প্রেমাদাসায় এমন রেকর্ড বাংলাদেশের?

এক যুগ আগে প্রেমাদাসায় অভিষেক হয়েছিল মাহমুদউল্লাহর। ছবি: এএফপি
এক যুগ আগে প্রেমাদাসায় অভিষেক হয়েছিল মাহমুদউল্লাহর। ছবি: এএফপি
>

সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে আজ বিকেল ৩টায় শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে। এ মাঠে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের রেকর্ড মোটেও ভালো নয়

ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কার হয়ে আজ শেষবারের মতো মাঠে নামবেন লাসিথ মালিঙ্গা। লঙ্কানদের ঘরের ছেলে বিদায় নেবেন তাদের ‘হোম অব ক্রিকেট’ প্রেমাদাসা স্টেডিয়াম থেকে। এ মাঠে ওয়ানডে সংস্করণে বাংলাদেশের রেকর্ড মোটেও ভালো নয়। আর আজ এ মাঠে যেহেতু মালিঙ্গার শেষ ম্যাচ, দিমুথ করুণারত্নের দল এমনিতেই তাতিয়ে থাকবে। শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা সন্তানকে জয় দিয়ে বিদায় জানাতে চান করুণারত্নে। তাহলে আজ অন্তত বাংলাদেশের জয়ের কোনো সুযোগ নেই, তাই তো?

কাগজে-কলমে তেমনই মনে হয়। তবে মাঠের খেলার হিসেব আলাদা। প্রতিটি ম্যাচই নতুন, যে দল বেশি ভালো খেলবে তারাই জিতবে—এটাই ক্রিকেটের সহজ কথা। তবে প্রেমাদাসায় এ সহজ কথাটা কিন্তু একবারও ফলাতে পারেনি বাংলাদেশ। অন্তত ওয়ানডে সংস্করণে। এক দশক ও ১০ দিন হতে চলল প্রেমাদাসায় ওয়ানডেতে এখনো জয়খরায় বাংলাদেশ।

১৯৯৭ সালের ১৬ জুলাই—প্রেমাদাসায় প্রথমবারের মতো মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। এশিয়া কাপের সে মঞ্চে পাকিস্তানের বিপক্ষে হার দিয়ে শুরু। এরপর এ মাঠে আরও ৭ ম্যাচ খেলেও জয়ের দেখা পায়নি বাংলাদেশ। আজ আরও একটি ব্যাপার সফরকারী দলের জন্য অসুবিধার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ ও ফরহাদ রেজা ছাড়া বাংলাদেশ দলে বাকিদের কাছে ৫০ ওভার সংস্করণে এ মাঠ অচেনা। প্রেমাদাসায় বাংলাদেশ সবশেষ ওয়ানডে খেলেছে ২০০৭ সালের ২৫ জুলাই—সেটি শ্রীলঙ্কা সফরে তৃতীয় ওয়ানডে। বর্তমান দলের এ চার ক্রিকেটার ছিলেন সে দলে। মাহমুদউল্লাহর জন্য ম্যাচটা আলাদা করে মনে থাকার কথা। সেটি ছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁর অভিষেক ম্যাচ।

১০৯ রানের হার (প্রথম ম্যাচ) দিয়ে শুরু, আর সবশেষ ম্যাচে ৩৯ রানের হার। মাঝের ছয় ম্যাচে হারের ব্যবধানগুলো দেখুন—৫৮ রান, ১০ উইকেট, ৬ উইকেট, ৭৫ রান, ৬ উইকেট ও ৫ উইকেট। মানে কোনো ম্যাচেই সেভাবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই জমাতে পারেনি বাংলাদেশ। সময়ের হিসেবে দীর্ঘ এক যুগ পেরিয়ে প্রেমাদাসায় আবারও ওয়ানডে খেলতে নামছে বাংলাদেশ। এ সময়ে বাংলাদেশ যেমন পাল্টেছে তেমনি শ্রীলঙ্কাও।

এক যুগ আগে শ্রীলঙ্কা ছিল বিশ্বসেরা দলগুলোর একটি, বাংলাদেশ মেরুদণ্ড সোজা করে উঠে দাঁড়ানোর অপেক্ষায়। এক যুগ পর দৃশ্যটা পাল্টে গেছে ঠিক এভাবে—ভাঙা গড়ার খেলা চলছে লঙ্কান ক্রিকেটে। আর বাংলাদেশ অন্তত ওয়ানডেতে সম্মান আদায় করে নিতে পেরেছে। তাই প্রেমাদাসায় আজ বাংলাদেশের জয়ের সুযোগ নেই, কথাটা পুরোপুরি ভুল। খেলাধুলায় ইতিহাস যতই বিপক্ষে থাক, প্রতিটি ম্যাচই যেহেতু নতুন আর মেরুদণ্ডও সোজা—তাই প্রেমাদাসায় আজ তামিমদের মাথা উঁচু করে মাঠ ছাড়ার ভালো সম্ভাবনাই আছে।

প্রতিপক্ষের মাঠ কিংবা নিরপেক্ষ মাঠ বিবেচনা করলে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছে জিম্বাবুয়ের হারারে স্পোর্টস ক্লাবের মাঠে (১৭)। এ পর্যন্ত ১১ হারের বিপরীতে জয় ৬টি। এরপর আসবে সিংহলিজ স্পোর্টস গ্রাউন্ডের নাম—এ মাঠে ১১ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশের জয় মাত্র ১টি। প্রেমাদাসা রয়েছে তারপরই। সেখানে কি আজ ঘুচবে জয়খরা?