'সুযোগ-সুবিধা অনেক, তবুও ওরা ভালো করতে পারছে না'

রুবেল-সাব্বির থাকতেও হার এড়াতে পারেনি বাংলাদেশ ‘এ’। প্রথম আলো ফাইল ছবি
রুবেল-সাব্বির থাকতেও হার এড়াতে পারেনি বাংলাদেশ ‘এ’। প্রথম আলো ফাইল ছবি
আফগানিস্তান ‘এ’ দলের কাছে একের পর এক হেরেই চলেছে বাংলাদেশ ‘এ’। সাবেক অধিনায়ক ও বিসিবির নির্বাচক হাবিবুল বাশারকে ভাবাচ্ছে ‘এ’ দলের পারফরম্যান্স।

হতে পারে ‘এ’ দলের খেলা। কিন্তু লড়াইটার সঙ্গে দুই দেশের নামও তো জড়িয়ে। আফগানিস্তান ‘এ’ দলের কাছে টানা দুটি ওয়ানডে হেরেছে বাংলাদেশ ‘এ’। পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশ ‘এ’ পিছিয়ে ২-০ ব্যবধানে। এই আফগানদের কাছে বাংলাদেশ আন অফিশিয়াল টেস্ট সিরিজ হেরেছে ১-০ ব্যবধানে। এখন আন অফিশিয়াল ওয়ানডে সিরিজটা হারার উপক্রম! জিততে চাইলে শেষ তিন ম্যাচের সবগুলোই জিততে হবে বাংলাদেশ ‘এ’ দলকে। অন্য দিকে আফগানদের এক ম্যাচ জিতলেই চলে।

দেশের মাঠে আফগানিস্তান ‘এ’ দলের কাছে বাংলাদেশ ‘এ’ দল যেভাবে নাকাল হচ্ছে, বিসিবির নির্বাচক হাবিবুল বাশার এতে ভীষণ বিব্রত-চিন্তিত, ‘‘বিব্রতকর তো অবশ্যই। বিব্রতের চেয়ে দুশ্চিন্তাটা বেশি হচ্ছে। যতটা ভেবেছিলাম আফগানিস্তানের এই দলটা আসলে খুবই ভালো। কিন্তু আমাদের যারা খেলছে তারাও তো অতীতে ভালো খেলে এসেছে। টানা হারের ব্যাখ্যা দেওয়া কঠিন। ‘এ’ দল হচ্ছে আমাদের দ্বিতীয় সেরা দল। এখানে খেলোয়াড়দের পরীক্ষাটা ভালো হয়। এ পরীক্ষা তারা ভালো দিতে পারছে না, দুশ্চিন্তা এখানেই।’’

এই মুহূর্তে বিসিবির মোট তিনটি দল ব্যস্ত। জাতীয় দল তো আছেই। আফগানদের বিপক্ষে ‘এ’ দল ব্যস্ত। আর ভারতে ডক্টর ক্যাপ্টেন কে থিমাপ্পাইয়া সর্বভারতীয় স্মৃতি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট খেলছে বিসিবি একাদশ। আজ হাবিবুলের কথায় মনে হলো, ভারত সফরের দল গড়তে গিয়ে ‘এ’ দল একটু কম শক্তিশালী হয়ে গেছে, ‘হঠাৎ ভারতে একটা দল চলে গেছে। যে দলটা ভারতে গেছে ওটা মাথায় রেখে ভালো একটা দল গড়তে হয়েছে। ৩৮ জন ক্রিকেটার এখন ব্যস্ত । এরাই আমাদের সেরা ক্রিকেটার। তারা ভালো না খেললে কিছু তো করার নেই।’

‘মিনি রঞ্জি’ বলে পরিচিত ক্যাপ্টেন কে থিমাপ্পাইয়া সর্বভারতীয় স্মৃতি ক্রিকেট টুর্নামেন্টে বিসিবি একাদশ নিয়মিত ভালো খেলছে। আজ যেমন কেএসসিএ সচিব একাদশকে ৭৯ রানে অলআউট করে দিয়েছে বিসিবি একাদশ। প্রথম ইনিংসে ৩ উইকেটে ১১১ রান তুলে দিন শেষ করেছে বিসিবি। কিন্তু খেলোয়াড়ের এতই সংকট যে দেশের মাঠে আফগানদের বিপক্ষে দুর্দান্ত একটা দল গড়া গেল না? এ প্রসঙ্গে হাবিবুলের ব্যাখ্যা, ‘‘ওটাও (ভারতে) একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটা টুর্নামেন্টে। প্রতি বছর এই টুর্নামেন্ট হয়। ‘এ’ দলের খেলা নিয়মিত হয় না। ওই টুর্নামেন্টের মান অনেক ভালো এ কারণে সেরা দল তৈরি করেছি, যাতে সেখানে নিয়মিত খেলার সুযোগ থাকে। আর এখানে ‘এ’ দলে খেলা বেশির ভাগেরই কিন্তু জাতীয় দলে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। ‘এ’ দল হচ্ছে উন্নতির একটা প্রক্রিয়া। ভবিষ্যতের দল গঠনের জন্য কিছু ক্রিকেটার এখানে খেলাতেই হবে। না হলে বোঝা যাবে কীভাবে যে জাতীয় দলের জন্য তারা কতটা তৈরি? তবে এখানে অংশ নেওয়া জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের কাছে আরও ভালো পারফরম্যান্স আশা করেছিলাম।’

একটি বিষয় এখন পরিষ্কার, সাকিব-মুশফিকের মতো হাতেগোনা কয়েকজন ক্রিকেটার বাদে বেশির ভাগই অধারাবাহিক। ‘এ’ দল কিংবা বিসিবি একাদশের হয়ে যাঁরা খেলছেন, তাঁদের ব্যর্থতা নিয়ে বিচলিত হলেও হাবিবুল ধৈর্য ধরার পক্ষে, ‘হ্যাঁ, উদ্বিগ্ন। তবে এদের তো খেলাতে হবে। না খেললে বুঝব কী করে ওরা তৈরি। যাদের নিয়ে এগোব, তাদের না খেলালে বুঝতে পারব না এরা পরের ধাপের জন্য তৈরি। আমাদের বসে ভাবতে হবে কোথায় গলদ হচ্ছে। কোচেরা কাজ করছেন, এখন আগের তুলনায় সুযোগ-সুবিধা অনেক বেড়েছে। কেন তবুও ওরা ভালো করতে পারছে না, আমাদের এটা নিয়ে ভাবতে হবে। তবে খেলার মধ্যে প্রকৃত চিত্রটা আমাদের সামনে পরিষ্কার হচ্ছে ধীরে ধীরে।’