বিশ্বকাপ ফাইনাল গাপটিলের সেরা ম্যাচ, সবচেয়ে দুঃখেরও

ফাইনালে হারের পর বিধ্বস্ত মার্টিন গাপটিল। সান্ত্বনা দিচ্ছেন সতীর্থ ও ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়। ছবি: এএফপি
ফাইনালে হারের পর বিধ্বস্ত মার্টিন গাপটিল। সান্ত্বনা দিচ্ছেন সতীর্থ ও ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়। ছবি: এএফপি
>বিশ্বকাপ ফাইনালের স্মৃতি ভুলতে পারছেন না মার্টিন গাপটিল। এ ম্যাচটা তাঁর জীবনের সেরা আর একই সঙ্গে সবচেয়ে দুঃখেরও

জীবনের সেরা ক্রিকেট ম্যাচে সবচেয়ে বেশি দুঃখ পেলে তা ভুলে থাকা অসম্ভব। মার্টিন গাপটিলও ভুলে থাকতে পারছেন না। বিশ্বকাপ ক্রিকেট ফাইনালের এক সপ্তাহ পেরিয়ে যাওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গাপটিল আজ লিখেছেন, ‘বিশ্বাস করা কঠিন লর্ডসে অবিশ্বাস্য ফাইনালের পর এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে।’

এবার বিশ্বকাপের ফাইনালটি ছিল এমন ম্যাচ যা দর্শকদের জন্যই ভুলে থাকা কঠিন। রোমাঞ্চকর ও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভরপুর এ ম্যাচ টাই হয়েছে দুবার, স্কোরবোর্ডে শেষ পর্যন্ত যে কোনো এক দল জয়ী হলেও বেশির ভাগ ক্রিকেটমোদীর কাছেই কোনো দলই হারেনি। গাপটিলের স্মৃতিতে ম্যাচটা আরও টাটকা থাকার কথা। একে তো তাঁর দল নিউজিল্যান্ড হেরেছে আর এ হারে তাঁর অনিচ্ছাকৃত ‘অবদান’ রয়েছে একবার নয় দু-দুবার। তাই এক সপ্তাহ নয় বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও গাপটিল এবার ফাইনাল হয়তো ভুলতে পারবেন না, মনে হবে এ তো সেদিনের ঘা!

সেমিফাইনালে মহেন্দ্র সিং ধোনিকে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে রান আউট করে কিউইদের ফাইনালে ওঠায় বড় ভূমিকা রেখেছিলেন গাপটিল। আর ফাইনালে? দম আটকানো সে ম্যাচে ভাগ্য যেন তাঁর সঙ্গে খেলা করেছে! তাতে নিউজিল্যান্ডেরও শিরোপা জেতা হয়নি। শেষ ওভারে ইংল্যান্ড ৩ বলে ৯ রানের সমীকরণে থাকতে গাপটিলের থ্রো বেন স্টোকসের ব্যাটে লেগে চার হয়ে যায়। দুর্ভাগ্যজনক সেই ওভার থ্রোতেই ঘুরে যায় ম্যাচ। ইংল্যান্ড কোনোমতে ম্যাচটা টাই করে খেলা নিয়ে যায় সুপার ওভারে। সেখানেও টাই হয় ম্যাচ, আর শেষ বলে রান আউট হন গাপটিল। ওই রানটা নিতে পারলে চ্যাম্পিয়ন হতো নিউজিল্যান্ডই।

গাপটিলের দুটি টুইট। ইনস্টাগ্রামেও একই পোস্ট করেন এ ব্যাটসম্যান। ছবি: টুইটার
গাপটিলের দুটি টুইট। ইনস্টাগ্রামেও একই পোস্ট করেন এ ব্যাটসম্যান। ছবি: টুইটার

এমন রোমাঞ্চকর ম্যাচ খুব বেশি ক্রিকেটারের জীবনে আসে না। রোমাঞ্চ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা বিচারে এবারের ফাইনাল গাপটিলের ‘জীবনের সেরা’ হলেও সবচেয়ে বাজে কিংবা দুঃখেরও ম্যাচও। সেটি অবশ্যই ওই দুটি ঘটনা আর নিউজিল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন হতে না পারায়। ইনস্টাগ্রাম ও টুইটারে গাপটিল তাই লিখেছেন, ‘আমার জীবনে এটি (বিশ্বকাপ ফাইনাল) একই সঙ্গে সেরা ও সবচেয়ে বাজে দিন। অনেক রকম আবেগ কাজ করেছে। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করাটা গর্বের, দুর্দান্ত সব সতীর্থের পাশে খেলেছি। সমর্থনের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।’

ফাইনালে দুজন সেরা সমর্থককেও খুঁজে বের করেছেন গাপটিল। তাঁর সংবাদকর্মী স্ত্রী লরা ম্যাকগোল্ডড্রিক ও মেয়ে হার্লি। বিশ্বকাপে নানা চড়াই-উৎড়াইয়ে দুজনকে পাশে পেয়েছেন গাপটিল। তাঁদের উদ্দেশে ইনস্টাগ্রামে গাপটিল লিখেছেন, ‘দুজন সেরা সমর্থককে পাশে পেয়ে এর চেয়ে বেশি গর্বিত হতে পারতাম না। লরা ম্যাকগোল্ডড্রিক তুমি আমার জীবনে দারুণ কিছু। ভালো ও খারাপ সময়ে পাশে থাকার জন্য হার্লিকেও ধন্যবাদ। যে কোনো কিছু চেয়ে আমার মেয়েদের বেশি ভালোবাসি।’