পিঠ দেয়ালে ঠেকেছে, তবু বাংলাদেশ নামবে একই দল নিয়ে

>দ্বিতীয় ম্যাচেও প্রথম ম্যাচের একাদশ নিয়ে মাঠে নামার ইঙ্গিত। অর্থাৎ তাসকিন-তাইজুলদের এ ম্যাচেও দেখার সম্ভাবনা নেই
প্রথম ম্যাচের দলেই আস্থা কোচের। ফাইল ছবি
প্রথম ম্যাচের দলেই আস্থা কোচের। ফাইল ছবি

মালিঙ্গার ওয়ানডে শেষ হলো অবশেষে। এক সপ্তাহ ধরে যে উন্মাদনা চলছে তার পূর্ণাঙ্গ সমাপ্তি টেনেছেন লাসিথ মালিঙ্গা নিজেই। বাংলাদেশের ব্যাটিং গুঁড়িয়ে দেওয়া স্পেল দিয়েই ওয়ানডে ক্যারিয়ারের যবনিকা টেনেছেন। সম্ভাব্য সুন্দর চিত্রনাট্য লেখা হয়েছে প্রেমাদাসাতে।

মালিঙ্গা তো তাঁর বিদায় কড়ায়–গন্ডায় বুঝে নিয়েছেন কাল। কিন্তু সিরিজের সমাপ্তিরেখায় পৌঁছাতে এখনো অনেক দেরি। তিন ম্যাচের সিরিজের বাকি দুটি নিয়ে ভাবতে হচ্ছে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কাকে। বাংলাদেশ অবশ্য অত দূরও ভাবতে পারছে না। প্রথম ম্যাচে ৯১ রানে হেরে বসায় এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আগামীকাল না জিতলেই সিরিজ জয়ের আশা শেষ। এমন ম্যাচের আগে অবশ্য দল যে খুব আলাদা করে চিন্তা করছে তা নয়। চোটাঘাতে থাবা না পড়লে প্রথম ম্যাচের একাদশই কাল দেখা যেতে পারে মাঠে।

সাধারণত উইনিং কম্বিনেশন ধরে রাখার চেষ্টা করে ক্রিকেট দল। হারের দেখা মিললেই শুরু হয় রদবদল। তবে ভারপ্রাপ্ত কোচ খালেদ মাহমুদ এমন ঢালাও রদবদলে বিশ্বাসী নন। তাঁর মতে, প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ সেরা দল নিয়ে জেতার জন্যই মাঠে নেমেছিল। তাই দ্বিতীয় ম্যাচেও এর অন্যথা হওয়া উচিত নয়, ‘প্রথম ম্যাচের জন্য সম্ভাব্য সেরা দলই নেওয়া হয়েছিল। এখন সে কথায় তো বিশ্বাস রাখতে হবে আমাদের। সে বিশ্বাস আমার আছে। ওরা হয়তো আরেকটু ভালো করতে পারে, আরেকটু দায়িত্ব নিতে পারে, সেটা আলাদা ব্যাপার। কিন্তু দলে পরিবর্তন আনার কথা চিন্তাই করিনি।’

মাত্র এক দিন বিরতি দিয়ে দুটি ওয়ানডে ম্যাচ। ফলে আজ অনুশীলনের ঝক্কি নিতে চায়নি দল। শুধু অধিনায়ক তামিম ইকবালসহ তিনজন ঐচ্ছিক অনুশীলনে এসেছিলেন। ফলে দলে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা আসলেই কম। মাহমুদ অবশ্য বিকেলে টিম মিটিংয়ের পরই দল নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে পরিবর্তনের সুযোগ যে খুব কম, সে কথা জোর দিয়েই বলেছেন তিনি, ‘কাল ম্যাচ শেষে অনেক রাতে ফিরেছি, সকালে এখানে অনুশীলনে এসেছি। এ নিয়ে হয়তো পরে চিন্তা করব। তবে আমি বিশ্বাস করি খুব বেশি পরিবর্তন ভালো হবে, এটা ঠিক না। মাঝে মাঝে পরিবর্তন ভালো হয়। কিন্তু সব সময় তা না। যেহেতু এটাকেই সেরা দল ভেবেছি, এদের ওপরই বিশ্বাস রাখতে চাই।’

গতকাল ম্যাচের পর তামিম নিজেও বলছিলেন এক ম্যাচ দেখেই দলের সবাইকে বিবেচনা করা যাবে না। তাঁর দাবি সবাই ভালো করতে চায়, শুধু এক দিনের ব্যর্থতাতেই খেলোয়াড়দের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ফেলা ঠিক নয়, ‘সবাই ভালো ক্রিকেটার। দুই, চারটা ম্যাচে যদি তারা পারফর্ম না করে এর মানে এই নয় যে তারা ভালো খেলে না। প্রত্যেক ক্রিকেটার ১০-১৫ বছর কষ্ট করে এই জায়গায় আসার জন্য। এত বছর কষ্ট করে, রান করে, উইকেট নিয়ে তারা যখন জাতীয় দলে এসে দুই-তিন ম্যাচ খারাপ খেলে এবং তাদের আমরা সমর্থন না করি তাহলে এটা খুব খারাপ তাদের জন্য।’

কোচ মাহমুদও সে ধারাতেই চিন্তা করেন। এ কারণেই কাল ম্যাচের অধিকাংশ সময় ব্যাকফুটে থাকার পরও দলের একাদশে আস্থা রাখছেন। নিজেই স্বীকার করেছেন সিরিজের প্রথম ম্যাচ হেরে যাওয়ায় দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। তবে এখনো সিরিজ জেতার স্বপ্ন দেখছেন কোচ। আর তাঁর স্বপ্ন পূরণের জন্য গতকালের এগারোতেই ভরসা রাখছেন, ‘এখনো আমাদের সুযোগ আছে। আরও দুটি ম্যাচ আছে। আগামীকালের ম্যাচ জিতলেই সিরিজে সমতা আসবে। আমরাও ঘুরে দাঁড়াতে পারি। আমাদের যদি ক্ষমতা না থাকত, তাহলে উত্তরে বলতাম আশা নেই। কিন্তু বিশ্বাস করি আমাদের সে ক্ষমতা আছে। আমরা যা খেলেছি তার চেয়ে ভালো খেলতে পারতাম। ছেলেরাও সেটা জানে। আশা করি আমরা ঘুরে দাঁড়াব।’