যে 'শত্রু' কাবু করে ফেলেছে বাংলাদেশ দলকে

শুক্রবার সন্ধ্যায় বোলিং করতে গিয়ে পড়ে যান, পরে শ্রীলঙ্কা সফরেই যেতে পারেননি মাশরাফি। ছবি: প্রথম আলো
শুক্রবার সন্ধ্যায় বোলিং করতে গিয়ে পড়ে যান, পরে শ্রীলঙ্কা সফরেই যেতে পারেননি মাশরাফি। ছবি: প্রথম আলো

খেলোয়াড়েরা চোটকে ‘শত্রু’ বলেই গণ্য করবেন! খেলা তো দূরের কথা, চোট অনেক সময় স্বাভাবিক জীবনধারাও ব্যাহত করে। এটি শত্রু নয়তো কী! বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতির যথেষ্ট সময় পাওয়ার পরও বাংলাদেশ শতভাগ ফিট দল পায়নি। চোট সঙ্গী করে অনেক ক্রিকেটার গেছেন বিশ্বকাপ খেলতে। অনেকে বাধ্য হয়েছেন চোট নিয়ে খেলতে। শ্রীলঙ্কা সফরের আগেও পিছু ছাড়েনি চোট নামের ‘শত্রু’। চোটই যেন বিপর্যস্ত করে তুলেছে বাংলাদেশ দলকে। বিসিবির চিকিৎসক দেবাশিস চৌধুরী জানালেন চোটের সবশেষ খবর—

মাশরাফির হ্যামস্ট্রিং
আয়ারল্যান্ড সিরিজে পাওয়া বাঁ পায়ের হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট পিছু ছাড়েনি বিশ্বকাপেও। বিশ্বকাপটা খেলেছেন এ চোট নিয়েই। আয়ারল্যান্ডের পর বিশ্বকাপে ৮ ম্যাচ, এরপর দেশে ফিরে অনুশীলনে বল করেছিলেন দুই দিন। দেশে ফিরে একটু ভালো অনুভব করছিলেন। দুদিন অনুশীলনও করেছেন। আর এতে চোটটা আরও পেয়ে বসল। শেষ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কায় যাওয়া হলো না নিয়মিত অধিনায়কের। কালই জানা গিয়েছিল মাঠে ফিরতেই তাঁর অন্তত চার সপ্তাহ লেগে যাবে। তবে আপাতত নিবিড় পর্যবেক্ষণে আছেন মাশরাফি। পরবর্তী করণীয় কী, সেটা জানা যাবে ৭২ ঘণ্টা পর। বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশিস চৌধুরী বলেছেন, ‘মাশরাফি এ সময়ে পুরোপুরি বিশ্রামে থাকবে। বরফ লাগাবে। ব্যান্ডেজ করে রাখবে। ৭২ ঘণ্টা পার হওয়ার পর ওকে আমরা দেখব।’

সাইফউদ্দিনের পিঠের চোট
চোটের কারণে শ্রীলঙ্কা সফরে যাওয়া হয়নি পেস বোলিং অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনেরও। পিঠের চোট কাল হয়ে দাঁড়াল এই তরুণ অলরাউন্ডারের। ২০১০ সাল থেকেই মেরুদণ্ডের এই চোটের সঙ্গে লড়াই করে খেলছেন সাইফ। বিশ্বকাপের সময় ব্যথা তীব্র আকার ধারণ করে। দুবার ব্যথানাশক ইনজেকশন দিয়ে খেলেছেন বিশ্বকাপে, এক ম্যাচে দলের বাইরেও ছিলেন একই কারণে।

সাইফের সমস্যাটা একটু বেশিই জটিল। সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার সুযোগ নেই বললেই চলে। তবে ব্যথা কমিয়ে রাখার তিনটি উপায় আছে। হয় বোলিং অ্যাকশন বদলাতে হবে, কারণ সমস্যাটা মূলত বোলিং অ্যাকশনের কারণেই। না হয় ইনজেকশন দিতে হবে। কিন্তু ইনজেকশন কত দিন ব্যথা কমিয়ে রাখবে, তার আবার নিশ্চয়তা নেই। তাই তৃতীয় উপায়ের নাম রেডিওফ্রিকোয়েন্সি অ্যাব্লেশন। এই চিকিৎসায় ক্ষতি কম, কিন্তু ব্যথামুক্ত সময়টা বাড়াবে। তবে বাংলাদেশে এই চিকিৎসা সম্ভব না। এই তিন ধরনের চিকিৎসার কথাই বিসিবিকে জানানো হয়েছে। তবে আপাতত সাইফকে তিন সপ্তাহের সম্পূর্ণ বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে পুনর্বাসন পরিকল্পনাও দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ সময়টায় রানিং ও বোলিং সম্পূর্ণ নিষেধ। বিসিবি চিকিৎসকের কথায়, ‘আপাতত তিন সপ্তাহ পূর্ণ বিশ্রাম নেবে সে। শুধু ওর পুনর্বাসনের ব্যায়াম চলবে। তিন সপ্তাহ পর ওকে আমরা দেখব।’

মাহমুদউল্লাহর কাঁধের চোট 

পুরোনো কাঁধের চোট নিয়ে বিশ্বকাপে খেলেছেন মাহমুদউল্লাহ। ইনজেকশন দিয়ে খেলেছেন টুর্নামেন্ট। একই চোট নিয়ে শ্রীলঙ্কা গেছেন মাহমুদউল্লাহ। চোটাঘাতমুক্ত নন বলেই দলের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কত্ব হয়তো নিতে চাননি। শ্রীলঙ্কায় চোট কোনোভাবে সামলে খেলবেন। তবে স্থায়ী সমাধানের জন্য অস্ত্রোপচার, দেশে ফিরেই মাহমুদউল্লাহর চোট ইস্যুতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানালেন দেবাশীষ, ‘দুটি পথ আছে। হয় ইনজেকশন দিতে হবে অথবা অস্ত্রোপচার করাতে হবে। অস্ত্রোপচারের পর মাঠে ফিরতে কত দিন লাগবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।’

নতুন করে রুবেলের চোট

চট্টগ্রামে আফগানিস্তান ‘এ’ দলের বিপক্ষে বোলিংয়ের সময় গোড়ালির চোটে পড়েছিলেন বাংলাদেশ ‘এ’ দলের ফাস্ট বোলার রুবেল হোসেন, শ্রীলঙ্কা সিরিজের স্কোয়াডেও আছেন তিনি। তবে স্বস্তির খবর দিয়েছেন বিসিবির চিকিৎসক, ‘ওর এমআরআই স্ক্যান করানো হয়েছে। সেখানে খারাপ কিছু ধরা পড়েনি।’