মোস্তাফিজ ৫০ ভাগ খুশি

দল ভালো করতে না পারলেও বিশ্বকাপটা ভালোই কেটেছে মোস্তাফিজের।  ছবি: প্রথম আলো
দল ভালো করতে না পারলেও বিশ্বকাপটা ভালোই কেটেছে মোস্তাফিজের। ছবি: প্রথম আলো
মোস্তাফিজ ৮ ম্যাচে পেয়েছেন ২০ উইকেট। এর মধ্যে শেষ দুই ম্যাচে পেয়েছেন ১০ উইকেট। তবুও নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে খুশি হতে পারছেন না বাঁহাতি পেসার


ব্যাটিং যতটা ভালো হয়েছে, বোলিং সেটির কাছাকাছি হলেও হয়তো টুর্নামেন্ট সাত বা আট নম্বর দল হিসেবে শেষ করতে হতো না বাংলাদেশকে। বোলিং খুব একটা ভালো হয়নি, তবুও এর মধ্যে একজন ২০ উইকেট নিয়েছেন, এখনো পর্যন্ত টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেরা উইকেটশিকারি হিসেবে তাঁর নামটা আছে—মোস্তাফিজুর রহমান

টানা দুই ম্যাচে ৫ উইকেট পেয়েছেন, প্রথম খেলতে নেমেই লর্ডসের অনার্স বোর্ডে নাম লিখিয়েছেন। হতাশার বোলিংয়ে মোস্তাফিজ যা একটু খুশির উপলক্ষ এনে দিয়েছেন। তবুও তিনি নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে খুশি নন। সংবাদমাধ্যমের সামনে তিনি কথা বলেন কম। কিন্তু কাল লর্ডসের মিক্সড জোনে মোস্তাফিজ চমকে দিয়ে অনেক কথা বললেন! বাঁহাতি পেসারের সেই ‘অনেক কথা’ থাকল এখানে—


* বিশ্বকাপে নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে কতটা খুশি?

মোস্তাফিজ: ৫০ শতাংশ খুশি।


* আর কী হলে ১০০ শতাংশ খুশি হতেন?

মোস্তাফিজ: রানটা আরও কম দিতে পারলে ভালো হতো।


* পুরোনো বলে ভালো করছেন। নতুন বলে ভালো করতে কী করা দরকার বলে মনে করেন?

মোস্তাফিজ: নতুন বলে সুইং থাকলে ভালো। আমার বল অতটা সুইং করে না। মাঝেমধ্যে হয়, তবে সেভাবে না। অন্যরা যেভাবে ন্যাচারাল সুইং পায়, আমার সেভাবে হয় না। এটা নিয়ে কাজ করতে হবে, যেন ইনসুইংটা পাই।


* ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলেছেন। কিন্তু বিশ্বকাপ বলতে যেটি বোঝায়, সেটিই প্রথমবার খেলতে এলেন। এই বিশ্বকাপ থেকে কী শিক্ষাটা পেলেন? পরের বিশ্বকাপে আরও ওপরে যেতে বাংলাদেশের কী করণীয়?

মোস্তাফিজ: সব দিকেই উন্নতি করতে হবে। বোলিং,ব্যাটিং, ফিল্ডিং—তিন বিভাগেই উন্নতি করতে হবে।


* বাংলাদেশ সেমিফাইনালে যেতে পারেনি, কিন্তু আপনার ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স খারাপ বলার উপায় নেই। দলের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি (২০টি)। আপনি কি খুশি মনে দেশে ফিরতে পারছেন?

মোস্তাফিজ: দল সেমিফাইনালে গেলে অনেক ভালো লাগত। সেটি না যাওয়ায়…কী আর বলব!


* লর্ডসের অনার্স বোর্ডে নাম লেখা হয়েছে কি না দেখেছেন?

মোস্তাফিজ: এত দ্রুত নিশ্চয়ই হয় না। পরেরবার যখন আসব তখন হয়তো দেখব।


* বিশ্বকাপে টানা দুই ম্যাচে ৫ উইকেট পেলেন। কোন ৫ উইকেট বেশি মনে থাকবে?

মোস্তাফিজ: ৫ উইকেট তো সব সময়ই মনে থাকে। ওয়ানডেতে পাঁচবার ৫ উইকেট পেলাম। টি-টোয়েন্টিতেও একবার পেয়েছি। ৫ উইকেট সব সময়ই বিশেষ কিছু। বিশ্বকাপে টানা দুবার ৫ উইকেট পেলাম, এটা অবশ্যই ভালো লাগার মতো।


* বিশ্বকাপে ৫ উইকেট পেতে কোন ব্যাটিং লাইনআপ বেশি কঠিন মনে হয়েছে?

মোস্তাফিজ: ভারতের ব্যাটিং লাইনআপ। ওই ৫ উইকেট বেশি তৃপ্তি দিয়েছে। তবে কোনো উইকেট পেয়ে বেশি ভালো লেগেছে সেটি বলতে চাই না। সব উইকেটই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।


* স্লগ ওভারে আপনি সব সময়ই দুর্দান্ত। বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্টেও নিশ্চয়ই প্রমাণ করা গেছে, স্লগ ওভারে আপনি অন্যতম সেরা?

মোস্তাফিজ: সবাই বলছে স্লগ ওভারে ভালো করছি। তবে ব্যক্তিগতভাবে খুশি না। আরেকটু ভালো করা যেত। বৈচিত্র্য আরও বেশি থাকলে ভালো হতো। এখন কাটার করছি। ইয়র্কার ৫০%-৫০% হচ্ছে। ওটার অ্যাকুরেসি আরও ভালো হলে ডেথ ওভারে আরও ভালো করা যাবে।


* পুরোনো বলে ভালো করছেন। কিন্তু আরও ভালো করতে নতুন চ্যালেঞ্জটা কী?

মোস্তাফিজ: সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ভালো বোলিং করতে আমি মনে করি. আরও টি-টোয়েন্টি খেলা দরকার। শেষ ১০ ওভারে কেমন বোলিং করতে হবে এটা সবচেয়ে ভালো উপলব্ধি করা যায় টি-টোয়েন্টি খেললে।


* প্রথম ২০ ওভারে কীভাবে আরও সফল হওয়া যায়, সেটি নিয়ে ভাবনা কী? এবার বাংলাদেশ বোলিংয়ে শুরুটা ভালো করতে পারেননি?

মোস্তাফিজ: আমাকে যেখানে ব্যবহার করবে সেখানেই ভালো করার চেষ্টা করব।


* নিজেকে কোন ধরনের পেস বোলার হিসেবে দেখেন?

মোস্তাফিজ: অন্যদের মতো আমি হয়তো অত জোরে বল করতে পারি না। ঘণ্টায় গড়ে ১৩৫ কিলোমিটার গতিতে বল করতে পারি। এখন দু-একটা বৈচিত্র্য আছে। ভবিষ্যতে বোলিংয়ে বৈচিত্র্য যদি বাড়াতে পারি, আমার জন্য ভালো হবে।


* বিশ্বকাপে রান বেশি দেওয়া নিয়ে অতৃপ্তি আছে আপনার। রানটা কেন নিয়ন্ত্রণ করা গেল না?

মোস্তাফিজ: উইকেট একটা বড় কারণ। আমাদের দেশের মতো উইকেট তো এখানে না। কখনো কখনো বল একটু মুভ করেছে। বেশির ভাগ উইকেটে বল ঘোরেনি।