দলকে সমর্থন করে যান

বাংলাদেশের বিশ্বকাপটা ভালো-খারাপ মিলিয়ে কাটল। আমি প্রত্যাশার কথা বলব না। কারণ, একেকজনের প্রত্যাশা একেক রকম। অনেকে তো বাংলাদেশকে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নও বানিয়ে ফেলেছিল। তবে আমাদের যে সামর্থ্য, সেই অনুযায়ী ভালো করতে পারিনি। আমরা আরও ভালো করার সামর্থ্য রাখি। সব মিলিয়ে সেমিফাইনাল খেলতে পারলে খুব ভালো হতো।

ওপেনাররা যদি ভালো করত, আর সেই সঙ্গে যদি সাকিবের এই পারফরম্যান্স থাকত, তাহলে হয়তো অন্য রকম হতে পারত। আপনি যদি ম্যাচগুলোতে ফিরে তাকান, ওপেনিং জুটি যদি একটু বড় হতে পারত, তাহলে আরেকটু ভালো হতো দলের জন্য। তামিমের কাছ থেকে আমরা আরেকটু আশা করেছিলাম। সৌম্যও প্রায় পাঁচ বছর জাতীয় দলে খেলে ফেলেছে। ও এখন আর নতুন নয়। ওর সময় এসেছে এখন পারফর্ম করার।

মাশরাফিকে দেখলাম সংবাদ সম্মেলনে বলতে, এই বোলিং লাইনআপই নিয়েই যদি আমরা এশিয়ায় খেলি, তাহলে বাংলাদেশ ফেবারিট হয়ে টুর্নামেন্টে যাবে। আমি ওর সঙ্গে একমত। সাকিব-মিরাজরা আরও ভয়ংকর হয়ে উঠবে। এখানে স্পিনারদের এক রকম দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে, এশিয়ায় ভিন্ন দায়িত্ব পালন করবে। আমাদের পেসাররাও সাহায্য পাবে। এটাই স্বাভাবিক।

এবারের ক্রিকেট বিশ্বকাপে নতুন বলে উইকেট পাইনি। এখানে পিছিয়ে গেছি। এই কাজটা মাশরাফি করে আসছে ১৫-১৬ বছর ধরে। এবারই হলো না। একজনের ক্যারিয়ারে এমন সময় আসতেই পারে। আর কেউ কিন্তু ইচ্ছা করে খারাপ করতে চায় না। নতুন বলের সমাধানের জন্য রুবেলকে শুরু থেকেই ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যেত। আমরা কোনো কারণে সেটা করিনি।

ফিল্ডিং এবারের বিশ্বকাপে ভালো হয়নি। এই এক জায়গায় চাইলে আরও অনেক ভালো করতে পারি। আমরা ওয়েস্ট ইন্ডিজের ম্যাচে কী ফিল্ডিংটাই না করলাম, অন্যান্য ম্যাচে তার কাছাকাছিও যেতে পারিনি। তার মানে, আমরা পারি, কিন্তু সেটা নিয়মিত করতে পারি না। ওই যে বললাম, আমাদের সামর্থ্য আছে। কিন্তু সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারিনি। আর ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস, কথাই আছে। সেটা টের পেয়েছে বাংলাদেশ।

সামনে সব বিভাগ নিয়েই আরও কাজ করতে হবে। জাতীয় দলের ক্ষেত্রে সব বিভাগেই কাজ করতে হয়। এবার সবাই বলবে ব্যাটিং ভালো হয়েছে, তাই বলে কি ব্যাটিং নিয়ে কাজ করবে না? ওপেনিং, লোয়ার মিডল অর্ডার নিয়ে কাজ করার জায়গা আছে। বোলিংয়েও কাজ করার জায়গা আছে। সব বিভাগেই উন্নতির সুযোগ আছে। আর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিদিন উন্নতি করতে হয়।

আমি সমর্থকদের কাছে একটা বার্তা দিতে চাইব, আপনারা সব সময় আমাদের সমর্থন দিয়ে এসেছেন। আমি সবাইকে এটাই বলব, সব সময় এভাবেই সমর্থন করে যেতে, খারাপ সময় হোক আর ভালো সময় হোক। কোনো ক্রিকেটারই চায় না খারাপ খেলতে। এসব যদি ইতিবাচকভাবে দেখা যায়, ততই ভালো। আর আমাদের দল যেভাবে উন্নতি করছে, অন্য দেশের সঙ্গে যদি তুলনা করা হয়, তাহলে দেখা যাবে, আমরা অনেক এগিয়ে আছি। এত অল্প সময়ে কেউ এত দূর আসতে পারে না। সবাইকে এটাই বলব, সব সময় বাংলাদেশকে সমর্থন দিয়ে যাবেন।