আইসিসির 'টেস্ট বিশ্বকাপ' - আপনার যা জানা জরুরি

আইসিসির টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ এবার নতুন আদলে। ফাইল ছবি
আইসিসির টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ এবার নতুন আদলে। ফাইল ছবি

এক সময় অ্যাশেজ নিয়ে সারা ক্রিকেট বিশ্বেই কৌতূহল ছিল। বাস্তবতা হচ্ছে, অ্যাশেজের সেই আবেদন কমে যাচ্ছে। টেস্টের সবচেয়ে মর্যাদার সিরিজটিরই যখন এই দশা, বাকি আরও অনেক দ্বিপক্ষীয় সিরিজ হয়ে যায়, ক্রিকেট বিশ্বের অনেকে তেমন খোঁজই রাখে না। ধরুন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট সিরিজ খেলছে; বাংলাদেশের ক্রিকেট সমর্থকদের কী আসে যায় তাতে? এই চিত্র বদলাতে আইসিসি এবার নিয়ে আসছে নতুন আদলের টেস্টের বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ। ১ আগস্ট শুরু অ্যাশেজ দিয়ে দুই বছরের এই ‘বিশ্বকাপ’ চলবে।

আইসিসির বর্তমান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ নির্ধারিত হয় বছরের নির্ধারিত একটি সময়ে র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে থাকা দলটির হাতে গদা ও প্রাইজমানি তুলে দিয়ে। এবার আইসিসি অনেকটা লিগ পদ্ধতিতে আয়োজন করবে এই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ। টেস্টের শীর্ষ নয়টি দল ২ বছরের লিগে ৬ দলের বিপক্ষে ৬টি সিরিজ খেলবে। তিনটি হোম, তিনটি অ্যাওয়ে। প্রতি সিরিজে একটি দল সর্বোচ্চ ১২০ পয়েন্ট পেতে পারে। এই পয়েন্ট ভিত্তিতে পয়েন্ট টেবিল থাকবে। ২ বছর শেষে শীর্ষ দুটি দল মুখোমুখি হবে ফাইনালে। সেই ফাইনালে জয়ীরাই এখন থেকে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নের মুকুট পরবে।

এতে করে এখনকার দ্বিপক্ষীয় সিরিজে ছবি বদলাবে বলে মনে করে আইসিসি। ফুটবল লিগে যেটা হয়, এক দলের সমর্থক অন্য দলের ম্যাচগুলো নিয়েও আগ্রহ রাখে। বার্সেলোনার সমর্থকেরা রিয়াল বা অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের ম্যাচগুলোর খোঁজ রাখেন যেমন। লিভারপুল সমর্থকেরা তাকিয়ে থাকেন ম্যানচেস্টার সিটি, ম্যান ইউনাইটেড, চেলসি, আর্সেনালের ম্যাচগুলোর দিকে। কারণ প্রত্যেকের জয়-পরাজয়-ড্র অন্যের লিগ টেবিলের অবস্থানকে প্রভাবিত করে। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপেও একই ব্যাপার হবে।

তবে এখানে এক দল আট প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হবে না। প্রত্যেক দল খেলবে ৬ প্রতিপক্ষের সঙ্গে। আবার একই প্রতিপক্ষের সঙ্গে হোম ও অ্যাওয়ে ম্যাচও নেই। এর বদলে আইসিসি দুটি ভিন্ন সময়কালে দুটি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ করছে। ২ বছরের এবারের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২১ সালের ৩১ মার্চ শেষ হবে। জুনে ফাইনাল। ২০২১ সালের জুনে দ্বিতীয় লিগটি শুরু হয়ে ২০২৩ সালে শেষ হবে। তখন প্রতিপক্ষও বদলাবে।

একনজরে সূচি

২ টেস্ট সিরিজ

২ টেস্ট সিরিজ

৩ টেস্ট সিরিজ

শ্রীলঙ্কা-নিউজিল্যান্ড (২০১৯)

উইন্ডিজ-ভারত (২০১৯)

ভারত-দ. আফ্রিকা (২০১৯)

পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা (২০১৯)

ভারত-বাংলাদেশ (২০১৯)

অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড (২০১৯-২০)

