ডেঙ্গু আক্রান্ত ৫ জন নারী খেলোয়াড়ও

হ্যান্ডবল ফেডারেশনের ক্যাম্পে মহিলা হ্যান্ডবল দলের খেলোয়াড়েরা মশার হাত থেকে বাঁচতে দিনের বেলা মশারি টানিয়ে রাখছেন। প্রথম আলো সাম্প্রতিক ছবি
হ্যান্ডবল ফেডারেশনের ক্যাম্পে মহিলা হ্যান্ডবল দলের খেলোয়াড়েরা মশার হাত থেকে বাঁচতে দিনের বেলা মশারি টানিয়ে রাখছেন। প্রথম আলো সাম্প্রতিক ছবি

১ থেকে ১০ ডিসেম্বর নেপালে অনুষ্ঠিত হবে দক্ষিণ এশিয়ান (এসএ) গেমস। গেমসকে সামনে রেখে ১৫ জুলাই থেকে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) তত্ত্বাবধানে ২৩টি ডিসিপ্লিনের ৩৫৫ জন পুরুষ ও ৩১১ জন নারী অ্যাথলেট অনুশীলন শুরু করেছেন। কিন্তু অনুশীলন আর হচ্ছে কোথায়! বেশির ভাগ ক্যাম্পে ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু আতঙ্ক। পাঁচজন নারী খেলোয়াড় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। জ্বরে আক্রান্ত আরও ৫ জন নারী খেলোয়াড়ের রিপোর্ট পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের চিকিৎসক শফিকুর রহমান।

পাঁচজন ডেঙ্গু আক্রান্তের মধ্যে তিনজন কাবাডি খেলোয়াড় জান্নাতুল নাঈম বৃষ্টি, বৃষ্টি বিশ্বাস ও শ্রাবণী; খো খো খেলোয়াড় আসমা খাতুন ও বাস্কেটবলের বৃষ্টি। পাঁচজন ঢাকার দুইটি হাসপাতালে ভর্তি আছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক শফিকুর, ‘আগে চারজন মেয়ের ডেঙ্গু ধরা পড়েছিল। আজ নতুন করে কাবাডি খেলোয়াড় শ্রাবণীর ডেঙ্গু ধরা পড়েছে। এদের মধ্যে দুজন আছেন পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি। আর বাকি তিনজন বাংলাদেশ মেডিকেলে ভর্তি আছেন।’

ডেঙ্গু আক্রান্ত ৫ জন ছাড়া জ্বরে ভুগছেন আরও ৫ জন। এদের মধ্যে চারজনই খো খো খেলোয়াড়। আজই তাদের মেডিকেল টেস্টের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার কথা। তাদের মধ্যে নতুন করে ডেঙ্গু আক্রান্ত থাকতে পারে। তবে হাতে রিপোর্ট না আসার আগে কিছু বলতে রাজি নন বিওএ চিকিৎসক শফিকুর, ‘আজ সবার রিপোর্ট হাতে পাব। তখন বুঝতে পারব কার কী অবস্থা। তবে আমরা কাউকে নিয়ে ঝুঁকি নিতে চায় না।’ অসুস্থ হয়ে পড়া সবাই ধানমন্ডি মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সের ক্যাম্পে ছিলেন বলে নিশ্চিত করেছেন এই চিকিৎসক। খোঁজ নিয়ে জানা যায় সেখানে ক্যাম্পের শুরুর দিকে খেলোয়াড়দের জন্য কোনো মশারির ব্যবস্থা ছিল না।

সারা দেশের মতো খেলোয়াড়দের ক্যাম্পেও প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। সেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে পল্টন হ্যান্ডবল ফেডারেশনের আবাসিক ক্যাম্পেও। হ্যান্ডবল মহিলা দলের খেলোয়াড় শিল্পী আক্তার বলছিলেন ‘চারদিকে যেভাবে ডেঙ্গু ছড়াচ্ছে তাতে একটু তো ভয়ে আছিই। তবে আমাদের স্যারেরা নিয়মিত মশার স্প্রে দিচ্ছেন। আমরাও মশারি ব্যবহার করছি। যতটা পারা যায় সাবধানে থাকার চেষ্টা করছি।’

দেরিতে হলেও এই খেলোয়াড়দের ডেঙ্গু থেকে রক্ষা করতে ফেডারেশন ও বিওএ কর্মকর্তারাও বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছেন। দুই দিন আগে বিওএর ডেভেলপমেন্ট কমিটির সভায়ও এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ক্যাম্পে থাকা খেলোয়াড়দের প্রত্যেককে একটি করে মশারি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিওএ। বিওএর পক্ষে থেকে প্রতিটা ক্যাম্পে মশারি পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডেভেলপমেন্ট কমিটির সদস্যসচিব এ কে সরকার, ‘আমরা ২০-২৫ দিন আগে দুই মেয়রকেই চিঠি দিয়েছিলাম, যাতে আমাদের আবাসিক ক্যাম্পের আশপাশে নিয়মিত মশার ওষুধ ছিটানো হয়। অবশ্য শুধু সিটি করপোরেশনের দিকে তাকিয়ে নেই আমরা। আমরা ক্যাম্পে থাকা সব খেলোয়াড়কে একটি করে মশারি দেব।’