বাংলাদেশ ভালো খেলত, মনে করিয়ে দিয়েছেন মুশফিক

এই সিরিজে এখন পর্যন্ত একমাত্র আশার নাম মুশফিক। ছবি: এএফপি
এই সিরিজে এখন পর্যন্ত একমাত্র আশার নাম মুশফিক। ছবি: এএফপি

খেলার জগতে হারলেই বিপদ। কেউ আর অতীত সাফল্যের কথা মনে রাখে না, বর্তমানের ব্যর্থতাই তখন মূল আলোচ্য। কেন এমন হার, চেষ্টা করলে কি হার এড়ানো যেত না—এসব আলোচনাই তাই প্রাধান্য পায় বেশি। অতীত সাফল্য? সেটা তখন অতীতেই থাকে।

পরের বিশ্বকাপের জন্য প্রতিটি ওয়ানডের পয়েন্টই এখন মূল্যবান। তাই শ্রীলঙ্কায় তিন ম্যাচের সিরিজের তৃতীয়টি এখন শুধুই আনুষ্ঠানিকতা—এ কথা বলার উপায় নেই। কিন্তু শ্রীলঙ্কার ইতিহাসের অন্যতম দুর্বল এক দলের কাছে এভাবে টানা দুই ম্যাচে আত্মসমর্পণ করার পর তৃতীয় ম্যাচ নিয়ে আগ্রহ থাকার কথা নয় কারও। এমন অবস্থাতেই হয়তো মুশফিকুর রহিমের ইচ্ছে হলো অতীত সাফল্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে।

গতকাল সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন মুশফিক। স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে ৯৮ রানের এক ইনিংস খেলেছেন, পরে বিশ্রাম নেওয়ায় ফিল্ডিংয়ে না নামায় সতীর্থদের বাজে বোলিং ও ফিল্ডিংও দেখতে পেরেছেন নির্বিঘ্নে। সে জন্যই হতো সংবাদ সম্মেলনে এসে বললেন, ‘হ্যাঁ, হার তো অবশ্যই হতাশার। কারণ, আপনি গত চার-পাঁচ বছরে আমাদের ওয়ানডের পরিসংখ্যান দেখেন। গত চার-পাঁচ বছরে আমরা দুর্দান্ত খেলেছি। এ কারণেই আমরা র‍্যাঙ্কিংয়ে সাতে এসেছি। এটাই বলছে গত কয়েক বছরে আমরা কত ভালো খেলছি। তবে আমাদের সব সময় এটা করতে হবে, কিন্তু এটা বেশ কঠিন।’

মজার ব্যাপার হলো সাংবাদিকের প্রশ্ন এ ধারার কিছু ছিল না। তাঁর প্রশ্ন ছিল সিরিজের আগে তামিম ইকবাল বলেছিলেন ভালো খেলার চেয়ে জেতা জরুরি বেশি। তাই দুই ম্যাচ হেরে যাওয়ায় মুশফিকেরা হতাশ কি না। এমন প্রশ্নে এভাবে অতীত সাফল্য টেনে এনে মুশফিক হয়তো বোঝাতে চাইলেন এ দল নিয়ে এখনই হতাশ হয়ে পড়াটা ঠিক হচ্ছে না। পরে নিজেই অবশ্য স্বীকার করে নিয়েছেন সিরিজে দলের পারফরম্যান্স আসলেই প্রশ্নবিদ্ধ, ‘আমাদের বেসিকটা ঠিক রাখতে হবে, আর ফলটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমি সব সময় কীভাবে কাজটা করলাম, সেটাতেও নজর দিই। আমরা ব্যাট, বল ও ফিল্ডিং—কোনো বিভাগেই ভালো করিনি।’

এর আগের নিজের ব্যর্থতার কথা বলতে গিয়ে দুর্ভাগ্যের কথা বলেছিলেন তামিম। কালও মুশফিক বলছিলেন, ভাগ্য পক্ষে আসছে না বলেই হয়তো বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের এ অবস্থা। এক–দুই ম্যাচে ব্যর্থ হলে ভাগ্যকে দোষ দেওয়া চলে, কিন্তু বারবার ব্যর্থ হলে ক্ষমতা ও দক্ষতা নিয়েই প্রশ্ন ওঠে। মনে হয় অজুহাত খোঁজার চেষ্টা চলছে। এর মাঝে অতীত সাফল্যের কথা মনে করিয়ে দিতে চেয়ে অজুহাতের অন্য এক প্রকরণই দেখাতে চাইলেন মুশফিক?