মাত্র চারবার দেখা গেছে এমন কিছু

দ্বিতীয় ইনিংসেও অস্ট্রেলিয়ার ত্রাতা স্মিথ। ছবি: রয়টার্স
দ্বিতীয় ইনিংসেও অস্ট্রেলিয়ার ত্রাতা স্মিথ। ছবি: রয়টার্স
>
  • অস্ট্রেলিয়াঃ ২৮৪ ও ৩৭০/৫ (৯১ ওভার পর্যন্ত), ইংল্যান্ড: ৩৭৪
  • ২৮০ রানে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া
  • স্মিথের সেঞ্চুরি, অপেক্ষায় ওয়েড

টেস্টেও যে এত উদ্ভাবনী ফিল্ডিং সেট আপ করা যায়, সেটা এজবাস্টন টেস্ট না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন হতো। স্টিভ স্মিথের পায়ের ব্যবহার ও যুক্তির ঊর্ধ্বে ওঠা সব শটে ত্যক্ত বিরক্ত হয়ে নানা রকম চেষ্টাই চলল। কিন্তু সেই স্মিথ আউট হলেন বড় সাধাসিধে উপায়ে। অফ স্টাম্পের বাইরে সুইং করা এক বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে। অনবদ্য এক ইনিংসের এই সাধাসিধে সমাপ্তির আগেই অবশ্য দুটি কাজ হয়ে গেছে স্মিথের। এক, অস্ট্রেলিয়াকে লড়াই করার পুঁজি এনে দিয়েছেন। দুই, টেস্ট ক্রিকেটের রহস্যময় এক তালিকায় যুক্ত হয়েছেন।

প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার অর্ধেকের বেশি রানই এসেছে স্মিথের ব্যাট থেকে। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরার আগে ১৪৪ রান করেছিলেন স্মিথ। দ্বিতীয় ইনিংসে অতটা একা লড়তে হয়নি তাঁকে। ম্যাথু ওয়েডের আগে ট্র্যাভিস হেডও ভালো সঙ্গ দিয়েছেন। তাই আজ যখন ১৪২ রানে আউট হয়েছেন, ততক্ষণেই প্রথম ইনিংসের চেয়ে ৪৭ রান বেশি করে ফেলেছে অস্ট্রেলিয়া। সেটাও ৫ উইকেট হাতে রেখেই। দলকে ২৪১ রানের লিড এনে দিয়ে ফেরা স্মিথ এর আগেই করে ফেলেছেন চমৎকার কীর্তি।

ইতিহাসে আজ পর্যন্ত ২৩৫৩টি টেস্ট খেলা হয়েছে। এর মাঝে কোনো ব্যাটসম্যানকে দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করতে দেখা গেছে মাত্র ৮৫ বার। কিন্তু বিস্ময়কর হলো, দুই ইনিংসেই ১৪০-উর্ধ্ব ইনিংসে খেলতে পেরেছেন মাত্র চারজন ব্যাটসম্যান। স্মিথ হলেন এই তালিকার চতুর্থ সংযোজন। প্রথম টেস্টের ১০৩ বছর পর ১৯৮০ সালে অ্যালেন বোর্ডার সর্বপ্রথম এটা করে দেখিয়েছিলেন (১৫০* ও ১৫৩)। এরপর ২১ বছরের অপেক্ষা। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার প্রথম ইনিংসে ১৪২ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত ছিলেন ১৯৯ রানে। এর পর ২০০৯ সালে বাংলাদেশকে দুঃস্বপ্ন উপহার দিয়েছিলেন তিলকরত্নে দিলশান (১৬২ ও ১৪৩)। আজ তাঁদের সঙ্গী হলেন স্মিথ।

গতকাল ৯০ রান পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করা অস্ট্রেলিয়ার শুরুটা হয়েছিল প্রথম ইনিংসের মতোই বাজেভাবে। ২৭ রানে ২ উইকেট পড়ার পর নেমেছিলেন। তৃতীয় উইকেট জুটিটা ৫০ পেরোনোর আগেই ফিরেছেন উসমান খাজা। ট্রাভিস হেডকে নিয়ে তৃতীয় দিনের বাকিটা পার করেছেন স্মিথ। তবে অতিরিক্ত রক্ষণ নয়, আক্রমণকেই অস্ত্র মেনেছেন। আজ চতুর্থ দিনেও ইতিবাচক ক্রিকেট খেলেছেন। পায়ের ব্যবহারে ইংলিশ বোলারদের কোনো নির্দিষ্ট লাইন ও পরিকল্পনায় বল করতে দেননি। অফ স্টাম্পের বাইরে সুইংয়ে দুর্বলতার কথা সবার জানা থাকা সত্ত্বেও সেটা কাজে লাগাতে পারেননি স্টোকস-ব্রডরা।

জিমি অ্যান্ডারসনের চোটের সর্বোচ্চ সুযোগ নিয়ে হেডকে নিয়ে প্রথমে দলের লিড এক শ পার করেছেন। হেডের (৫১) বিদায়ের পরও হাল ছাড়েননি। ওয়েডকে নিয়ে লিডটা ধীরে ধীরে বড় করেছেন। ইংলিশ বোলিং লাইন আপকে এই টেস্টে প্রথমবারের মতো অসহায় দেখাচ্ছিল দ্বিতীয় সেশনে। নতুন বল নেওয়ার পরই ঘটল দুর্ঘটনা। চকচকে নতুন বলটা এক ওভার পুরোনো হওয়ার আগেই তুলে নিল স্মিথকে। কিন্তু এর আগেই প্রত্যাবর্তনের টেস্টে দলকে সেরা উপহার দিতে পেরেছেন সাবেক অধিনায়ক। কালও প্রায় অসম্ভব মনে হওয়া এক জয়ের আশা!