ভারতের মতো 'বিশ্রাম-নীতি' চান সাকিব

বাংলাদেশ ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে সাকিব আজ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেছেন। এর মধ্যে একটি হচ্ছে বিশ্রাম-নীতি। ক্রিকেটারদের চোটমুক্ত থাকতে এই নীতি কার্যকর হতে পারে বলে মনে করেন বাঁহাতি অলরাউন্ডার
সাকিব আল হাসান ক্রিকেটারদের বিশ্রামের কথা বললেন। ছবি: প্রথম আলো
সাকিব আল হাসান ক্রিকেটারদের বিশ্রামের কথা বললেন। ছবি: প্রথম আলো

চোট নিয়েই বাংলাদেশ দলের অনেক খেলোয়াড় খেলতে গিয়েছিলেন বিশ্বকাপে। টুর্নামেন্টের প্রতিটি ভেন্যুতেই বাংলাদেশের কোনো না কোনো ক্রিকেটার চোটে পড়েছেন। মাশরাফি বিন মুর্তজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ—গুরুত্বপূর্ণ সব ক্রিকেটারই চোট বা আঘাত নিয়ে খেলেছেন বিশ্বকাপ। চোট পিছু ছাড়েনি বিশ্বকাপের পরও। শ্রীলঙ্কা সফরের আগ মুহূর্তে চোটে পড়ে ছিটকে পড়লেন স্বয়ং অধিনায়ক মাশরাফি। সাইফউদ্দীনও এ সফরে যেতে পারেননি চোটের কারণে। বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা কেন এত বেশি চোটে পড়ছেন? ফিটনেস ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে কেন? অবশ্যই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের চাপ। কিন্তু এই চাপে তো অন্য দলের খেলোয়াড়েরাও পড়ছেন। তাঁরা কীভাবে সামলে টানা সার্ভিস দিচ্ছেন? একজন ক্রিকেটারের কাছ থেকে টানা সেবা পেতে সাকিব আল হাসানের কিছু পরামর্শ আছে।

সাকিব আজ গিয়েছিলেন বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজে। অংশ নিয়েছেন ডেঙ্গু নিয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রমে। সেখানেই সাকিব সংবাদমাধ্যমকে বললেন, খেলোয়াড় ফিট রাখতে ভারতের মতো বিশ্রাম-নীতিতে যাওয়া দরকার বাংলাদেশেরও, ‘একজন খেলোয়াড় যদি মনে করে না, আমার বিরতি নেওয়া উচিত। কিংবা কোচিং স্টাফ থেকে বলছে, তোমার এই ছুটিটা নেওয়া উচিত। সবারই সেটা বোঝা উচিত। ভারতের একটা ভালো উদাহরণ দিতে পারি। গত বছর ওদের ইতিহাসে কম চোটে পড়েছে খেলোয়াড়েরা। এর একটা বড় কারণ ওরা ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খেলিয়েছে। এটাতে যেটা হয়েছে, ওদের অনেক খেলোয়াড় তৈরি হয়েছে। অনেকে খেলোয়াড় পরিচিতি পেয়েছে। ওদের খেলোয়াড়দের যখন যে এসেছে তখন সজীব থেকে খেলতে পেরেছে এবং ভালো করতে পেরেছে। যদি দেখেন, বিরাট কোহলিসহ সবাইকে কিন্তু বিশ্রাম দিয়েছে। কোনো না কোনো সংস্করণে, কোনো না কোনো সিরিজে সবাই বিশ্রাম পেয়েছে। তিনটা সংস্করণে খুব কম খেলোয়াড়ই পুরো সিরিজ খেলেছে। এগুলো আমাদের বুঝে কাজ করতে হবে। কোচিং স্টাফ, বোর্ড ও খেলোয়াড়দের মধ্যে খুব ভালো একটা সমন্বয় থাকতে হবে। তা না হলে এটা নিয়ে অনেক সমালোচনা তৈরি কিংবা নেতিবাচক কথা তৈরি হতে পারে।’

সাকিবের এ পরামর্শ বিসিবি কাজে লাগাতে পারবে কিনা, এখনই বলা কঠিন। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার যে ভারতের উদাহরণ দিলেন, তাদের হাতে অনেক বিকল্প ক্রিকেটার, বিকল্প অধিনায়ক, সহ-অধিনায়কও কম নয়। কোহলি না থাকলে রোহিশ শর্মা দলকে দারুণভাবে নেতৃত্ব দিতে পারেন। মহেন্দ্র সিং ধোনি না থাকলেও দুর্দান্ত উইকেটকিপারের অভাব নেই। কিন্তু বিসিবির হাতে কি এত বিকল্প আছে? এক সাকিব বিশ্রাম নিলে তাঁর বিকল্প দুজন খুঁজতে হয়। তামিম-মাহমুদউল্লাহ লম্বা রানখরায় ভোগার পরও তাঁদের বিশ্রাম দেওয়ার সাহস হয় না টিম ম্যানেজমেন্টের। নির্বাচকদের হাতে এত বিকল্প কোথায়?

অবশ্য বিসিবি বিশ্রাম-নীতি বাস্তবায়ন করতে না পারুক, ব্যক্তিগত উদ্যোগে সাকিব এটি বাস্তবায়ন অনেক আগেই শুরু করেছেন। ২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ, সবশেষ শ্রীলঙ্কায় ওয়ানডে সিরিজে ছুটি নিয়েছেন বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার।