আফগানিস্তানে বাংলাদেশ গেলেও যাবেন না জেমি

বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের কোচ জেমি ডে। ফাইল ছবি
বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের কোচ জেমি ডে। ফাইল ছবি
>

১০ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ মিশন শুরু করবে বাংলাদেশ। ম্যাচটি আফগানিস্তানে অনুষ্ঠিত হলে দলের সঙ্গে যাবেন না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ দলের ইংলিশ কোচ জেমি ডে। 

বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে নিজেদের গ্রুপ দেখে বাংলাদেশ খুশি। কিন্তু এর মধ্যে আছে বড় উদ্বেগও। গ্রুপের অন্যতম দল আফগানিস্তানের বিপক্ষে ‘অ্যাওয়ে ম্যাচ’টা কোথায় হবে! বাংলাদেশকে কি আফগানিস্তানের কোনো শহরে গিয়ে ম্যাচটি খেলতে হবে? উত্তর খুঁজে বেড়াচ্ছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। গত বিশ্বকাপ বাছাইয়ে আফগানিস্তান নিজেদের ‘হোম’ বানিয়েছিল ইরানের রাজধানী তেহরান ও তাজিকিস্তানের দুশানবে। এবার তেমনটি হলে সেটি বাফুফের জন্য স্বস্তির ব্যাপার। কিন্তু এবার আফগানিস্তান যদি নিজেদের মাঠেই খেলার সিদ্ধান্ত নেয়, আর ফিফা যদি তাদের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করে, তাহলে বাংলাদেশকে সেখানেই খেলতে হবে। যদিও বাংলাদেশের ইংলিশ কোচ জেমি ডে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, আফগানিস্তানে খেলা হলে সেখানে তিনি যাবেন না।

আগামী ১০ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়েই বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ মিশন শুরু করবে বাংলাদেশ। সে ম্যাচের ভ্যেনু এখনো চূড়ান্ত হয়নি। যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের শহরগুলো কখনোই নিরাপদ নয়। রাজধানী কাবুল বা অন্যান্য শহর থেকে প্রায়ই আত্মঘাতী বোমা হামলার খবর আসে। বাংলাদেশ দল সেখানে যাবে কি না, সেটি অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করছে। কিন্তু কোচ জেমি প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের মতো একটি অনিরাপদ দেশে যাওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব হবে না, ‘আমি মনে করি, আফগানিস্তানে ম্যাচ হবে না। যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি অঞ্চলে খুশিমনে খেলতে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। আমি ইতিমধ্যে বাফুফেকে জানিয়ে দিয়েছি, ম্যাচ আফগানিস্তানে হলে আমি যেতে পারব না।’

বাংলাদেশের চিন্তিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। গত বছর ১৮ আগস্ট আফগানিস্তান কাবুলে ফিলিস্তিনের বিপক্ষে একটি প্রীতি ম্যাচ খেলেছে। তার মানে তারা নিজেদের মাটিতে ফুটবল ফেরানোর কথা ভাবছে। ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে হোম ভেন্যু কোথায় হবে, সেটি ফিফাকে জানাতে হবে। ফিফা অনুমোদন দিয়ে দিলে এ ম্যাচের ভেন্যু বদল করাটা বেশ কঠিন হয়ে যাবে বাফুফের জন্য। তবে বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম জানিয়েছেন, আফগানিস্তান যদি নিজেদের দেশেই ভেন্যু করে, তাহলে ফিফাকে নিজেদের সমস্যার কথা জানাবে বাফুফে, ‘আফগানিস্তান কাবুল বা দেশটির অন্য শহরে ভেন্যু করতে চাইলে আমরা সেখানকার নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টা তুলব ফিফার কাছে। আমরা নিরাপত্তার প্রশ্নে সেখানে খেলতে যেতে চাইব না। তারপর ফিফা যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই চূড়ান্ত।’

ক্রিকেটে আফগানিস্তানে গিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো আন্তর্জাতিক দল ম্যাচ খেলেনি। আফগান ক্রিকেট বোর্ডও সে কারণে ভারতের দেরাদুনকে হোম ভেন্যু হিসেবে বেছে নিয়েছে। আইসিসিও দেরাদুনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ফুটবলে অবশ্য ভেন্যুর ব্যাপারে ফিফার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।

২০১৬ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের ম্যাচ খেলতে প্রথমে ঢাকায় আসতে চায়নি অস্ট্রেলিয়া। ক্রিকেট দল তো সফরই বাতিল করে দিয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশের নিরাপত্তাব্যবস্থায় সন্তুষ্ট হয়ে ঠিকই অস্ট্রেলিয়াকে বাংলাদেশে আসতে বাধ্য করেছিল ফিফা। ফিফার অনড় অবস্থানের কারণে শেষ পর্যন্ত ঢাকায় এসে ম্যাচ খেলতে বাধ্য হয় অস্ট্রেলিয়া। ফলে আফগানিস্তান প্রশ্নে ফিফা যা বলবে, সেটিই বাফুফেকে মেনে নিতে হবে।

১০ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তান ম্যাচ সামনে রেখে কবে নাগাদ জাতীয় দলের প্রস্তুতি শুরু হবে, তা ঠিক হয়নি। ৩০ জুলাই প্রিমিয়ার লিগ শেষ হওয়ার পরপরই আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহের প্রথম দিকে ঈদুল আজহা। ঈদের জন্য ১০-১২ দিন ছুটি শেষে সম্ভবত আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহে প্রস্তুতিতে নেমে পড়বে বাংলাদেশ। তত দিনে জাতীয় দলের কোচ জেমি ডে ঢাকায় ফিরবেন ইংল্যান্ডে ছুটি কাটিয়ে। আফগানিস্তান ম্যাচের প্রস্তুতি হিসেবে ঢাকায় আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলতে পারে বাংলাদেশ।