মেসি-সিলভাদের খেলা দেখতে গিয়ে শিখল বাংলাদেশের চার কিশোর

ব্রাজিল সমর্থকদের সঙ্গে বাংলাদেশের চার কিশোর ফুটবলার, কোচ ও কর্মকর্তা। সংগৃহীত ছবি
ব্রাজিল সমর্থকদের সঙ্গে বাংলাদেশের চার কিশোর ফুটবলার, কোচ ও কর্মকর্তা। সংগৃহীত ছবি
>বাংলাদেশ সময় কাল সকালে কোপা আমেরিকার ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে নেমেছিল ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলের দ্বৈরথ দেখতে মাঠে উপস্থিত ছিল বাংলাদেশের চার কিশোর ফুটবলার

‘জীবনের সেরা মুহূর্ত। আমি গিয়েছি আর ব্রাজিল জিতবে না, তা কীভাবে ভাবেন!’ গ্যালারিতে বসে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ম্যাচ দেখার কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে এভাবেই নিজের আবেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের কিশোর ফুটবলার ওমর ফারুক মিঠু। মিঠু ব্রাজিলের সমর্থক আর তার দলও পেয়েছে জয়। আর সবকিছু ছাপিয়ে বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম সেরা আবেদনময়ী দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা দ্বৈরথ গ্যালারিতে বসে দেখার আনন্দ তার লেখাতেই ফুটে উঠেছে।

এস্তাদিও পিন্টো স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে কাল শুধু মিঠুই নয়, তাঁর সঙ্গে ছিল বাংলাদেশের আরও তিন কিশোর ফুটবলার লতিফুর রহমান নাহিদ, জগেন লাকরা ও নাজমুল আকন্দ।। কয়েক দিন আগেই তারা অনুশীলনের উদ্দেশে এক মাসের জন্য ব্রাজিল গিয়েছেন। প্রথম দুজন অনূর্ধ্ব-১৫ এবং বাকি দুজন অনূর্ধ্ব-১৭ বিভাগের ফুটবলার। তারা অনুশীলন করছে সোসিয়াদে স্পোর্তিভা ডো গামা ক্লাবের অনূর্ধ্ব-২০ দলের সঙ্গে। স্টেডিয়ামে নিয়ে গিয়ে তাদের খেলা দেখার ব্যবস্থা করেছিল গামা ক্লাবই।

কোনো আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ নয়, একেবারে চোখের সামনে কোপা আমেরিকা ফাইনালে ওঠার লড়াই। চির প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলের লড়াইয়ে ২-০ গোলের জয়ে শেষ হাসি ব্রাজিলের। একে তো প্রিয় দল ব্রাজিলের জয়, তার ওপর হাত ছোঁয়া দূরত্বে বসে মেসি-কুতিনহোদের খেলা দেখার আনন্দ। খেলা শেষ হওয়ার ৮ ঘণ্টা পরেও মিঠুর কণ্ঠে পাওয়া গেল খেলা দেখার উচ্ছ্বাস, ‘আমার জীবনের সেরা মুহূর্ত। খুব দারুণ খেলা দেখেছি। মাঠের একেবারে কাছের গ্যালারিতে বসে খেলা দেখার আনন্দই অন্যরকম। খেলোয়াড়েরা জোরে কথা বললে শুনতে পাচ্ছিলাম।’

মূলত ফুটবল শিখতে তাদের ব্রাজিলে যাওয়া। কিন্তু রথ দেখতে গিয়ে কলা বেচার সুযোগ পেয়ে গিয়েছেন বাংলাদেশের তরুণ ফুটবলাররা। তাই শুধু দর্শকের চোখে খেলা দেখেননি। সুযোগ যখন পাওয়া গিয়েছে, দেখার আনন্দের সঙ্গে শেখার চেষ্টাও করেছেন সেন্টারব্যাক লতিফুর রহমান নাহিদ। ব্রাজিলের অভিজ্ঞ সেন্টারব্যাক থিয়াগো সিলভা তাঁর প্রিয় খেলোয়াড়। চোখের সামনে যখন সিলভা দুর্দান্ত ট্যাকল করে আর্জেন্টিনার আক্রমণ থামিয়ে দিচ্ছেন, নাহিদের কাছে সেটাই শেখার সুযোগ, ‘আর্জেন্টিনার ফরোয়ার্ড লাইন তেমন ভালো খেলতে পারেনি। এ জন্য ব্রাজিল রক্ষণভাগের কৃতিত্ব আছে। আবার ব্রাজিলের একটি গোল আর্জেন্টিনার ডিফেন্ডারদের ভুলের জন্য হয়েছে। আমার প্রিয় খেলোয়াড় থিয়াগো সিলভা। কাছ থেকে দেখলাম মাঠে সে কীভাবে মুভ করে। টিভিতে তো এত কিছু দেখা যায় না।’

মিঠু-নাহিদদের গামা ক্লাবটি রাজধানী ব্রাসিলিয়ার পার্শ্ববর্তী জেলা ফেডারেল ডিস্ট্রিক্টে অবস্থিত। সেখানকার স্থানীয় লিগ খেলে থাকে তারা। ক্লাবটির নিজস্ব আবাসিক ব্যবস্থায় নয়, বাংলাদেশের ফুটবলারদের হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখান থেকে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা দ্বৈরথ দেখতে সড়ক পথে ব্যয় করতে হয়েছে ৮ ঘণ্টা সময়।