জাতীয় দলের কোচের চোখে সেরা কারা?

বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের কোচ জেমি ডে। ফাইল ছবি
বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের কোচ জেমি ডে। ফাইল ছবি
>গতকাল শেষ হয়েছে একাদশতম প্রিমিয়ার লিগের আসর। লিগে যাঁদের খেলা ভালো লেগেছে, জাতীয় দলের কোচ জেমি ডে ইংল্যান্ড থেকে সে নামগুলো প্রথম আলোকে জানিয়েছেন।

কোন খেলোয়াড় আপনাকে মুগ্ধ করেছে?

যেকোনো টুর্নামেন্ট বা লিগের শেষে জাতীয় দলের কোচের কাছে প্রশ্নটি থাকে অবধারিত। গতকাল প্রিমিয়ার লিগের শেষের ঘণ্টা বেজে উঠতেই জেমি ডের কাছেও থাকল সে প্রশ্ন। বাংলাদেশ জাতীয় দলের দায়িত্ব নেওয়ার পর এটাই ছিল তাঁর প্রথম লিগ দর্শন। সেখানে কোন কোন খেলোয়াড় তাঁকে মুগ্ধ করতে পেরেছেন, প্রথম আলোর কাছে খোলামেলা জানিয়ে দিলেন সে নামগুলো।

জেমির পছন্দের তালিকায় চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংসের খেলোয়াড় আছেন সর্বোচ্চ পাঁচজন, দুজন করে রানার্সআপ আবাহনী লিমিটেড ও তৃতীয় স্থানে থাকা শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রের, একজন করে চতুর্থ সাইফ স্পোর্টিং ও পঞ্চম হওয়া আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের ।

প্রথম প্রশ্নটা ছিল, কোন খেলোয়াড় আপনাকে বেশি মুগ্ধ করেছে? জবাবে আরামবাগের রবিউল হাসানের নামটাই এসেছে ইংলিশ কোচের মুখে। তবে লিগের দ্বিতীয় পর্বের মাঝামাঝি থেকে আরামবাগের এ খেলোয়াড়কে মাঠে না পেয়ে হতাশা লুকাতে পারেননি, ‘লিগে দুর্দান্ত শুরু করেছিল রবিউল। কিন্তু দুঃখজনকভাবে লিগের শেষ দিকে আমি তাঁকে খেলতে দেখিনি।’ ১৯ বছর বয়সী এই তরুণের হাতেই উঠেছে লিগের সেরা উদীয়মান খেলোয়াড়ের পুরস্কার।

তুলনামূলকভাবে এবারের লিগে স্থানীয় ফরোয়ার্ডরা ভালো পারফর্ম করেছেন। ১৭ গোল করে তৃতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন আবাহনী লিমিডেটের নাবীব নেওয়া জীবন। গতি আর বলের নিয়ন্ত্রণে আলো ছড়িয়েছেন বসুন্ধরা কিংসের মতিন মিয়া। ১১ গোল করেছেন ২০ বছরের এই তরুণ। স্বাভাবিকভাবে জাতীয় দলের কোচের মন জয় করে নিয়েছেন এই দুই ফরোয়ার্ড, ‘মতিন ও জীবন দুজনেই বেশ গোল করেছে। জাতীয় দলের জন্য খুবই ভালো হয়েছে।’

মাঝমাঠে যে তিনজন জেমিকে মুগ্ধ করেছেন, তাঁদের মধ্যে একজন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম। বাকি দুজনের একজন জাতীয় দল ও সাইফ স্পোর্টিংয়ের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া এবং বসুন্ধরা কিংসের মাসুক মিয়া জনি। তিনজনের ব্যাপারে জেমির ছোট ছোট করে ব্যাখ্যা, ‘জনি খুবই ধারাবাহিক ছিলেন। মামুন শেষের দিকে কিছু ভালো গোল করেছে। জামালকে খুব দৃঢ় মনে হয়েছে।’

ওপর থেকে ধারাবাহিকভাবে নিচের দিকে নামলে ফরোয়ার্ড ও মাঝমাঠের পরে আসে রক্ষণভাগ। ৫ জন ডিফেন্ডারের নাম বলেছেন জেমি এবং তাঁরা পাঁচজনই সেন্টারব্যাক, ‘ইনজুরিতে পড়ার আগ পর্যন্ত তপু খুব ভালো খেলেছে। বসুন্ধরা কিংসের নাসির উদ্দিন ও ফয়সাল (নুরুল নাঈম) ভালো জুটি। এ ছাড়া বাদশা (টুটুল হোসেন) ও ইয়াসিন খান রক্ষণভাগে ভালো ভূমিকা রেখেছেন।’

বাকি থাকল গোলরক্ষক। শেখ রাসেলের আশরাফুল রানা লিগের সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার জিতেছেন। রানাকেই এগিয়ে রেখে দ্বিতীয় স্থানে রাখছেন বসুন্ধরার আনিসুর রহমান জিকোকে, ‘রানা সেরা ছিল। জিকোও খুব ভালো করেছে।’

যেহেতু লিগের পারফরম্যান্সে মন জয় করে নিয়েছে, তাহলে নিশ্চিতভাবে বলাই যায় এই খেলোয়াড়েরা বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে জেমির দলে থাকছেন। জেমি এখন ইংল্যান্ডে ছুটি কাটাচ্ছেন। তাঁর আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহে দেশে ফেরার কথা। আর কোচ ফিরলেই শুরু হবে জাতীয় দলের ক্যাম্প। দেশে কয়েক দিন অনুশীলন করেই সপ্তাহখানেকের অনুশীলনের জন্য জামাল ভূঁইয়াদের কাতারে চলে যাওয়ার কথা রয়েছে। ১০ অক্টোবর আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে যৌথ বাছাইপর্ব শুরু করবে বাংলাদেশ। ম্যাচটি হওয়ার কথা রয়েছে আরব আমিরাতের রাজধানী দুবাইয়ে। বাংলাদেশের গ্রুপে অন্য দলগুলো হলো ভারত, কাতার ও ওমান।