নিজেদের সেরা প্রমাণের সুযোগ পেল ভারত

সুনীল গাভাস্কার
সুনীল গাভাস্কার

দক্ষিণ আফ্রিকা কি ভারতকে বড় সুবিধা করে দিয়েছে, গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে দুইয়ে ঠেলে দিয়ে? এজবাস্টনে এখন ক্রিকেটের সবচেয়ে পুরোনো ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া দ্বৈরথ দেখা যাবে, যে মাঠটি স্বাগতিক ইংল্যান্ডের দুর্গ হিসেবেই পরিচিত। ভারত ওই মাঠেই ইংল্যান্ডের কাছে হেরেছে, গ্রুপ পর্বে যেটি তাদের একমাত্র হার। দ্বিতীয় হয়ে গ্রুপ পর্ব শেষ করলে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার নয়, খেলতে হতো ভারতকে।

প্রতিটি বৈশ্বিক টুর্নামেন্টের বিভিন্ন দলের সমর্থকদের আলাদা আলাদা করে নিজেদের কিছু চাওয়া থাকে। এই যেমন ভারতের সমর্থকেরা পাকিস্তানকে হারাতে পারলেই খুশি, এমনকি এরপর আর শিরোপা না জিতলেও। দক্ষিণ আফ্রিকার সমর্থকেরা আবার চান তাঁদের দল অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে দিক। প্রোটিয়ারা এটা করতে পারায় দক্ষিণ আফ্রিকানরা দারুণ আনন্দিত। রাগবি বা যেকোনো খেলাতেই এই দুই দলের প্রতিদ্বন্দ্বিতা ভয়ংকর। তাই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয় দক্ষিণ আফ্রিকানদের হতাশার ক্ষতে প্রলেপের কাজ করবে।

যেটা হয়েছে, তাতে ভারত নিজেদের সত্যিকারের সেরা প্রমাণের একটা সুযোগ পেয়ে গেল। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের গ্রুপ পর্বের ম্যাচটি বৃষ্টিতে ভেসে গেছে। তাই এখন যদি তারা নিউজিল্যান্ডকে হারাতে পারে আর ফাইনালে হারাতে পারে ইংল্যান্ডকে, তাহলে প্রতিযোগিতার সব দলকেই হারানো হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে নিজেদের সত্যিকারের বিশ্বসেরা ভাবতে পারবে ভারত।

রোহিত শর্মা দারুণ ছন্দে রয়েছে। ৮ ম্যাচে ৫টি সেঞ্চুরি করা অসাধারণ এক ব্যাপার। সঙ্গে একটি ফিফটিও আছে তার। রোহিতের সেঞ্চুরিগুলো আগে ব্যাট করে যেমন এসেছে, তেমনি এসেছে রান তাড়া করতে গিয়েও। এটাই বলে দিচ্ছে সে কী রকম ছন্দেই না আছে। রাহুলের সেঞ্চুরি পাওয়াটাও খুব ভালো খবর। ওপেনাররা ভালো শুরু এনে দিতে পারলে অর্ধেক কাজ তো হয়েই যায়। শর্মার ধারাবাহিক ছিল বলে বিরাট কোহলিকে তেমন কিছু করতে হয়নি। কিন্তু সেরা খেলোয়াড়েরা তাদের সেরাটা শেষের জন্যই জমিয়ে রাখে।

সবকিছুর পরও ভারতের দুশ্চিন্তার নাম ব্যাটিং। শুরুর দিকে উইকেট না হারানোটা তাই গুরুত্বপূর্ণ। এখানকার যেকোনো মাঠের চেয়ে ওল্ড ট্রাফোর্ডে বল বেশি সুইং করে। এখানকার কন্ডিশনের সদ্ব্যবহার করতে চাইবে ট্রেন্ট বোল্ট। ওল্ড ট্রাফোর্ডের কন্ডিশন ভুবনেশ্বর, বুমরা ও শামিকেও সাহায্য করবে। তবে এই তিনজন একসঙ্গে খেলবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়। কিউইরা যেহেতু স্পিনের চেয়ে পেস ভালো খেলে, তাই চাহাল ও কুলদীপকে খেলানোটা ভালো হবে। উইলিয়ামসন আর টেলরই নিউজিল্যান্ডের মূল ভরসা। তারা দুজন দ্রুত আউট হয়ে গেলে বাকিরা তীব্র চাপে পড়ে যাবে।

মনে হতে পারে ভারত সহজতর প্রতিপক্ষ পেয়েছে। তবে বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে নিউজিল্যান্ড সব সময়ই তাদের সামর্থ্যের চেয়ে ভালো খেলে এসেছে। কিউইদের নিয়ে তাই ভারতকে সতর্ক থাকতে হবে।