি না, সেটি নিয়ে সন্দিহান খোদ এমসিসিই।

ক্রিকেট বিশ্বে মেরিলিবোর্ন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) আলাদা একটা সম্মান আছে। ক্রিকেট খেলার আইন প্রণয়ন, আইসিসির পরামর্শক—এসব পরিচয় ছাড়াও অন্য পরিচয়ও আছে এমসিসির। ক্রিকেটের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে যে এমসিসির চেয়ে ভালোভাবে আর কেউ ধারণ করেনি! কিন্তু সেই এমসিসির মান এবার ক্ষুণ্ন হওয়ার পথে। পুরো গ্যালারিতে তিল ধারণের জায়গা নেই, অথচ সদস্যদের জন্য নির্ধারিত প্যাভিলিয়ন প্রায় অর্ধেক ফাঁকা পড়ে থাকলে এমসিসির মান থাকেই–বা কীভাবে বলুন!

ক্রিকেটের নিয়মিত ভক্ত হয়ে থাকলে লর্ডসের বিখ্যাত প্যাভিলিয়ন সম্পর্কে আপনি নিশ্চয়ই জানেন। ব্যালকনির ঠিক পাশেই, অর্থাৎ ব্যালকনি থেকে বের হয়ে যে পথ দিয়ে ক্রিকেটারেরা মাঠে ঢোকেন, সেটির পাশেই লর্ডসের প্যাভিলিয়ন। এ প্যাভিলিয়নে সাধারণ দর্শকদের প্রবেশাধিকার নেই। কেবল এমসিসির সদস্যরাই এখানে বসে ম্যাচ দেখার সুযোগ পান। লর্ডসে ম্যাচ হলে প্যাভিলিয়নে সব সময়ই সরব উপস্থিতি থাকে এমসিসির সদস্যদের।

কিন্তু ব্যতিক্রমী দৃশ্য দেখা যায় ২০১৭ সালের নারী বিশ্বকাপের ইংল্যান্ড বনাম ভারত ফাইনাল ম্যাচে। পুরো গ্যালারি ভরা, অথচ প্যাভিলিয়ন ভরেনি অর্ধেকও! সাধারণ দর্শকেরা কষ্ট করে মাঠে আসছেন, কিন্তু এমসিসির সদস্যরাই মাঠে অনুপস্থিত, বিষয়টা এমসিসির বৈশ্বিক ভাবমূর্তির জন্য মোটেও সুখকর ছিল না। এবার বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তির আশঙ্কায় আছে এমসিসি কর্তৃপক্ষ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ জানাচ্ছে, এশিয়ার দুই দলের এ ম্যাচে সদস্যদের জন্য নির্ধারিত টিকিটের অর্ধেকই নাকি এখনো বিক্রি হয়নি!

আরও একবার যেন বিব্রতকর পরিস্থিতির সামনে পড়তে না হয়, সে জন্য আগেভাগেই টনক নড়েছে এমসিসির। যাঁরা এখনো টিকিট কেনেননি, তাঁদের প্রত্যেককে মেইল করেছে এমসিসি কর্তৃপক্ষ। সদস্যদের উদ্দেশে করে একটি কলামও লিখেছেন এমসিসির সেক্রেটারি ও প্রধান নির্বাহী গাই ল্যাভেন্ডার। ল্যাভেন্ডার লিখেছেন, ‘সদস্যদের হয়তো ২০১৭ সালের নারী বিশ্বকাপের ফাইনালের কথা মনে আছে। মাঠের বাকি অংশের দর্শকসংখ্যা ও প্যাভিলিয়নে উপস্থিত সদস্যদের সংখ্যা নিয়ে অপ্রীতিকর তুলনার মুখে পড়তে হয়েছিল সেবার এমসিসিকে। এ ঘটনা এমসিসির বৈশ্বিক ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর। একই দৃশ্য যেন আগামী শুক্রবারের ম্যাচেও না হয়, সেটি নিশ্চিত করতে এমসিসি বদ্ধপরিকর।’

কিন্তু তাও যদি সদস্যরা মাঠে না আসেন? সে ক্ষেত্রে আগেভাগেই বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে রেখেছে এমসিসি। টিভি ক্যামেরায় যেন ফাঁকা প্যাভিলিয়ন না দেখা যায়, সে কারণে ২৫০ জন স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীকে বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ মাঠে বসে দেখার আমন্ত্রণ জানিয়েছে এমসিসি কর্তৃপক্ষ। এই প্রথমবারের মতো সদস্য ছাড়া অন্য কেউ প্যাভিলিয়নে বসে খেলা উপভোগের সুযোগ পাচ্ছে।

আজ ডারহামে ইংল্যান্ড যদি নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে যায়, তাহলে শুক্রবারের বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ হয়ে উঠবে মহাগুরুত্বপূর্ণ। এমন একটা ম্যাচ দেখতে কি মাঠে আসবেন না এমসিসির সদস্যরা?