ইংল্যান্ডের জন্য বড় সুযোগ

গৌরবের বড় সুযোগই এসেছে ইংলিশদের সামনে। ছবি: রয়টার্স
গৌরবের বড় সুযোগই এসেছে ইংলিশদের সামনে। ছবি: রয়টার্স

বিশ্বকাপ ফাইনালটা অন্য রকম হতে যাচ্ছে। নতুন চ্যাম্পিয়ন পেতে যাচ্ছে ক্রিকেট-বিশ্ব, সেটা ইংল্যান্ড হোক অথবা নিউজিল্যান্ড। দুটোই ক্রিকেট-বিশ্বের জন্য সুখবর। যে-ই দেশই জিতবে, সেই দেশেই ক্রিকেট আরও ছড়িয়ে পড়বে। দুই দেশেই ক্রিকেট প্রধান খেলা নয়। নিউজিল্যান্ড বা ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ জিতলে দুই দেশের ক্রিকেটেই ভিন্নমাত্রা যোগ হবে।

আমি দারুণ একটি ম্যাচ দেখার অপেক্ষায় আছি। নিউজিল্যান্ড সব সময়ই বিশ্বকাপে ভালো খেলে এসেছে। সবচেয়ে বেশি সেমিফাইনাল খেলেছে নিউজিল্যান্ড। পরপর দুবার ক্রিকেট বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলল। বিশ্বকাপের সবচেয়ে শৃঙ্খল দল বলা যায় নিউজিল্যান্ডকে। অন্যদিকে ইংল্যান্ড এত বছর ধরে খেলছে, কোনো শিরোপা জিততে পারল না। দীর্ঘদিন পর ফাইনালে উঠল। এবার ইংল্যান্ডের জন্য বড় সুযোগ। খেলাটা তাদের কন্ডিশনেই। পরিবেশ, দর্শক-সবই ইংলিশদের পক্ষে থাকবে।

ফাইনালে ওঠা দুটি দলই দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করে সফল হওয়া দল। ইংল্যান্ডের কথাই ধরুন, ২০১৫ বিশ্বকাপের পর কী আমূল পরিবর্তন হলো ইংল্যান্ড ক্রিকেটে। ওরা ওয়ানডে ক্রিকেটটা কীভাবে খেলবে, সেটা ঠিক করেছে। তারপর সেই অনুযায়ী ক্রিকেটার দলে নিয়েছে এবং এখন বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলছে। এত অল্প সময়ের মধ্যে এত বড় পরিবর্তন আনতে পারার পেছনে ওদের ক্রিকেট-কাঠামোর প্রভাব আছে। কাউন্টি থেকে অনেক ক্রিকেটার বের হয়। সহজেই ক্রিকেটার ‘পিক অ্যান্ড চুজ’ করতে পারে ওরা। তাই খুব দ্রুতই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারে।

নিউজিল্যান্ডও তা-ই। গত বিশ্বকাপের আগে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের হাওয়া বদল হতে থাকে। ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ছিলেন নিউজিল্যান্ডের বদলে যাওয়ার রূপকার। কৃতিত্ব তাঁকে দিতেই হয়। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটে যেই বাঁকবদলের দরকার ছিল, সেটা এসেছে তাঁর হাত ধরেই। গত বিশ্বকাপে তাঁর দল ফাইনাল খেলেছে। এবার কেন উইলিয়ামসন সেই সংস্কৃতি বজায় রেখেছে। এবারের বিশ্বকাপে খেলা বেশির ভাগ ক্রিকেটার গত বিশ্বকাপে খেলেছে। সে জন্য উইলিয়ামসনকে কৃতিত্ব দিতেই হবে। ওরা বিশ্বের যেকোনো দলের তুলনায় ভালো পরিকল্পনা করে। সেটা ওদের খেলাতেই বোঝা যায়।

ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা দারুণ ফর্মে আছে। বিশেষ করে দুই ওপেনার ওদের ব্যাটিং-সাফল্যে বড় ভূমিকা পালন করে এসেছে। নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনআপ রস টেলর ও কেন উইলিয়ামসনের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। আর দুই দলের বোলিং সমান শক্তিশালী। ইংল্যান্ডের জফরা আর্চার, মার্ক উডের মতোই গতির ঝড় তুলবে নিউজিল্যান্ডের লকি ফার্গুসন। ধারাবাহিকভাবে ভালো বোলিং করে আসছে সে। তবে লর্ডসের স্লোপ ট্রেন্ট বোল্টকে সাহায্য করতে পারে। বাঁহাতি পেসাররা সাধারণত লর্ডসে ভালো করে থাকে।

দুটি দলের মধ্যে মজার কিছু মিল আছে। নিউজিল্যান্ডের ব্রেন্ডন ম্যাককালামের ফর্মুলা মেনেই সফল হয়েছে এউইন মরগানের ইংল্যান্ড। এবার সেই দুই দলই একে অপরের মুখোমুখি। দুই দলই এখনো শিরোপার দেখা পায়নি। এখন শিরোপা কার ঘরে যায়, সেটাই দেখার বিষয়।