গোলের 'সেঞ্চুরি' করতে পারবে বার্সার নতুন ত্রয়ী?

একসঙ্গে জ্বলে উঠতে পারবেন মেসি-সুয়ারেজ-গ্রিজমান? ছবি: এএফপি ও টুইটার
একসঙ্গে জ্বলে উঠতে পারবেন মেসি-সুয়ারেজ-গ্রিজমান? ছবি: এএফপি ও টুইটার
>‘এমএসএন’ ত্রয়ী নিজেদের প্রথম দুই মৌসুমেই বার্সেলোনাকে এনে দিয়েছিল ১০০ এর বেশি গোল। গ্রিজমান আসায় বার্সায় এখন নতুন ত্রয়ী, ‘এমএসজি’। নতুন এই ত্রয়ী কি পারবে নতুন মৌসুমে বার্সাকে গোলের সেঞ্চুরি এনে দিতে?

২০১৪-১৫ মৌসুমের কথা এখনো স্মৃতিতে উজ্জ্বল থাকার কথা বার্সেলোনা সমর্থকদের। মেসি-সুয়ারেজ-নেইমার, বার্সা সমর্থকদের প্রিয় ‘এমএসএন’ত্রয়ী সেবারই প্রথম একসঙ্গে মাঠে নেমেছিলেন। প্রথম মৌসুমেই তিনজন সম্মিলিতভাবে করেছিলেন ১২২ গোল। বার্সেলোনাও জিতেছিল পরম আরাধ্য ট্রেবল।

পরের মৌসুমে ট্রেবল জেতা হয়নি বটে, কিন্তু ‘এমএসএন’ ত্রয়ী ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন নিজেদের। তিনজনে মিলে করেছিলেন ১৩১ গোল! নেইমারের বিদায়ের পর ভেঙেছে বিখ্যাত সেই ত্রয়ী, বার্সেলোনাতেও এরপর সেভাবে কোনো ত্রয়ী সৃষ্টি হয়নি। ফলে হয়নি গোলের সেঞ্চুরি পায়নি। কিন্তু এবার সে সম্ভাবনা ভালোভাবেই উঁকি দিচ্ছে।

অনেক নাটকের পর অবশেষে বার্সেলোনায় যোগ দিয়েছেন ফরাসি তারকা আঁতোয়ান গ্রিজমান। আসন্ন মৌসুমে তাই মেসি-সুয়ারেজ-গ্রিজমান ত্রয়ী ‘এমএসজি’কে মাঠে একসঙ্গে খেলতে দেখবেন বার্সেলোনা সমর্থকেরা। ‘এমএসএন’এর মতো সফল হতে পারবে কি না সেটি সময় বলবে, তবে পরিসংখ্যান আভাস দিচ্ছে, মানিয়ে নিতে পারলে ২০১৫-১৬ মৌসুমের পর আবারও গোলের সেঞ্চুরি দেখতে পারেন বার্সেলোনা সমর্থকেরা।

সুয়ারেজ লা লিগায় এসেছেন পাঁচ মৌসুম হয়ে গেছে। মেসি ও গ্রিজমান তো আছেন আরও আগে থেকেই। স্প্যানিশ গণমাধ্যম মার্কা তাই ২০১৪-১৫ মৌসুম থেকে হিসেব করে দেখিয়েছে, নিজেদের মধ্যে রসায়নটা জমিয়ে তুলতে পারলে বার্সেলোনার প্রতিপক্ষদের ঘুম হারাম হতে পারে আরও একবার।

২০১৪-১৫ মৌসুমে সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে মেসি করেছিলেন ৫৮ গোল, সুয়ারেজ ও গ্রিজমান দুজনেই করেছিলেন ২৫টি করে গোল। সব মিলিয়ে নিজেদের দলের হয়ে এই ত্রয়ী সেবার করেছিলেন ১০৮ গোল। ২০১৫-১৬ মৌসুমে তিনজনের মধ্যে এগিয়ে গেলেন সুয়ারেজ। উরুগুইয়ান স্ট্রাইকার করলেন ৫৯ গোল, মেসি ৪১ গোল ও গ্রিজমান করেছিলেন ৩২ গোল। সে মৌসুমে তিনজনের মোট গোল দাঁড়াল ১৩২ এ।

পরের দুই মৌসুমেও সেই ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছিল ‘এমএসজি’ ত্রয়ী। ২০১৬-১৭ মৌসুমে মেসি করলেন ৫৪ গোল, সুয়ারেজ ৩৭ গোল ও গ্রিজমান করলেন ২৬ গোল, মোট গোল ১১৭টি। ২০১৭-১৮ মৌসুমে মোট গোল কিছুটা কমে দাঁড়ায় ১০৫ এ। মেসির গোল ৪৫টি, সুয়ারেজ ও গ্রিজমানের গোল যথাক্রমে ৩১ ও ২৯টি করে।

অবশ্য গত মৌসুমে তিনজন মিলে ১০০ গোল পার করতে পারেননি। বার্সেলোনার জন্য হতাশাজনক মৌসুমে মেসি করেছেন ৫১ গোল, সুয়ারেজ করেছেন মেসির অর্ধেকেরও কম গোল, মাত্র ২৫টি। আর অ্যাটলেটিকোর হয়ে গ্রিজমান গত মৌসুমে করেছেন ২১ গোল। গত মৌসুমে তাই তিনজনের মোট গোল দাঁড়িয়েছিল ৯৭তে। গোলের সেঞ্চুরি না হলেও সেঞ্চুরির একদম কাছাকাছিই ছিল ‘এমএসজি’।

গোলের সেঞ্চুরি পাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে বার্সেলোনার টিম কম্বিনেশন। মেসি-সুয়ারেজ-গ্রিজমানকে একত্রে কোন ফরমেশনে খেলাবে বার্সা, সেটি নিয়ে সন্দিহান অনেক সমর্থকই। মেসি যে পজিশনে খেলেন, গ্রিজমান অনেকটা সে পজিশনেরই খেলোয়াড়। মেসির পজিশনের আরেক খেলোয়াড়কে দলে রেখে যে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাওয়া যায় না, সেটির চাক্ষুষ প্রমাণ তো পাওলো দিবালা ও ফিলিপে কুতিনহো। দিবালা ও মেসিকে একসঙ্গে খেলিয়ে এখনো সাফল্যের দেখা পায়নি আর্জেন্টিনা। বার্সেলোনাও পারেনি কুতিনহো-মেসির রসায়ন বের করে আনতে। মেসি-গ্রিজমানের জন্য সঠিক ফরমেশন বের করতে পারবে বার্সেলোনা?