বিপদে পাশে ছিল তো এই শ্রীলঙ্কাই

আজ সিরিজ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে তামিম ইকবাল। ছবি: এএফপি
আজ সিরিজ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে তামিম ইকবাল। ছবি: এএফপি

গত এপ্রিলে আত্মঘাতী বোমা হামলার পর পুরো শ্রীলঙ্কার চিত্রই যেন বদলে গেছে। দেশটির সরকারকে ভীষণ সতর্ক থাকতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কায় বাংলাদেশ সফর করবে কি করবে না, খানিকটা দ্বিধায় ছিল বিসিবি। শেষ পর্যন্ত সংশয় দূর হয়েছে। এ দুদিনে শ্রীলঙ্কার আতিথেয়তায় খুশি তামিম ইকবাল।

শ্রীলঙ্কায় পৌঁছানোর পর রীতি অনুযায়ী ফুলেল অভ্যর্থনা পেয়েছেন তামিমেরা। গত দুদিনে যে নিরাপত্তা, সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন, ক্রিকেটের বাইরে আসলে কিছু ভাবার সুযোগই দেখছেন না বাংলাদেশ দলের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক। এই পরিস্থিতিতে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে হয়, তামিম এটিই বড় করে দেখছেন। এমন পরিস্থিতিতে যে বাংলাদেশও অনেকবার পড়েছে। ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহ কিংবা ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় সংশয় দেখা গিয়েছিল বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আয়োজনের। দুবারই সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। দুবারই বিসিবি পেরেছে শ্রীলঙ্কাকে নিয়ে সফলভাবে সিরিজ আয়োজন করতে।

এবার লঙ্কানদের দেওয়া নিরাপত্তা কিংবা আতিথেয়তাই শুধু সন্তুষ্টি নয়, তামিম কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন শ্রীলঙ্কার প্রতি, ‘শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডকে ধন্যবাদ তারা যেভাবে আমাদের দেখাশোনা করছে। নিরাপত্তা অসাধারণ। যে সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে খুবই ভালো। দুই মাস আগে ঘটে যাওয়া ঘটনার পর আমাদের ক্রিকেট বোর্ড কিংবা দেশের মানুষ সবাই ইতিবাচক ছিল এ সফর নিয়ে। খুব বেশি দিন আগের কথা নয় আমরাও এমন পরিস্থিতিতে পড়েছিলাম। তখন শ্রীলঙ্কাও আমাদের সহায়তা করেছিল। আমরা সবাই পরিবারের মতো। এ ধরনের ঘটনার পর একে অপরের সহায়তা করা খুব দরকার। খুব স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছি এখানে। আমরা এখন ক্রিকেট ছাড়া কিছু ভাবছি না। সবাই উপভোগ করছে সফরটা, আশা করি খুব উপভোগ্য সিরিজ হবে। দুই দলেরই প্রমাণ করার অনেক কিছু আছে এ সিরিজে। আশা করি সবাই সিরিজ উপভোগ করবে।’

তামিম ইকবাল বারবার বললেন, তাঁরা কখনোই ভাবেননি শ্রীলঙ্কা সফর হবে না। মাঠের বাইরের আতিথেয়তা নিশ্চয়ই মাঠে দেবে না লঙ্কানরা। ব্যাটে-বলের লড়াইয়ে সেখানে তাঁরা বাংলাদেশকে হারাতেই চাইবে। এক শ্রীলঙ্কান সাংবাদিক মনে করিয়ে দিলেন বিশ্বকাপে কতটা ব্যর্থ হয়ে ফিরেছে বাংলাদেশ। তামিম অবশ্য এ কথায় পুরোপুরি এক হতে পারলেন না, ‘বিশ্বকাপের কিছু ম্যাচে আমাদের জেতা উচিত ছিল। পয়েন্ট টেবিল দেখে মনে হবে আমাদের খুব বাজে বিশ্বকাপ গেছে। আমরা ক্রিকেটাররা মনে করি আমাদের আরও ভালো করা দরকার ছিল। আমরা ভালো খেলেছি। আমরা এখন যেখানে দাঁড়িয়ে, এখানে শুধু ভালো খেলা নয়, জয় দরকার। যদি ওভাবে দেখেন হ্যাঁ, আমাদের হতাশার একটা টুর্নামেন্ট গেছে। এই সিরিজের দিকে আমরা তাকিয়ে। খুবই গুরুত্বপূর্ণ সিরিজ। কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার নেই আমাদের দলে। তবে যারা আছে তাদের সামর্থ্য আছে। শ্রীলঙ্কার মাটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভালো করা কঠিন। তবে এখানে সব সিরিজে ভালো করেছিলাম। আশা করি এবারও আমরা ছন্দটা ধরে নিতে পারব।’

নিরাপত্তা নিয়ে না ভাবলেও বাংলাদেশকে ভাবতে হচ্ছে শ্রীলঙ্কার গরম নিয়ে। তামিম নিজেই জানালেন, আবহাওয়া প্রচণ্ড গরম! তবে ইতিবাচক দিক হচ্ছে কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে বাংলাদেশ একটু আগেভাগেই গেছে সেখানে। আগামীকাল পি সারা ওভালে শ্রীলঙ্কা বোর্ড প্রেসিডেন্ট একাদশের বিপক্ষে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে ঝালিয়ে নেওয়ার আরও ভালো সুযোগ পাবেন তামিমেরা।