মালিঙ্গার রঙিন বিদায়ে ধূসর তামিমরা

ফ্লাডলাইটের আলোটা আড়াল করেছেনে নিজেকে দিয়েই। মালিঙ্গার বিদায়ী ম্যাচের সব আলোই যে ছিল তাঁর দিকে। ছবি: এএফপি
ফ্লাডলাইটের আলোটা আড়াল করেছেনে নিজেকে দিয়েই। মালিঙ্গার বিদায়ী ম্যাচের সব আলোই যে ছিল তাঁর দিকে। ছবি: এএফপি

‘লাসিথ মালিঙ্গার বিদায়টা ধূসর করতে চাননি তামিমরা’—এভাবে তো আর বলা যায় না! কলম্বোর প্রেমাদাসায় আজ বাংলাদেশ ম্যাচটা জেতার লক্ষ্যেই নেমেছিল। কিন্তু দিনটা যে ছিল শ্রীলঙ্কার। আরও নির্দিষ্ট করে বললে মালিঙ্গার। তাঁকে বিদায় জানাতে পুরো শ্রীলঙ্কা যেভাবে উজ্জীবিত ছিল, সেটি ভন্ডুল করে দিতে বাংলাদেশকে আজ দুর্দান্ত খেলতে হতো। সেটি হয়নি। তামিমরা হেরেছেন ৯১ রানে। আর বিজয়ের রঙে রঙিন হয়েছে মালিঙ্গার বিদায়।

৩১৫ রানের বড় লক্ষ্য ছুঁতে দুর্দান্ত একটা শুরু দরকার ছিল বাংলাদেশের। আর সেটি পেতে রানের ফোয়ারা প্রত্যাশিত ছিল তামিম ইকবালের ব্যাটে। সে আশায় গুড়ে বালি প্রথম ওভারের পঞ্চম বলেই। তামিমকে যে ইয়র্কারটা দিলেন লাসিথ মালিঙ্গা, সেটা ঠেকানোর সাধ্য বিশ্বের খুব কম ব্যাটসম্যানেরই আছে। ভূপাতিত তামিম পরিষ্কার বোল্ড।

শূন্য রানে বাংলাদেশ অধিনায়ককে ফেরানোর পর মালিঙ্গার দ্বিতীয় শিকার সৌম্য সরকার। এবারও সেই মৃত্যুবাণ ইয়র্কার। আগের বেশ কয়েকটা দারুণ ফুটওয়ার্কে সামলে নিয়েছিলেন, কিন্তু এটা আর পারলেন না। ২২ বলে ১৫ রান করা সৌম্যর মিডল স্টাম্প ছত্রখান! প্রস্তুতি ম্যাচে তিনে দারুণ ব্যাটিং করা মিঠুন ফিরে গেছেন এর আগেই, ২১ বলে ১০ রান করে নুয়ান প্রদীপের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে। রিভিউ নেওয়ার দরকার ছিল না, তবু নিলেন এবং সেটা নষ্ট হলো। সৌম্যর পরে গেছেন মাহমুদউল্লাহ, ৩ রান করে, লাহিরু কুমারার বলে স্লিপের ওপর দিয়ে উচ্চাভিলাষী শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন থার্ডম্যানে। ৩৯ রানে ৪ উইকেট নেই!

ব্যাটিং বিপর্যয়ের পর বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরানোর চেষ্টা করেছেন সাব্বির রহমান-মুশফিকুর রহিম। দুজনের জুটিতেই মূলত পথ খোঁজার চেষ্টা করেছে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপে খুব একটা ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি সাব্বির। আজ নিজেকে প্রমাণের ম্যাচ হিসেবে নিয়েই এগোচ্ছিলেন তিনি। মুশফিক-সাব্বিরের পঞ্চম উইকেটে জুটিতে এল ১১১ রান। এই জুটি আরও লম্বা হলে বাংলাদেশের আশা উজ্জ্বল হতো। সেটি হয়নি সাব্বির ৬০ রানে আউট হওয়ায়। আশার প্রদীপ হয়ে ওঠা মুশফিক খানিক এগিয়ে গিয়েও থেমে গেলেন। বাংলাদেশ দলের অভিজ্ঞ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যানের কাছ থেকে ইনিংস সর্বোচ্চ ৬৭ রান এল। কিন্তু সেটি হার এড়াতে যথেষ্ট ছিল না। অষ্টম উইকেট হিসেবে মুশফিক আউট হতেই কার্যত সব শেষ! মোস্তাফিজুর রহমান-রুবেল হোসেনের শেষ উইকেট জুটি ২৩ রান যোগ করে পরাজয় যা একটু বিলম্বিত করেছেন। ৩৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বিদায়টা রাঙিয়ে রাখলেন মালিঙ্গা।

বিশ্বকাপের ব্যর্থতা পেছনে ফেলতে শ্রীলঙ্কা সফরে ভালো করা জরুরি বাংলাদেশ দলের। কলম্বোয় আজ সিরিজের প্রথম ম্যাচ হেরে কাজটা আরও কঠিন হয়ে গেল তামিমদের।