বিশ্বকাপ ফুটবলারের মুখে ' আমি রানা গাল্লি বয়'

গাল্লি বয় গানে মুগ্ধ হয়েছেন কোস্টারিকার জার্সিতে বিশ্বকাপ খেলা ফুটবলার দানিয়েল কলিনদ্রেস। সংগৃহীত ছবি
গাল্লি বয় গানে মুগ্ধ হয়েছেন কোস্টারিকার জার্সিতে বিশ্বকাপ খেলা ফুটবলার দানিয়েল কলিনদ্রেস। সংগৃহীত ছবি
>বসুন্ধরা কিংসের হয়ে খেলছেন কোস্টারিকার জার্সিতে বিশ্বকাপ খেলা দানিয়েল কলিনদ্রেস। তাঁর মুখে এখন শোনা ‘আমি রানা গাল্লি বয়’ গানটি। ফুটবলীয় শৈলীতে সমর্থকদের মন তো জয় করে নিয়েছেনই। ৩৪ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড এখন স্কুলের ছোট ছোট বাচ্চাদের সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছেন।

‘আই অ্যাম আ গাল্লি বয়...হেয় আমি রানা’, সম্প্রতি জনপ্রিয় হয়ে ওঠা একটি র‍্যাপ গানের জিঙ্গেল। পথে-ঘাটে হরহামেশা বাজছে গানটি। কিন্তু গানটি যখন বিশ্বকাপ খেলা কোনো ফুটবলারের মুখে শোনা যায়, অবাক না হয়ে পারা যায় না। শুরুতে বলা লাইনটি আজ বেশ কয়েকবার শোনা গেল কোস্টারিকার জার্সিতে রাশিয়া বিশ্বকাপ খেলা দানিয়েল কলিনদ্রেসের মুখে। গানটি যে তাঁর খুব প্রিয়, নিজের মোবাইলে ডাউনলোড করা আছে দেখিয়েও দিলেন বসুন্ধরা কিংসের জার্সিতে খেলা এই ফরোয়ার্ড।

কামরাঙ্গীরচরের গলিতে বেড়ে ওঠা বালক রানার জীবনকে কেন্দ্র করে গানটি লেখা। সেখানে স্পষ্ট ফুটে উঠেছে অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে বেড়ে ওঠা এক বালকের গল্প। যে র‍্যাপ সংগীতে তালে তালে নিজের জীবনের ধারা বর্ণনা করে গেছেন। তার জীবনের গল্প, প্রতিদিনের বেঁচে থাকার সংগ্রাম ও আশাবাদের কথা ফুটে উঠেছে পুরো সংগীতজুড়ে। একজন কোস্টারিকান হিসেবে গানের ভাষা কলিনদ্রেসের বোঝার কথা নয়। কিন্তু শুনতে ভালো লাগায় আগ্রহ নিয়ে কারও কাছ থেকে বুঝে নিয়েছেন গানের গল্পটি।

এ ছাড়া বাংলাদেশে আসার আগে ডকুমেন্টরি ফিল্মে দেখেছিলেন বাংলাদেশের অবহেলিত ছেলেমেয়েদের বেড়ে ওঠার গল্প। এর সঙ্গে এবার যোগ হয়েছে রানার গাল্লি বয় গানের পেছনের গল্প। যা দারুণভাবে প্রভাবিত করেছেন কলিনদ্রেসকে। ৩৪ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড এতটাই প্রভাবিত হয়েছেন যে, স্কুলের ছোট ছোট বাচ্চাদের সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছেন তিনি।

এর জন্য কলিনদ্রেস বেছে নিয়েছেন পোস্তগোলার একটি স্কুলকে। যেখানে গিয়ে স্কুলের ছেলেমেয়েদের মাঝে খাবার ও লেখাপড়ার সামগ্রী বিতরণ করছেন তিনি, ‘আমি দেখেছি অনেক ছেলেমেয়ে দিনে এক বেলা খায়। পড়াশোনা করতে পারে না। ব্যক্তিগতভাবে আমি একটি পরিকল্পনা শুরু করেছি। এই জন্য বেছে নিয়েছি পোস্তগোলা স্কুলকে। সেখানে ছেলেমেয়েদের জন্য খাবার ও লেখাপড়ার সামগ্রী দিয়ে সহায়তা করার চেষ্টা করছি। আমার সঙ্গে আমার কিছু বন্ধুও (কোস্টারিকান বন্ধু) আছে।’ শুধু পোস্তগোলা স্কুল নয় ঢাকার কিছু বস্তিতেও স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন কলিনদ্রেস।

বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে এবারের মৌসুমেই প্রথম বাংলাদেশে খেলতে এসেছেন কলিনদ্রেস। রাশিয়া বিশ্বকাপে খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে এসে বসুন্ধরাকে জিতিয়েছেন প্রিমিয়ার লিগসহ স্বাধীনতা কাপ টুর্নামেন্টের শিরোপা। লিগে ২২ ম্যাচে দলের ৫১ গোলে ৯টি তাঁর এবং গোল করিয়েছেন ২০টিরও বেশি। অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পেয়ে দলকে নেতৃত্বও দিয়েছেন যোগ্য নেতার মতো সামনে থেকে। সবকিছু মিলিয়ে আগামী মৌসুমের জন্যও তাঁর সঙ্গে চুক্তি করতে দ্বিতীয়বার ভাবেনি করপোরেট ক্লাবটি।

* রোববার সকালে প্রথম আলো অনলাইনে পড়ুন কলিনদ্রেসের পূর্ণাঙ্গ সাক্ষাৎকার। বাংলাদেশের ফুটবল নিয়ে তাঁর অভিজ্ঞতা, ভাবনা, কোস্টারিকা জাতীয় দল ও জাতীয় দলে সতীর্থ রিয়াল মাদ্রিদের গোলরক্ষক কেইলর নাভাসকে নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তিনি