পাকিস্তানকে 'অসম্ভব' লক্ষ্যে ফেলে সেমিতে ইংল্যান্ড

নিউজিল্যান্ড ব্যাটসম্যানদের লড়াইয়ের তেমন সুযোগই দেননি ইংলিশ বোলাররা। ছবি: এএফপি
নিউজিল্যান্ড ব্যাটসম্যানদের লড়াইয়ের তেমন সুযোগই দেননি ইংলিশ বোলাররা। ছবি: এএফপি
>চেস্টার লি স্ট্রিটে নিউজিল্যান্ডকে ১১৯ রানে হারিয়ে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠল ইংল্যান্ড

চেস্টার লি স্ট্রিটে বেশ ভালোসংখ্যক পাকিস্তানি ক্রিকেটপ্রেমীকে দেখা গেছে। নিউজিল্যান্ডের জয় দেখার প্রার্থনায় ছিলেন তাঁরা। আর ইংল্যান্ডের হার। তাতে পাকিস্তানের সেমিফাইনাল খেলার আশা উসকে উঠত। তখন গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে হারাতে পারলেই সেমির টিকিট পেত পাকিস্তান। কিন্তু ইংলিশ বোলারদের তোপে পাকিস্তানি ক্রিকেটপ্রেমীদের আশাহত হতে হলো। নিউজিল্যান্ডকে ১১৯ রানে হারিয়ে তৃতীয় দল হিসেবে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠেছে ইংল্যান্ড। ৩০ বল হাতে রেখেই ১৮৬ রানে গুটিয়ে গেছে নিউজিল্যান্ড।

গ্রুপ পর্বে নিজেদের ৯ ম্যাচ শেষে ১২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয় দল হিসেবে সেমিতে উঠল এউইন মরগানের দল। তাদের সমানসংখ্যক ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে চারে নিউজিল্যান্ড। ধরে নেওয়া যাক, শুক্রবার বাংলাদেশকে হারিয়ে দিল পাকিস্তান। তখন ৯ ম্যাচ শেষে পাকিস্তানের সংগ্রহ দাঁড়াবে ১১ পয়েন্ট। পয়েন্ট সমান হওয়ায় তখন দেখা হবে গ্রুপ পর্বে দুই দলের জয়সংখ্যা—যেখানেও সমান ৫টি করে জয় নিয়ে সমতায় থাকবে পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড।

এরপর সামনে চলে আসবে দুই দলের রানরেট, যার ওপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হবে চতুর্থ দল হিসেবে সেমিফাইনালে কে যাবে। আর এখানেই বেশ এগিয়ে নিউজিল্যান্ড। আজ হারের পরও কিউইদের রানরেট ‍+০.১৭৫। বর্তমানে (৮ ম্যাচে ৯ পয়েন্ট) টেবিলের চারে থাকা পাকিস্তানের রানরেট -০.৭৯২। রানরেটের এ ঘাটতি পুষিয়ে সেমিফাইনালে ওঠা গাণিতিকভাবে সম্ভব হলেও বাস্তবে প্রায় অসম্ভব। একটু উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দেওয়া যাক বিষয়টা। বাংলাদেশের বিপক্ষে পাকিস্তান আগে ব্যাট করে যদি ৩৫০ রান করে, তাহলে তাদের ম্যাচ জিততে হবে ৩১১ রানের ব্যবধানে। ৪০০ করলে জিততে হবে ৩১৬ রানের ব্যবধানে, আর ৪৫০ করলে বাংলাদেশকে হারাতে হবে অন্তত ৩২১ রানের ব্যবধানে! কাজটা যে কতটা অসম্ভব, সেটি বুঝাতে সহায়ক হতে পারে আরেকটি তথ্য। ওয়ানডে ইতিহাসেই ২৯০ রানের বেশি ব্যবধানে জেতেনি কোনো দল! 

জয়ের জন্য নিউজিল্যান্ডকে ৩০৬ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল ইংল্যান্ড। ১৪ রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারিয়ে বিপদে পড়েছিল কিউইরা। এর মধ্যে হেনরি নিকোলসকে প্রথম ওভারেই তুলে নিয়েছেন ক্রিস ওকস। ষষ্ঠ ওভারে জফরা আর্চারের বুলেটের বেগে করা ডেলিভারি সামলাতে না পেরে উইকেটের পেছনে জস বাটলারের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হন মার্টিন গাপটিল। অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন যথারীতি স্রোতের বিপরীতে লড়াই শুরু করেছিলেন। ১৬তম ওভারে দলীয় ৬১ রানে উইলিয়ামসন রানআউট হতেই গ্যালারির ইংলিশ দর্শকদের হাসিমুখটা আরও চওড়া হয়ে উঠেছে। সেমির পথে সবচেয়ে কঠিন কাঁটা যে উপড়ে ফেলা গেল!

উইলিয়ামসন আউট হওয়ার পর কিউইদের ইনিংসে ওভারপ্রতি গড় রানরেট কখনোই ৫ ছুঁতে পারেনি। এ ক্ষেত্রে ইংলিশ পেসারদের ভালো বোলিংয়ের চেয়ে কিউই ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতাই বেশি করে চোখে বিঁধেছে। গোটা ইনিংসে পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের জুটি মাত্র একটি—পঞ্চম উইকেটে জিমি নিশাম ও টম লাথামের। ৫৭ রান করা লাথাম কিউইদের সর্বোচ্চ স্কোরার। অথচ এ ম্যাচটা জিতলেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত হতো নিউজিল্যান্ডের। এমন ম্যাচে তিন শর আশপাশের রান তাড়া করতে নেমে দরকার ছিল অভিজ্ঞতার। রস টেলর (২৮), গাপটিল (৮), নিকোলাস (০), নিশামরা (১৯) তা দেখাতে পারেননি।

ইংল্যান্ডের হয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন পেসার মার্ক উড। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন ওকস, আর্চার, প্লাঙ্কেট, রশিদ ও স্টোকস।