'কোহলির ধমকে'র জবাব দিলেন রবি শাস্ত্রী?

সেমিফাইনালে ধোনিকে সাতে নামানোর ব্যাখ্যা দিয়েছেন রবি শাস্ত্রী। ছবি: রয়টার্স
সেমিফাইনালে ধোনিকে সাতে নামানোর ব্যাখ্যা দিয়েছেন রবি শাস্ত্রী। ছবি: রয়টার্স

মহেন্দ্র সিং ধোনি কেন সাতে? কেন চারে নয়? কেন একসঙ্গে ব্যাটিং করানো হলো ঋষভ পন্ত আর হার্দিক পান্ডিয়াকে? দলের বিপর্যয়ে ধোনিকে আরও আগে নামালে ভারতের ভাগ্যটা অন্য রকম হতে পারত কি? প্রশ্নগুলোর উত্তর এখনো খুঁজে ফিরছে ভারতীয় ক্রিকেট দল। ধোনি কেন সাতে—এমন প্রশ্ন নিয়ে সেমিফাইনালের দিনই নাকি বিরাট কোহলি হাজির হয়েছিলেন কোচ রবি শাস্ত্রীর কাছে। সেদিন ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, কোচকে রীতিমতো ধমকাচ্ছেন ভারতীয় অধিনায়ক!

তারপর থেকেই আলোচনা—ধোনি কেন সাতে? এটা কি শাস্ত্রীর একার সিদ্ধান্ত। রবি শাস্ত্রীর বক্তব্য অন্য রকম। ধোনিকে সাতে নামানোর কারণ হিসেবে বলেছেন, ‘এটা সম্পূর্ণ দলীয় সিদ্ধান্ত ছিল। সবাই এটা সমর্থন করেছে, এটা খুবই সহজ একটা সিদ্ধান্ত ছিল। ধোনি তখন ব্যাটিংয়ে নেমে আউট হয়ে গেলে আমাদের রান তাড়া করার সব সম্ভাবনা ওখানেই শেষ হয়ে যেত।’

ম্যাট হেনরি ও ট্রেন্ট বোল্টের তোপে পড়ে মাত্র ৫ রানেই টপ অর্ডারের সবচেয়ে বড় তিন ভরসা রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি ও লোকেশ রাহুলকে হারিয়েছিল ভারত। অনভিজ্ঞ মিডল অর্ডারকে সামলে দলকে জয়ের পথে রাখার জন্য ধোনির চেয়ে আদর্শ কেউ ছিলেন না ভারতীয় দলে। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে পাঁচ নম্বরে ধোনিকে না নামিয়ে দিনেশ কার্তিককে নামায় ভারত। আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি কার্তিক, ফিরেছেন মাত্র ৬ রান করে। এমনকি কার্তিক আউট হওয়ার পরেও ধোনিকে নামানো হয়নি, নামেন হার্দিক পান্ডিয়া।

ধোনির ফিনিশার সত্তার কারণেই তাঁকে এত পরে নামানো, এমনটাই বলছেন শাস্ত্রী, ‘ইনিংসের পরের দিকে ওর অভিজ্ঞতার দরকার ছিল আমাদের। সে সর্বকালের সেরা ফিনিশার। তার ফিনিশিং দক্ষতা ব্যবহার না করাটাই বরং অপরাধের কাতারে পড়ত। পুরো দলই এ সিদ্ধান্ত সম্পর্কে পরিষ্কারভাবে জানত।’

ধোনির আগে পন্ত-পান্ডিয়াদের নামানোর সিদ্ধান্ত অধিনায়ক কোহলিরও মনঃপূত হয়নি বলেই গুঞ্জন আছে। বাঁহাতি স্পিনার মিচেল স্যান্টনারকে অযথাই উড়িয়ে মারতে গিয়ে যখন আউট হলেন ঋষভ পন্ত, তখন আর নিজের ক্ষোভ সংবরণ করতে পারেননি কোহলি। পন্ত আউট হওয়ার পর পরই কোহলি ড্রেসিংরুমের ভেতর থেকে গজগজ করতে করতে বেরিয়ে আসেন। টিভি ক্যামেরা সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ধরে ফেলে। তাঁর মুখের ভঙ্গি আর কোচের সঙ্গে উত্তেজিতভাবে কথা বলা দেখে বোঝা গেছে, কোনো বিষয় নিয়ে সলাপরামর্শ করতে অন্তত যাননি। গিয়েছিলেন কোনো বিষয় নিয়ে নিজের ক্ষোভ জানাতে।

কোহলির ক্ষোভের উৎসটা কী, তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হয়েছিল, পন্ত উইকেটে থাকতেই পান্ডিয়াকে নামিয়ে দেওয়া নিয়েই ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন অধিনায়ক। দুজনই আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান। তরুণ, অভিজ্ঞতার ভাঁড়ার খালি। ২৪ রানে চতুর্থ উইকেটের পতনের পর পান্ডিয়ার বদলে ধোনিকে নামানো উচিত ছিল বলে মত দিয়েছেন সৌরভ গাঙ্গুলি, ভিভিএস লক্ষ্মণদের মতো বিশেষজ্ঞরা। সাতে নেমে আর ভারতকে জিতিয়ে আসতে পারেননি ধোনি, ১৮ রানে হেরে সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় নিতে হয়েছে ভারতকে।