সেই '৪৫ মিনিট'ই পোড়াচ্ছে কোহলিকে

টানা দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল থেকে ছিটকে গেল ভারত। ছবি: রয়টার্স
টানা দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল থেকে ছিটকে গেল ভারত। ছবি: রয়টার্স
>নিউজিল্যান্ডের দেওয়া ২৪০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভারত অলআউট হয়েছে ২২১ রানে। ম্যাচশেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এসে ৪৫ মিনিটের বাজে ক্রিকেটকেই এমন হারের নেপথ্য কারণ হিসেবে দেখাতে চাইলেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি।

স্বাগতিক ইংল্যান্ডের পাশাপাশি যে দলটিকে এবারের ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফেবারিটের তালিকায় একদম ওপরের সারিতে রাখা হয়েছিল, সেটি ভারত। ফেবারিটের মতো খেলেই সেমিফাইনালে উঠেছিল। কিন্তু ফাইনালে আর ওঠা হলো না। নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে গত বিশ্বকাপের মতো এবারও সেমিফাইনালেই শেষ হয়ে গেছে ভারতের বিশ্বকাপ-স্বপ্ন। ম্যাচ শেষে তাই হারের ব্যাখ্যা দিতে হয়েছে বিরাট কোহলিকে। ভারতীয় অধিনায়ক দোষ দিয়েছেন ‘৪৫ মিনিটের বাজে ক্রিকেট’কে।

ম্যাচের একপর্যায়ে পরিষ্কারভাবেই পিছিয়ে পড়েছিল ভারত। তবে শেষদিকে মহেন্দ্র সিং ধোনি ও রবীন্দ্র জাদেজার জুটিতে ঠিকই ঘুরে দাঁড়িয়েছিল তারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত লক্ষ্য থেকে ১৮ রান দূরেই থামতে হয়েছে ভারতকে। নিউজিল্যান্ডকে কম রানে আটকে রাখার পরেও এই হারটা যন্ত্রণাই দেবে ভারতীয়দের।

সে যন্ত্রণার কথাই ম্যাচ শেষে বললেন কোহলি। অকপটেই স্বীকার করে নিলেন ব্যর্থতা, ‘এত ভালো ক্রিকেট খেলেও মাত্র ৪৫ মিনিটের বাজে ক্রিকেটের জন্য টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেওয়াটা সত্যিই কষ্টকর। এমন হার মেনে নেওয়া কঠিন। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের এই জয় প্রাপ্য। তারা অনবরত আমাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করেছে। গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলোতে তারা আমাদের চেয়ে অনেক ক্ষুরধার ছিল।’

ম্যানচেস্টারের উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য কঠিন ছিল। দুই দলের ব্যাটিংয়েই সেটি বোঝা গেছে। কিন্তু কোহলি বলছেন, ২৪০ রানের লক্ষ্যটা তাড়া করার মতোই ছিল, ‘ম্যাচের প্রথমভাগে বল হাতে আমরা অসাধারণ ছিলাম। ফিল্ডিংটাও ভালো হয়েছে। আমরা ভেবেছিলাম নিউজিল্যান্ডকে কম রানেই আটকে দিয়েছি। এই লক্ষ্য যেকোনো উইকেটেই তাড়া করতে পারা উচিত। কিন্তু শুরুর আধ ঘণ্টায় তারা যেভাবে বোলিং করেছে, সেটিই ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দিয়েছে।’

রান তাড়া করতে নেমে মাত্র ৫ রানেই টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়েছে ভারত। ১০ ওভার শেষে স্কোর ছিল ৪ উইকেটে ২৪! বিভীষিকাময় এমন শুরুর পরে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি ভারত। তবে কোহলি নিজ দলের ব্যাটসম্যানদের দায় দেওয়ার চেয়ে প্রতিপক্ষ বোলারদের কৃতিত্ব টাকেই বড় করে দেখতে চাইলেন, ‘গতকালের পর আজও বল হাতে ভালো করেছি আমরা। আমাদের মনে হয়েছিল মোমেন্টাম আমাদের পক্ষেই ছিল। তবে নিউজিল্যান্ডের বোলারদের প্রাপ্য কৃতিত্বটুকু দিতেই হবে। নতুন বলে তারা যেভাবে বল করেছে, এক কথায় অসাধারণ। যে জায়গায় বল ফেলেছে, যেভাবে উইকেট থেকে সুইং আদায় করে নিয়েছে, পর্যাপ্ত স্কিল না থাকলে এটা সম্ভব না। ওই সময়ে ওদের বোলারদের খেলা আমাদের ব্যাটসম্যানদের জন্য খুব কঠিন হয়ে পড়েছিল।’

তবে ভারত হারলেও শেষ পর্যন্ত অসাধারণ লড়াই করেছেন রবীন্দ্র জাদেজা। ৯২ রানে ৬ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর ধোনির সঙ্গে মিলে ১০৫ বলে ১১৬ রানের জুটি গড়েছেন। সমান চারটি করে চার-ছয়ে ৫৯ বলে ৭৭ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন। জাদেজার এমন হাল ছেড়ে না দেওয়া মনোভাবে ম্যাচশেষে কোহলিও গর্বিত,‘জাদ্দু (জাদেজা) অসাধারণ একটি ম্যাচ কাটাল। একটি নয়, বরং দুটি দারুণ ম্যাচ খেলেছে সে। সে যেভাবে খেলেছে, সেটি ওর স্কিলেরই প্রমাণ দেয়। দলের জন্য কী করতে পারে সে, সেটিই দেখিয়ে দিয়েছে। এমএসের (ধোনি) সঙ্গে ভালো একটি জুটি গড়েছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এমএস শেষদিকে রান আউট হয়ে গেল। না হলে ম্যাচ যেকোনো দিকেই যেতে পারত।’