অস্ট্রেলিয়া-পাকিস্তান (২০১৯)

পাকিস্তান-বাংলাদেশ (২০২০)

ইংল্যান্ড-উইন্ডিজ (২০২০)

নিউজিল্যান্ড-ভারত (২০২০)

শ্রীলঙ্কা-ইংল্যান্ড (২০২০)

শ্রীলঙ্কা-বাংলাদেশ (২০২০)

বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া (২০২০)

উইন্ডিজ-দ. আফ্রিকা (২০২০)

ইংল্যান্ড-পাকিস্তান (২০২০)

বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড (২০২০)

নিউজিল্যান্ড-উইন্ডিজ (২০২০)

বাংলাদেশ-উইন্ডিজ (২০২১)

নিউজিল্যান্ড-পাকিস্তান (২০২০)

দ. আফ্রিকা-শ্রীলঙ্কা (২০২১)

দ. আফ্রিকা-অস্ট্রেলিয়া (২০২১)

পাকিস্তান-দ. আফ্রিকা (২০২১)

উইন্ডিজ-শ্রীলঙ্কা (২০২১)

 

 

৪ টেস্ট সিরিজ

 

৫ টেস্ট সিরিজ

দ. আফ্রিকা-ইংল্যান্ড (২০১৯-২০)

ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া (২০১৯)

অস্ট্রেলিয়া-ভারত (২০২০-২১)

ভারত-ইংল্যান্ড (২০২১)

পয়েন্ট পদ্ধতি

সিরিজ

জয় প্রতি

টাই প্রতি

ড্র প্রতি

হারে

২ ম্যাচ

৬০ পয়েন্ট

৩০ পয়েন্ট

২০ পয়েন্ট

৩ ম্যাচ

৪০ পয়েন্ট

২০ পয়েন্ট

১৩ পয়েন্ট

৪ ম্যাচ

৩০ পয়েন্ট

১৫ পয়েন্ট

১০ পয়েন্ট

৫ ম্যাচ

২৪ পয়েন্ট

১২ পয়েন্ট

৮ পয়েন্ট

যা জানা জরুরি:

২ বছর, ৯ দল, ২৭টি সিরিজ, ৭২টি ম্যাচ নিয়ে এই চ্যাম্পিয়নশিপ

প্রত্যেক দল তিনটি হোম ও তিনটি অ্যাওয়ে সিরিজ খেলবে

প্রত্যেক দল মুখোমুখি হবে ৬ প্রতিপক্ষের

প্রতিটা সিরিজের মোট পয়েন্ট ১২০। সিরিজে ম্যাচ সংখ্যা অনুযায়ী ম্যাচ প্রতি পয়েন্ট নির্ধারিত হবে। ২ ম্যাচ সিরিজে প্রতি ম্যাচের পয়েন্ট ৬০। আবার ৫ ম্যাচ সিরিজে প্রতি ম্যাচে পয়েন্ট ২৪। এতে করে সিরিজ প্রতি ১২০ পয়েন্টই থাকছে

একইভাবে টাই ও ড্রয়ের জন্য পয়েন্ট ভাগ করা হয়েছে

পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুটি দল ২০২১ সালে ফাইনাল ম্যাচে মুখোমুখি হবে। সেই ম্যাচে জয়ী দল হবে চ্যাম্পিয়ন

দ্বিপক্ষীয় বাকি সব সিরিজের মতো এখানেও সিরিজগুলোর আয়োজনের ভার, স্পনসর, টিকিট ও টিভি সম্প্রচারের আয় স্বাগতিক দলের

শুধু ফাইনালটির সম্প্রচার স্বত্ব আইসিসির

আইসিসির বর্তমান ১২ দলের টেস্ট র‍্যাঙ্কিং স্বতন্ত্রভাবে থাকবে। পয়েন্ট টেবিলের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। লিগের বাইরে থাকা দলগুলো যেমন নিজেদের মধ্যে সিরিজ খেলবে পারবে

লিগের বাইরেও এই ৯ দল নিজেদের মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে লিগ আয়োজন করতে পারবে। তবে এর পয়েন্ট লিগের টেবিলে যুক্ত হবে না