আগে 'সিংহ' তারপর লায়নের শিকার
>দেড় যুগ পর এজবাস্টনে টেস্ট জিতল অস্ট্রেলিয়া। অ্যাশেজের প্রথম টেস্ট জিতে সিরিজে শুভসূচনাও করেছে তারা। জোড়া সেঞ্চুরি করা স্টিভ স্মিথ হয়েছেন ম্যান অব দ্য ম্যাচ।
এজবাস্টন টেস্টের তৃতীয় দিন দুপুরেও কি ইংল্যান্ড ভাবতে পেরেছিল এই ম্যাচ তাদের হারতে হবে! ম্যাচের ফল বলছে ইংল্যান্ডকে ২৫১ রানে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। খেলাটা দলীয়, তবুও বলতে হবে ইংলিশরা হেরেছে আসলে স্টিভ স্মিথের কাছে।
প্রথম ইনিংসে ১২২ রানে ৮ উইকেট পড়ে যাওয়ার পরও স্মিথের যে লড়াই—তাঁর ১৪৪ রানের ইনিংসটি নিশ্চিত অ্যাশেজের অন্যতম সেরা ইনিংস হিসেবে স্বীকৃতি পাবে। দ্বিতীয় ইনিংসে ৯০ রানে পিছিয়ে থেকে শুরু করে দল বড় লিডের পথে গেল স্মিথের আরও একটা সেঞ্চুরির সৌজন্যে। এক ম্যাচে জোড়া সেঞ্চুরি—দেড় বছর পর প্রত্যাবর্তনের টেস্ট এর চেয়ে আর ভালো কীভাবে রাঙানো যায়? ইংল্যান্ডকে হারানোর পর স্মিথ যে একটা স্টাম্প নিজের সংগ্রহে রাখবেন, সেটিই তো স্বাভাবিক।
বিশ্বকাপজয়ী ইংল্যান্ডের একটু সময় লাগছে সাদা পোশাকের ছন্দ খুঁজে পেতে। যদিও এজবাস্টনের টেস্টের তৃতীয় দিন পর্যন্তও লাগাম ইংলিশদের হাতেই ছিল। স্মিথই সেটি কেড়ে নিজেদের মুঠোয় নিয়েছেন। দ্বিতীয় ইনিংসে আরেক সেঞ্চুরিয়ান ম্যাথু ওয়েড তাঁর পার্শ্বচরিত্র। নাথান লায়নকেও অনেকে তা-ই বলতে চাইবেন। অবশ্য শেষ দিনের উইকেটে লায়ন এমন ‘আনপ্লেয়বল’ হয়ে উঠতে না-পারলে ইংল্যান্ড টেস্টটা ড্র করে ফেলতেও পারত!
৩৯৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নামা ইংল্যান্ড অস্ট্রেলিয়ান অফ স্পিনারের ঘূর্ণিতে এতটা নীল হয়েছে, ১৪৬ রানের বেশি করতে পারেনি। লায়ন ইনিংসে নিয়েছেন ৬ উইকেট, ম্যাচে ৯টি। হ্যাটট্রিকের সুযোগও পেয়েছিলেন। তবে এত কিছুর পরও এই ম্যাচের নায়ক কে, তা নিয়ে দুবার ভাবতে হয় না।
বিনা উইকেটে ১৩ রান নিয়ে শেষ দিন শুরু করা ইংল্যান্ড জানত, ভাঙা উইকেটে কী বিপদ অপেক্ষা করছে। দিনের দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারিয়ে যে শুরুটা হলো, তা একপর্যায়ে ৭ উইকেটে ৯৭তে গিয়ে পৌঁছেছিল। তবে ভাঙা উইকেটে যে পেসাররাও রাজত্ব করতে পারেন, প্যাট কামিন্স তা দেখিয়েছেন। ৪ উইকেট তাঁর।
তবে ম্যাচ সেরা শেষ পর্যন্ত স্মিথই। মাঝখানে কলঙ্কিত নিষেধাজ্ঞার পর এমন ফেরা! ম্যান অব দ্য ম্যাচ কথাটা এই টেস্টের জন্য অন্তত লায়ন অব দ্য ম্যাচ করে দেওয়াই উচিত ছিল।