তামিম-সৌম্যদের ব্যর্থতা নিয়ে কী বলছেন মুশফিক?

ফর্মে আছেন মুশফিক, কিন্তু দলের টপ অর্ডারের বাজে পারফরম্যান্সে সেটা দলের কাজে আসছে না। ছবি: এএফপি
ফর্মে আছেন মুশফিক, কিন্তু দলের টপ অর্ডারের বাজে পারফরম্যান্সে সেটা দলের কাজে আসছে না। ছবি: এএফপি

অভূতপূর্ব এক দৃশ্য দেখা গেল প্রেমাদাসায়। রাত তখন সাড়ে নয়টা। এমন সময়েই ধীরে ধীরে গ্যালারির সিঁড়ি ধরে নিচে নামতে লাগলেন অনেক দর্শক।

সাধারণত দলের হার নিশ্চিত হয়ে গেলে দর্শকদের এমন আচরণ দেখা যায়। কিন্তু ১০ ওভারে ২২ রান দরকার শ্রীলঙ্কার, হাতে ৭ উইকেট। শ্রীলঙ্কার জয় তখন নিশ্চিত। এমন সময় জয়ের মুহূর্ত উপভোগ করার চেয়ে আগেভাগে স্টেডিয়াম ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়াটাই শ্রেয় মনে হচ্ছিল স্থানীয় দর্শকদের। এতটাই একপেশে এক ম্যাচ উপহার দিল বাংলাদেশ।

দর্শকদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। ম্যাচ শেষে বিশাল জটলার মাঝে যাতায়াতের অনেক অসুবিধা হয়। বাড়তি নিরাপত্তার জন্য এমনিতেই বহু দূর পর্যন্ত হাঁটতে হয় সবাইকে। যে ম্যাচের ফল ম্যাচের প্রথম দুই ঘণ্টাতেই নির্ধারিত হয়ে গেছে, সেটির সমাপ্তি টানার জন্য অপেক্ষায় থাকার মানে হয় না। ব্যাটে-বলে হঠাৎ করেই যেন কেমন নির্বিষ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ দল।

বিশ্বকাপে তবু ব্যাটিং লাইনআপকে ভালোই দেখাচ্ছিল। কিন্তু এক সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতিতে সেটা উন্মোচিত হয়ে গেছে। মুশফিকুর রহিম ছাড়া দলের আর কেউ ফর্মে নেই। একের পর এক দৃষ্টিকটু ভুল করে প্রতি ম্যাচেই উইকেট উপহার দিয়ে আসছেন তাঁরা। দুই ওপেনারের বাজে ফর্ম সবচেয়ে বেশি চোখে লাগছে। বিশ্বকাপেও দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও তামিম ইকবাল ফর্মে ছিলেন না। ফলে দলের মিডল অর্ডারে চাপ সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিদিন। গত ১১ ইনিংসে মাত্র একটি ফিফটি তামিমের। আর তাঁর সঙ্গী সৌম্য গত ১০ ইনিংসেই ফিফটি পার হতে পারেননি।

মুশফিক অবশ্য দুই ওপেনারের ওপর দায় চাপাচ্ছেন না, ‘বিশ্বকাপে কেউ খুব বেশি খারাপ করেনি। তাঁরা হয়তো অনেক বড় বড় ইনিংস খেলেনি, কিন্তু তাঁরা ভালো শুরু এনে দিয়েছিল। দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ কিংবা নিউজিল্যান্ড ম্যাচেও তাঁরা দ্রুত ভালো শুরু এনে দিয়েছে। আমার মনে হয় সবই ঠিক আছে, শুধু ওই জায়গায় দীর্ঘ সময় থাকতে পারছে না। আজ যেমন তামিম দুর্ভাগা, প্লেড অন হয়ে গেছে। আমাদের ভাগ্য পক্ষে নেই। কিন্তু তাঁরা ভালো চেষ্টাই করছে। আর আশা করব পরের ম্যাচে ওরা ভালো শুরু এনে দেবে।’

প্রতিদিন ওপেনাররা আউট হয়ে যাচ্ছেন বা মিডল অর্ডারে চাপ সৃষ্টি করছেন—এমনটা ভাবেন না মুশফিক। বরং তাঁর ধারণা, দল হয়ে খেলতে চাইলে সব পরিস্থিতির কথাই বিবেচনা করা দরকার। কারণ দলের সবাইকেই দায়িত্ব নিতে হয়। আর ব্যাটিংয়ে সব সময় ভালো শুরু এনে দেওয়াটা যেমন ওপেনারদের দায়িত্ব, তেমনি শুরুতে উইকেট পরে গেলেও গুছিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব মিডল অর্ডারের।

মুশফিক বলছেন, ‘ওপেনাররা সব সময় ভালো শুরু এনে দেবে আর আমরা সেই ভিত্তি পেয়ে রান করব, এমন তো নয়। অনেক সময় তো নাও করতে পারে। যেকোনো প্রতিপক্ষ চেষ্টা করে শুরুতেই এক বা দুই উইকেট ফেলে দিতে। আমরাও নতুন বলে উইকেট পাওয়ার গেম প্ল্যান করি। সে ক্ষেত্রে ওরা একদিন সফল হতেই পারে। কিন্তু ওরা চেষ্টা করছে। আশা করছি তামিমও ঘুরে দাঁড়াবে, অন্য যাঁরা ওপরে খেলছে তাঁরাও ভালো করবে।’