ফাইনালে ছেলের হার চাইবেন বাবা!

ফাইনালের প্রস্তুতি নিচ্ছেন স্টোকস। ছবি: রয়টার্স
ফাইনালের প্রস্তুতি নিচ্ছেন স্টোকস। ছবি: রয়টার্স
>

বিশ্বকাপ ফাইনালে আজ ইংল্যান্ডকে শিরোপা জেতানোর লক্ষ্যে মাঠে নামবেন বেন স্টোকস। কিন্তু তাঁর বাবা জেরার্ড স্টোকস সমর্থন দেবেন নিউজিল্যান্ডকে

ইংল্যান্ডকে বিশ্বকাপ জেতানোর লক্ষ্যে আজ মাঠে নামছেন বেন স্টোকস। কিন্তু ইংলিশ অলরাউন্ডারের খুব কাছেরই একজন চাচ্ছেন, স্টোকসের ইচ্ছে যেন পূরণ না হয়। তিনি আর কেউ নন স্টোকসেরই বাবা জেরার্ড স্টোকস!

বেন স্টোকস বিশ্বকাপ জিতলে তাঁর বাবার চাওয়া পূরণ হবে না। জেরার্ড যে আজ তাঁর ছেলের প্রতিপক্ষ দলের সমর্থক। হ্যাঁ, ক্রিকেট বিশ্বকাপ ফাইনালে আজ নিউজিল্যান্ডকেই সমর্থন দিচ্ছেন স্টোকসের বাবা। তবে ছেলের অর্জন নিয়ে তিনি ‘অবিশ্বাস্যরকম গর্বিত।’ শুধু একটাই সমস্যা, আজ ছেলের পক্ষে সমর্থন দিতে পারছেন না। কারণ, স্টোকসের বাবা জেরার্ড নিউজিল্যান্ডের নাগরিক।

নিউজিল্যান্ড রাগবি জাতীয় দলের সাবেক খেলোয়াড় জেরার্ড। দেশটির হয়ে রাগবি টেস্টও খেলেছিলেন একটি। অবশ্য খেলোয়াড় হিসেবে যতটা, তার চেয়েও বেশি নাম কুড়িয়েছিলেন কোচ হিসেবে। নানা জায়গায় কোচিং করিয়ে ডাক পান ইংল্যান্ডের ওয়ার্কিংটন টাউন রাগবি লিগ ক্লাবের কোচ হতে। সে ডাকে সাড়া দিয়ে ইংল্যান্ডে পাড়ি জমান জেরার্ড, সঙ্গে পুরো পরিবার। ফলাফল হিসেবে নিউজিল্যান্ডের বেন স্টোকস হয়ে যান ইংল্যান্ডের। ১৬ বছর হলো ইংল্যান্ডে বসবাস করছেন স্টোকস। আর তাঁর বাবা-মা ২০১৩ সালে ফিরে গেছেন নিউজিল্যান্ডে।

বেন স্টোকসের জন্ম আর শৈশবের পুরোটাই কেটেছে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে। টুইটারে প্রোফাইল দেখলেই বোঝা যায় স্টোকসের বাবা নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলের পাঁড় ভক্ত। সেখানে জেরার্ড ঘোষণাই করেছেন, ‘প্রতিপক্ষ হিসেবে শুধু নিউজিল্যান্ড থাকলে আমার ছেলে যে দলেই খেলুক সমর্থন করি।’

বাবা-মায়ের সঙ্গে বেন স্টোকস। ছবি: টুইটার
বাবা-মায়ের সঙ্গে বেন স্টোকস। ছবি: টুইটার

ইংল্যান্ডের সঙ্গে নিউজিল্যান্ডের সময়ের পার্থক্য ১১ ঘণ্টার। সে কারণে নিউজিল্যান্ডে বসে ম্যাচটা রাতে দেখতে হবে জেরার্ডকে। পরিবার-প্রতিবেশীদের নিয়ে উৎসবের আমেজেই ম্যাচটা দেখার প্রস্তুতি নিচ্ছেন জেরার্ড। তাঁর ছেলের ক্যারিয়ারে ‘এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ’ বলে মনে করেন জেরার্ড। অথচ এমন ম্যাচেই তিনি ছেলের প্রতিপক্ষ দলের সমর্থক!

আজ ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের সমর্থক কি না, এ প্রশ্নের জবাবে জেরার্ড বলেন, ‘হ্যাঁ, সম্ভবত।’ তাঁর জীবনসঙ্গী ডেবোরার জবাব বেশ কূটনৈতিক, ‘যে দলই জিতুক, জয়ী তো আমরাই।’ নিউজিল্যান্ড জিতলেও যেমন তাঁদের ইচ্ছাপূরণ হচ্ছে তেমনি ইংল্যান্ড জিতলেও তো তাঁদের ছেলের হাতে শিরোপা উঠছে। স্টোকস নিজেও দুটি দেশের প্রতিচ্ছবি রেখেছেন তাঁর শরীরে। নিউজিল্যান্ডের আদিবাসী মাউরি ট্যাটু এঁকেছেন নিজের বাঁ হাতে। এটি তাঁর মায়ের পারিবারিক শেকড়ের প্রতি সম্মান জানিয়েই করেছেন। আর পিঠে রয়েছে ‘থ্রি লায়ন্স’দের ট্যাটু—পালক দেশ ইংল্যান্ডের প্রতি সম্মান জানিয়ে।

ইংল্যান্ডের প্রতি ছেলের আনুগত্য নিয়ে জেরার্ড বলেন, ‘বেনকে জিজ্ঞেস করলে সে বলবে জন্ম নিউজিল্যান্ডে কিন্তু আমি একজন ইংরেজ। গর্বিত ইংরেজ।’ বিশ্বকাপে এবার ইংল্যান্ডের হয়ে দারুণ খেলছেন স্টোকস। ১০ ম্যাচে ৩৮১ রানের পাশাপাশি বল হাতেও ৭ উইকেট নিয়েছেন এ অলরাউন্ডার। আজ দেখার পালা স্টোকস তাঁর বাবার পছন্দের দলকে হারাতে পারেন কি না!