হতাশার মাঝে মোস্তাফিজ-হাসি

বিশ্বকাপে টানা দুই ম্যাচে ৫ উইকেট মোস্তাফিজুর রহমানের। ছবি: রয়টার্স
বিশ্বকাপে টানা দুই ম্যাচে ৫ উইকেট মোস্তাফিজুর রহমানের। ছবি: রয়টার্স
>মোস্তাফিজুর রহমান দুর্দান্ত বোলিং করেছেন নিজের শেষ দুই ম্যাচে। ২০ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। দল সেমিফাইনালে না উঠতে পারার হতাশার মধ্যে মোস্তাফিজকে আনন্দ দিতে পারে ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স

সেমিফাইনালে উঠতে পারেনি বাংলাদেশ, ভীষণ দুঃখবোধ কাজ করছে মনে। তবে এ দুঃখের মধ্যে যেটি ভেবে ভালো লাগছে তাঁর, কাল রাতে দেশে ফিরবেন। আয়ারল্যান্ড সফর থেকে বিশ্বকাপ—১ মে থেকে ৫ জুলাই। দুই মাসের বেশি সময় দেশের বাইরে। লম্বা সময় পর কাছের মানুষদের কাছে ফেরাটা সব সময়ই আনন্দের। আনন্দ হচ্ছে মোস্তাফিজুর রহমানেরও।

মোস্তাফিজের আনন্দ আরেকটু বাড়িয়ে দিল ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে তাঁর পারফরম্যান্স। দল সেমিফাইনালে না গেলেও মোস্তাফিজ অন্তত হাসিমুখে বলতে পারবেন, ‘আমার পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই।’ টানা দুই ম্যাচে যে ১০ উইকেট নিলেন।

টানা দুই ম্যাচে ৫ উইকেট করে নিয়ে রেকর্ডের কিছু অধ্যায়ে নতুন করে নাম লিখিয়েছেন মোস্তাফিজ। আইসিসির কোনো টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি, বিশ্বকাপে দ্বিতীয় বোলার হিসেবে টানা দুই ম্যাচে ৫টি করে উইকেট, ওয়ানডেতে বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে দ্রুততম ১০০ উইকেট। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ—গত ফেব্রুয়ারিতে বদলে ফেলা নিয়মটা যদি কার্যকর হয়ে থাকে, প্রথমবারের মতো লর্ডসে খেলতে নামা মোস্তাফিজ ৫ উইকেট নিয়ে অনার্স বোর্ডেও নাম তুলে ফেলেছেন। আইসিসি তাই আজ ইনিংস-বিরতিতে ফেসবুকে লিখেছে, ‘কী বিশ্বকাপটাই না কাটল মোস্তাফিজের। কী দুর্দান্ত প্রতিভা!’

তিনি বাংলাদেশ দলের প্রধান উইকেটশিকারি বোলার। বিশ্বকাপে ২-৩ উইকেট নিয়মিত পেয়েছেনও। আবির্ভাবেই যেভাবে আলোড়ন তুলেছিলেন, চারদিকে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁর নামের পাশে ২-৩ উইকেট দেখে সন্তুষ্ট হওয়া কঠিন। ৭ ম্যাচে ১০ উইকেট পেলেও এজবাস্টনে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের আগ পর্যন্ত মোস্তাফিজ নিজেও খুশি ছিলেন না ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স নিয়ে। তাঁর কথায় বোঝা যাচ্ছিল, ইনিংসে ৫ উইকেট পেতে তিনি উন্মুখ।

এজবাস্টনে ৫ উইকেট তিনি পেলেন ভারতের বিপক্ষে। কিন্তু দল হারল। শেষ হয়ে গেল সেমিফাইনালের আশা। দলীয় ব্যর্থতায় মোস্তাফিজের মনটা খারাপ হলেও ৫ উইকেট প্রাপ্তি তাঁকে বেশ তৃপ্ত করেছিল। যেটা চাচ্ছিলেন, সেটা যে করতে পেরেছেন। টুর্নামেন্টের মাঝে একদিন বলছিলেন, ‘এত বড় মঞ্চে সবারই একটা লক্ষ্য থাকে যে আমি এটা করতে চাই, ওটা করতে চাই। আমারও আছে। কিন্তু কেন যেন লক্ষ্যটা পূরণ হচ্ছে না। অন্য সময়ের তুলনায় অনেক বেশি কষ্ট করছি। মন থেকে চাচ্ছি। কিন্তু কোথায় যেন ঘাটতি থেকে যাচ্ছে।’ প্রত্যাশা অনুযায়ী বোলিং না করতে পারাটা তাঁকে ভীষণ পোড়াচ্ছিল।

সেই হতাশা থেকে বেরিয়ে এসেছেন। নিজেদের শেষ ২ ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়ে মোস্তাফিজের মুখে হাসি ফুটেছে। কিন্তু বাংলাদেশ বিশ্বকাপটা যে শেষ হয়ে গেছে সেমিফাইনালে না ওঠার হতাশা নিয়ে। মোস্তাফিজের ব্যক্তিগত হরিষ তাই ঢাকা পড়ছে দলীয় ব্যর্থতার বিষাদে।